আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
68 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (21 points)

আসসালামু-আলাইকুম। আমি দু:খিত একসাথে অনেকগুলো প্রশ্ন করে ফেলেছি। বারংবার দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি হচ্ছে প্রশ্নগুলো নিয়ে। আপনার উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম। জাজাকাল্লাহু খাইরান।

(১) আমি ইতোপূর্বে অনেক হারাম উপার্জন করে ফেলেছি এবং তা দিয়ে নিজের খাওয়া, পড়ালেখাসহ  অন্যান্য খরচ চালিয়েছি + অনেকগুলো কাজের দক্ষতা রপ্ত করেছি যেগুলো ব্যবহার করে বর্তমানে উপার্জন করছি। এখন তওবা করলেও কি সারাজীবন আমার ইনকাম হারাম হতে থাকবে বা ইবাদত-সহ সব কাজ কি বিফলে যাবে যেহেতু আমার পড়ালেখা, দ্বীন শিক্ষা বা কাজের দক্ষতাগুলো হারাম উপার্জনের মাধ্যমেই হয়েছে এবং হারাম উপার্জনের মাধ্যমেই শরীর গঠিত হয়েছে?

(২) আমি কম্পিউটারে টাইপিং এর কাজ করি অনলাইনে। কিছু কাজ এমন থাকে যেগুলো টাইপ করা হারাম কিনা জানতে চাচ্ছি। যেমন: ব্যাংক এর তথ্য, কোনো ব্যাক্তির জীবনী, খাবারের মেনু লিস্ট যেখানে মদের মেনু থাকতে পারে, ইত্যাদি। যেহেতু এখানে আমি তাদের কাজের প্রচার করছি না বা সরাসরি অংশগ্রহণ করছি না, শুধু তাদের হাতে লেখা তথ্যগুলো দেখে দেখে কম্পিউটারে টাইপ করে দিচ্ছি; তাহলে আমার এই কাজ হারাম হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা?

(৩) কেউ যদি আত্মহত্যা করতে গিয়ে নিজের পরিবারের কথা বা অন্য কোনো দুনিয়াবি চিন্তা করে আত্নহত্যা করা থেকে ফিরে আসে, সেক্ষেত্রে সে কি আত্নহত্যার মতো সমান শাস্তি পাবে যেহেতু সে ওইসময় আল্লাহর কথা মনে না-করে বরং দুনিয়ার কথা মনে করে ফিরে এসেছে? নাকি তওবা করলে আল্লাহ এর জন্য কোনো শাস্তি দিবে না?

(৪) জীবনে ইচ্ছাকৃত অনেক মিথ্যা কথা বলেছি, না জেনে প্রচুর ভুল কথা বলেছি এবং অনেক কুধারণা ও কুচিন্তা করেছি। এখন একটা একটা করে সব মনে না পড়লে, সবগুলোর জন্য একসাথে তওবা করলে কি হবে?

(৫) কোনো মিথ্যা বা ভুল কথা বললে তার জন্য কি একবার গুনাহ হয় নাকি বারবার হয়? যেমন: কেউ তার ছোটভাইকে বোঝানোর জন্য বলল যে, এই জিনিসটা খেলে ব্রেইন এর জন্য ভালো কাজ করে। যদি আসলেই কাজ না করে তাহলে যতবারই পৃথিবীর কেউ এটা খাবে এবং ব্রেইনের জন্য কাজ না করবে, ততবারই কি তার আমলনামায় মিথ্যার গুনাহ লেখা হবে?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


হারাম সম্পদ ভক্ষন কারীর ইবাদত দোয়া কিছুই কবুল হয়না।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
 (معارف السنن، كتاب الطهارة، باب ما جاء لا تقبل صلاة بغير طهور-1/34، الفتاوى الشامية، باب البيع الفاسد، مطلب فى من ورث مالا حراما-7/301، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/554، بذل المجهود، كتاب الطهارة، باب فرض الوضوء- 1/37

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না হলে সেটি ফকিরদেরকে সদকাহ করে দিতে হবে।
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই!
(০১)
আপনি যে পরিমান হারাম ইনকাম থেকে খেয়েছেন,সেই পরিমান টাকা (নির্দিষ্ট মনে না করতে পারলে অনুমানের ভিত্তিতে টাকা নির্দিষ্ট করে) ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিন কে দান করে দিবেন। 
তওবা করবেন।

তাহলে আপনার সারা জীবনের দোয়া,ইবাদত কবুল হবে।
ইনশাআল্লাহ। 

পড়ালেখা,দ্বীন শিক্ষা,কাজের দক্ষতা ইত্যাদি সব হারাম ইনকাম থেকে হলেও এগুলোর ব্যবহার হারাম হবেনা।

আপনি দক্ষতা কাজে লাগাতে পারবেন,পড়ালেখা কাজে লাগাতে পারবেন।

(০২)
ব্যাংক এর সূদী লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য লিখবেননা।

ইহা ছাড়া প্রশ্নে উল্লেখিত বাকি সব লেখা জায়েজ।

হাদীস শরীফে এসেছে  
عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)

(০৩)
সে আত্মহত্যার শাস্তি পাবেনা।

(০৪)
হ্যাঁ, সব গুলোর জন্য এক সাথে তওবা করলে হবে। 

(০৫)
এতে একবার মিথ্যা বলার গুনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...