আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
98 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (21 points)
আসসালামু আলাইকুম, নাম রাখার ব্যাপারে আমার কিছু জানার আছে-

১. নবী-রাসূলদের নামে নাম রাখার বিশেষ কোনো ফজিলত আছে?

২. সাহাবীদের নামে নাম রাখার বিশেষ কোনো ফজিলত আছে?

৩. পুত্রসন্তানের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম নাম কি রাখা যায়?

৪. কন্যাসন্তানের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম নাম কি রাখা যায়?

৫. সন্তানের নাম যদি অনৈসলামিক হয়, তাহলে কি পিতামাতা গুনাহগার হবেন?

৬. সিদরাতুল মুনতাহা অর্থ কি? সন্তানের নাম কি সিদরাতুল মুনতাহা রাখা যাবে?

৭. মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো আমাদের নবীর নাম। পুত্রসন্তানের নাম 'মুহাম্মাদ' রাখার হুকুম কি?

৮. কুরআন-হাদীসে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম কয়টি? সেগুলো কী কী?

1 Answer

+1 vote
by (678,880 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
হাদীসে নবীগনের নামে নামকরন করতে রাসুলুল্লাহ সাঃ নির্দেশ করেছেন।  

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ سَعِيدٍ الطَّالْقَانِيُّ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُهَاجِرِ الْأَنْصَارِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَقِيلُ ابْنُ شَبِيبٍ، عَنْ أَبِي وَهْبٍ الْجُشَمِيِّ، وَكَانَتْ لَهُ صُحْبَةٌ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: تَسَمَّوْا بِأَسْمَاءِ الْأَنْبِيَاءِ، وَأَحَبُّ الْأَسْمَاءِ إِلَى اللَّهِ عَبْدُ اللَّهِ، وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ، وَأَصْدَقُهَا حَارِثٌ، وَهَمَّامٌ، وَأَقْبَحُهَا حَرْبٌ وَمُرَّةُ صحيح،

আবূ ওয়াহব আল-জিশামী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা নবী-রাসূলগণের নামে নামকরণ করো। আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় নাম হলো আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রাহমান। নামের মাঝে হারিস ও হাম্মাম হলো বিশ্বস্ত নাম এবং হারব ও মুররাহ হলো সবচেয়ে নিকৃষ্ট নাম।
(বুখারী,আবু দাউদ ৪৯৫০)

(০২)
সাহাবাদের নামে নামকরনের ফজিলত কোনো হাদীসে পাইনি।
তবে সাহাবাদের নামে নাম রাখলে আশা করা যায়, ফজিলত পাওয়া যাবে,ইনশাআল্লাহ। 

(০৩)
যেহেতু উপরোক্ত হাদীসে আছে যে আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় নাম হলো আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রাহমান। 

সুতরাং পুত্র সন্তানেরর জন্য আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রাহমান সর্বোত্তম।

(০৪)
এটি কোনো হাদীসে পাইনি।

তবে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর স্ত্রী,কন্যাদের নাম সবচেয়ে ভালো হবে।
অন্যান্য নারী সাহাবাদের নামও উত্তম হবে।

(০৫)
হ্যাঁ, শরীয়াহ বিরোধী নাম হলে এতে পিতা মাতার গুনাহ হবে।

(০৬)
মুনতাহা অর্থ শেষ। সিদরাতুল অর্থ কুল বৃক্ষ।
সুতরাং সিদরাতুল মুনতাহার অর্থ দাঁড়ায়, শেষ প্রান্তের কুল বৃক্ষ।

সন্তানের নাম সিদরাতুল মুনতাহা রাখা যাবে।
এতে নিষেধাজ্ঞা নেই।

(০৭)
পুত্রসন্তানের নাম 'মুহাম্মাদ' রাখা যাবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, আমাদের মধ্যে এক ব্যক্তির ছেলেসন্তান জন্মাল। সে তার নাম রাখল মুহাম্মদ। তাঁর গোত্রের লোকেরা বলল, আমরা তোমাকে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নামে নাম রাখতে দেব না। সেই ব্যক্তি তাঁর ছেলেকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে গেল এবং বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমার একটি ছেলে হয়েছে আমি তাঁর নাম রেখেছি মুহাম্মদ। কিন্তু আমার গোত্রের লোকেরা বলছে, আমরা রাসুলের নামে নামকরণ করতে দেব না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা আমার নামে নাম রাখো; কিন্তু আমার উপনাম গ্রহণ কোরো না। নিশ্চয়ই আমিই কাসেম বা বণ্টনকারী। আমি তোমাদের মধ্যে বণ্টন করি।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২১৩৩)

