আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
190 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
edited by
আমার মেয়ের বয়স ১০ মাস,এর মধ্যে ভুল করে আবার বাচ্চা কন্সিভ করে ফেলেছি ৪০ দিন হলো। আমি বাসায় একা থাকি আমার হাসবেন্ড কাজের চাপে সারাদিন বাইরে থাকে।  আমার মেয়েকেই ঠিকমতো সময় দিতে পারে না , এই দিকে প্রেগন্যান্সির পর থেকে আমি পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশনে ভুগছি। আমার এমন কেউ নেই যে আমাকে বাচ্চা পালতে প্রতিদিন সাহায্য করবে আর একটা বাচ্চা নিয়ে একা আরও একটা বাচ্চা পালা আমার পক্ষে অনেক কঠিন হয়ে যাবে। আমি রাতে ঘুমাতে পারি না ঠিক মতো ,শরীর শুকিয়ে গেছে অনেক ,বাসায় একা থাকার কারণে বাচ্চা কে নিয়ে অনেক সময় বাসায় রান্না ও করতে পারি না বাইরে থেকে কিনে খেতে হয়। এমন অবস্থায় আমি পেটের বাচ্চাকে কিভাবে জন্ম দিবো আমি দিন দিন মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি
এই অবস্থায়কি আমি গর্ভপাত করলে আমার গুনাহ হবে? নিজেকে অসহায় লাগছে খুব। দিন দিন মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছি বুঝতে পারছিনা কি করবো।

1 Answer

0 votes
by (574,200 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো  যদি মহিলা অত্যাধিক দুর্বল হয়, যার কারণে গর্ভধারণ তার জন্য আশঙ্কাজনক হয় এবং গর্ভধারণের মেয়াদ চার মাসের কম হয়। তাহলে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক গর্ভপাত বৈধ হবে। মেয়াদ চার মাসের অধিক হলে কোনোভাবেই বৈধ হবেনা।

খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান ইত্যাদির অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে, দৈহিক সৌন্দর্য বা ফিগার ঠিক রাখার উদ্দেশ্যে ,কন্যাসন্তান জন্ম নেয়ার ভয়ে (যাতে পরবর্তীতে এদের বিয়ে শাদীর ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়),অধিক সন্তান নেয়াকে লজ্জার বিষয় মনে করে গর্ভপাত বিশেষত অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে গর্ভপাত করলে আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা রিজিকের মালিক আল্লাহ।

আল্লাহ তায়ালা  বলেছেন, 

ولا تقتلوا أولادكم خشية إملاق، نحن نرزقهم وإيّاكم إنّ قتلهم كان خطأ كبيراً. 

‘’দারিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানকে হত্যা কর না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই খাদ্য প্রদান করে থাকি।নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ…’’(সূরা ইসরা, আয়াত-৩১)

অন্যত্র তিনি বলেন, الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ . “শয়তান তোমাদের অভাবের ওয়াদা দেয়।” (সূরা আল-বাক্বারা)

আধুনিক যুগে ভ্রুণহত্যা জাহেলি যুগে কন্যাসন্তানকে
জীবন্ত সমাধিস্থ করার নামান্তর। তখন বাবা নিজ মেয়েকে গর্তে পুঁতে ফেলত; আর এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা
মায়ের পেটেই শিশুকে মেরে ফেলা হয়। এ দুই হত্যার মধ্যে বাহ্যত কোনো তফাত নেই। এজন্য

রাসুলুল্লাহ (সা.) ভ্রুণহত্যাকে ‘গুপ্তহত্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘স্মরণ কর ওই
দিনকে, যেদিন জীবন্ত সমাধিস্থ নিষ্পাপ
বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তোমাকে কোন অপরাধের কারণে হত্যা করা হয়েছে?’ (সূরা তাকয়ির :৮)।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
চার মাসের পূর্বে বিশেষ কিছু কারণে শরীয়ত গর্ভপাতকে অনুমোদন প্রদান করে থাকে।
,
(ক)বর্তমানে কোলে দুধের একটি শিশু রয়েছে,অপরদিকে উক্ত মহিলার গর্ভাশয়ে নতুন সন্তানও উৎপাদিত হচ্ছে। গর্ভের দরুন দুধ একেবারে শুকিয়ে গেছে।অপরদিকে উক্ত সন্তানকে অন্যকোনো উপায়ে লালনপালন করা যাচ্ছেনা। মায়ের দুধ ব্যতীত অন্যকিছুতে সে মূখই দিচ্ছে না।এমতাবস্থায় চারমাস হয়নি এমন গর্ভকে গর্ভপাত করা বৈধ রয়েছে।
,
(খ)কোনো মুসলমান বিজ্ঞ ডাক্তার উক্ত গর্ভবতী মহিলাকে পরিদর্শন করে বলে যে,গর্ভপাত না করলে মহিলার জান বা কোনো অঙ্গ বিনাশের আশঙ্কা রয়েছে।

প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে যে আপনি রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেননা ,শরীর অনেক শুকিয়ে গেছে।
গর্ভের সন্তানের দরুন আপনার শারীরিক ক্ষতি হলে এটি ওযর হবে।

আরো জানুনঃ 
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
আপনার কোলে এখন দুধের শিশু রয়েছে।
এক্ষেত্রে যদি গর্ভের দরুন দুধ আপনার একেবারে শুকিয়ে যায়,যার কারনে দুধের শিশুকে দুধ পান করাতে না পারেন,বা এই পরিমান দুধ শুকিয়ে যায় যে কোলের সন্তানের ক্ষুধা নিবারনের মতো দুধ না পায়,বা কোনো বিজ্ঞ মুসলিম ডাক্তার যদি বলে যে এই মুহূর্তে বাচ্চা নিলে আপনার বা কোলের শিশুর বা গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হতে পারে।

সেক্ষেত্রে আপনার গর্ভের বয়স যেহেতু চার মাসের কম, সুতরাং এক্ষেত্রেই কেবল প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি গর্ভপাত করতে পারবে।
,
নতুবা গর্ভপাত করা জায়েজ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...