জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
বজ্রপাত সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَ مِنۡ اٰیٰتِہٖ یُرِیۡکُمُ الۡبَرۡقَ خَوۡفًا وَّ طَمَعًا وَّ یُنَزِّلُ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَیُحۡیٖ بِہِ الۡاَرۡضَ بَعۡدَ مَوۡتِہَا ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یَّعۡقِلُوۡنَ ﴿۲۴﴾
আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে, তিনি তোমাদেরকে প্রদর্শন করান বিদ্যুৎ ভয় ও আশার সঞ্চারকরূপে এবং আসমান থেকে পানি নাযিল করেন। অতঃপর তা দিয়ে যমীনকে পুনর্জীবিত করেন সেটার মৃত্যুর পর; নিশ্চয় এতে বহু নিদর্শন রয়েছে এমন সম্প্রদায়ের জন্য, যারা অনুধাবন করে।
(সুরা আর রুম ২৪)
আল্লাহর কুদরতের অন্যতম একটি নিদর্শন এই যে, আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিদ্যুতের চমক দেখান। এতে উহার পতিত হওয়ার এবং ক্ষতি করারও আশংকা থাকে এবং এর পশ্চাতে বৃষ্টির আশাবাদও সঞ্চয় হয়। তিনি এই বৃষ্টির দ্বারা শুষ্ক এবং মৃত মৃত্তিকাকে জীবিত ও সতেজ করে তাতে রকমারি প্রকারের বৃক্ষ ও ফল-ফুল উৎপন্ন করেন।
[ইবনে কাসীর]
وَ یُسَبِّحُ الرَّعۡدُ بِحَمۡدِہٖ وَ الۡمَلٰٓئِکَۃُ مِنۡ خِیۡفَتِہٖ ۚ وَ یُرۡسِلُ الصَّوَاعِقَ فَیُصِیۡبُ بِہَا مَنۡ یَّشَآءُ وَ ہُمۡ یُجَادِلُوۡنَ فِی اللّٰہِ ۚ وَ ہُوَ شَدِیۡدُ الۡمِحَالِ ﴿ؕ۱۳﴾
আর রা'দ তার প্রশংসা মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করে এবং ফেরেশতাগণও তা-ই করে তার ভয়ে। আর তিনি গর্জনকারী বজ্র পাঠান অতঃপর যাকে ইচ্ছে তা দ্বারা আঘাত করেন এবং তারা আল্লাহ সম্বন্ধে বিতন্ডা করে, আর তিনি শক্তিতে প্রবল শাস্তিতে কঠোর।
(সুরা রা'দ ১৩)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
বজ্রপাত আল্লাহর কুদরতের অন্যতম একটি নিদর্শন।
ইহা আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টি।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْوَلِيدِ، وَكَانَ، يَكُونُ فِي بَنِي عِجْلٍ عَنْ بُكَيْرِ بْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ أَقْبَلَتْ يَهُودُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا يَا أَبَا الْقَاسِمِ أَخْبِرْنَا عَنِ الرَّعْدِ مَا هُوَ قَالَ " مَلَكٌ مِنَ الْمَلاَئِكَةِ مُوَكَّلٌ بِالسَّحَابِ مَعَهُ مَخَارِيقُ مِنْ نَارٍ يَسُوقُ بِهَا السَّحَابَ حَيْثُ شَاءَ اللَّهُ " . فَقَالُوا فَمَا هَذَا الصَّوْتُ الَّذِي نَسْمَعُ قَالَ " زَجْرُهُ بِالسَّحَابِ إِذَا زَجَرَهُ حَتَّى يَنْتَهِيَ إِلَى حَيْثُ أُمِرَ " . قَالُوا صَدَقْتَ فَأَخْبِرْنَا عَمَّا حَرَّمَ إِسْرَائِيلُ عَلَى نَفْسِهِ قَالَ " اشْتَكَى عِرْقَ النَّسَا فَلَمْ يَجِدْ شَيْئًا يُلاَئِمُهُ إِلاَّ لُحُومَ الإِبِلِ وَأَلْبَانَهَا فَلِذَلِكَ حَرَّمَهَا " . قَالُوا صَدَقْتَ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
ইবনু আব্বাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইয়াহুদীরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, হে আবূল কাসিম! আমাদেরকে রা'দ (মেঘের গর্জন) প্রসঙ্গে বলুন, এটা কি? তিনি বললেনঃ মেঘমালাকে হাকিয়ে নেয়ার জন্য ফেরেশতাদের একজন নিয়োজিত আছে। তার সাথে রয়েছে আগুনের চাবুক। এর সাহায্যে সে মেঘমালাকে সেদিকে পরিচালনা করেন, যেদিকে আল্লাহ তা'আলা চান। তারা বলল, আমরা যে আওয়াজ শুনতে পাই তার তাৎপর্য কি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এটা হচ্ছে ফেরেশতার হাকডাক। এভাবে হাকডাক দিয়ে সে মেঘমালাকে তার নির্দেশিত স্থানে নিয়ে যায়। তারা বলল, আপনি সত্য বলেছেন। তারা আবার বলল, আপনি আমাদের বলুন, ইসরাঈল ইয়াকুব (আঃ) কোন জিনিস নিজের জন্য হারাম করেছিলেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তিনি ইরকুন নিসা (স্যায়াটিকা) রোগে আক্রান্ত ছিলেন কিন্তু উটের গোশত ও এর দুধ ছাড়া তার উপযোগী খাদ্য ছিল না। তাই তিনি তা হারাম করে নিয়েছিলেন। তারা বলল, আপনি সত্য বলেছেন।
সহীহঃ সহীহাহ (১৮৭২)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।
(সুনানে তিরমিজি ৩১১৭)
★বিজ্ঞানের যে ধারনা,মেঘে মেঘে ঘর্ষণে বজ্রপাত হয়ে থাকে-বজ্রপাত সম্পর্কে বিজ্ঞানের এই ধারণা ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক নয়।
এক্ষেত্রে বলা হবে যে এটি ফেরেশতাদের হাকডাক ও মেঘে মেঘে ঘর্ষণ উভয়েরই সমন্বিত আওয়াজ।