(০৮)
কুরআনে বর্নিত রাসুলুল্লাহ সাঃ এর নামঃ-
১. মুহাম্মদঃ আল কুরআনে এনামটি চার বার এসেছে। যথাঃ সূরা আলে ইমরানঃ ১৪৪, সূরা আহজাবঃ ৪০, সূরা মুহাম্মদঃ ২,সূরা আল ফাতাহঃ ২৯। মুহাম্মদ অর্থ প্রশংসিত।

২. আহমাদঃ আহমাদ নামটি আল কুরআনে শুধু একবার সূরা সফে এসেছে।আহমাদ শব্দের দু’টি অর্থ। এক. ‘অধিক প্রশংসিত’, আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে যিনিসবচেয়ে বেশি প্রশংসার যোগ্য। দুই. আল্লাহর সর্বাধিক প্রশংসাকারী।
(সূরা সফ)

৩. নবীঃ ‘নাবা’ শব্দ থেকে এসেছে, যার অর্থ সংবাদ। 

৪. রাসূলঃ দূত বা বার্তাবাহক। 

৫. মুয্যাম্মিলঃ চাঁদর আবৃতব্যক্তি।
(সূরা মুয্যাম্মিলঃ ১)

৬. মুদ্দাসসিরঃ বস্ত্র মুড়িদিয়ে শয়নকারী। 

 (সূরা মুদ্দাস্সিরঃ ১-৫)

৭. শাহিদঃসাক্ষ্যদানকারী। ‘

৮. বাশির ও মুবাশ্বিরঃ সুসংবাদদানকারী। 

(সূরা আহজাবঃ ৪৫) 

৯. মুনজির ও নাজিরঃ ভীতি প্রদর্শনকারী। 

(সূরা আহজাবঃ ৪৫)

১০. আমিনঃ বিশ্বস্ত। 

১১. হাদিঃ পথ প্রদর্শকঃ 

১২. নূরঃ আলো। 

১৩. সিরাজুম মুনিরাঃ মূর্তিমান আলোক ও প্রদীপ। অর্থাৎ তাঁরব্যক্তিত্ব ও জীবন আমাদের পথের অন্ধকার দূরীভূতকারী উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা। 

(সূরা আহজাবঃ ৪৫-৪৬)

১৪. দায়ী ইলাল্লাহঃ আল্লাহর দিকে আহ্বানকারী। অর্থাৎ পথভ্রষ্ঠলোকদেরকে আল্লাহ পথে আহবানকারী। পথহারা মানুষকে তিনি সঠিক ঠিকানায় পৌঁছে দিয়েছেন।‘

(সূরা আহজাবঃ৪৫-৪৬)

১৫. রহমতঃ অনুগ্রহ। 
(সূরা আম্বিয়াঃ ১০৭)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ الْمُنْذِرِ قَالَ حَدَّثَنِيْ مَعْنٌ عَنْ مَالِكٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِيْ خَمْسَةُ أَسْمَاءٍ أَنَا مُحَمَّدٌ وَأَحْمَدُ وَأَنَا الْمَاحِي الَّذِيْ يَمْحُوْ اللهُ بِي الْكُفْرَ وَأَنَا الْحَاشِرُ الَّذِيْ يُحْشَرُ النَّاسُ عَلَى قَدَمِيْ وَأَنَا الْعَاقِبُ

জুবায়র ইবনু মুত‘ঈম (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার পাঁচটি (প্রসিদ্ধ) নাম রয়েছে, আমি মুহাম্মাদ, আমি আহমাদ, আমি আল-মাহী আমার দ্বারা আল্লাহ্ কুফর ও শির্ককে নিশ্চিহ্ন করে দিবেন। আমি আল-হাশির আমার চারপাশে মানব জাতিকে একত্রিত করা হবে। আমি আল-আক্বিব (সর্বশেষে আগমনকারী)। (বুখারী ৩৫৩২.মুসলিম ৪৩/৩৪ হাঃ ২৩৫৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩,২৬৮ ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩২৭৭)

হাদীসের আলোকে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর নামঃ
الشاهد، المبشر، النذير المبين، الداعي إلى الله, السراج المنير،  المذكر، والرحمة، والنعمة، والهادي، والشهيد، والأمين، والمزمل، والمدثر " . الماحي، الحاشر، العاقب,محمّد، أحمد،  الماحي, الحاشر. العاقب .. المُقَفِّي، نبي التوبة، نبي المرحمة، نبي الملحمة.  المختار، المصطفى، الشفيع المشفع، الصادق المصدوق . المختار، والمصطفى، والشفيع المشفع، والصادق المصدوق.


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...