আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
194 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (21 points)

১। যত গুলো কালেমা রয়েছে সেগুলা কি কুরআন এর মত আল্লাহর সিফাত অর্থাৎ সৃষ্টনয় কি ? কারন কালেমা তাইয়্যেবা এর দুটি অংশ সুরা আল ইমারান এর ১৮ নাম্বার আয়াত আর সূরা মুনাফিকুন এর ১ নাম্বার আয়াত সুরা আল ফাতহ  এর ২৯ নাম্বার আয়াত এ এরকম আরও অনেক আয়াত রয়েছে সেগুলা হল (২ নাম্বার সুরা :১৭৭ নাম্বার আয়াত, ২ নাম্বার সুরা:১১১-১১২ নাম্বার আয়াত, ২ নাম্বার সুরা:১৩০-১৩১ নাম্বার আয়াত, ৩ নাম্বার সুরা:১৮-২০ নাম্বার আয়াত, ৬ নাম্বার সুরা:৭১ নাম্বার আয়াত, ১৮ নাম্বার সুরা:১১০ নাম্বার আয়াত, ২৭ নাম্বার সুরা:৪৪ নাম্বার আয়াত, ৪০ নাম্বার সুরা:৬৬ নাম্বার আয়াত) সেই ক্ষেত্রে এই কালিমা গুলাকে কি আল্লাহর সিফাত অর্থাৎ সৃষ্টনয় কি বলা যাবে ?

 

২। কালেমার সংখ্যা আসলে কয়টি কিছু জায়গায় ৫টি দেখায় আবার কোন কোন যায়গায় ৬টি ও দেখায় ?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
লাওহে মাহফুযে যেই কুরআন সংরক্ষিত আছে,সেটি মাখলুক (সৃষ্ট) নয়,সেই হিসেবে প্রশ্নে উল্লেখিত  উপরোক্ত শব্দগুলিও যাহা লাওহে মাহফুযে সংরক্ষিত আছে,তাহা মাখলুক (সৃষ্ট) নয়।

(০২)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
কালেমার দ্বারা এখান মূল বিষয় হলো আল্লাহ ও রাসুল সম্পর্কে সাক্ষ্য দেয়া।

যাহা কালেমায়ে শাহাদত বলার দ্বারাই পূর্ণতা লাভ করে।
অন্যান্য কালেমার বাক্য গুলি উচ্চারণ করা মুসলিম হওয়ার জন্য জরুরি নয়।

এক্ষেত্রে কালেমার মধ্যে শুরুর চার কালেমার বাক্য হবহু হাদীস শরীফে আছে।

বাকি সব মিলে কালেমা ৫ টি নাকি ৬ টি এটি তেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।
কালেমায়ে শাহাদাত ব্যাতিত অন্যান্য কালেমা ইসলামী আকীদা সংক্রান্ত বিস্তারিত বাক্য সম্বলিত বাক্য,তাই বেশি ও বিস্তারিত বিষয় আমাদের জানা জরুরি, তাই ৫ এর স্থানে ৬ কালেমা জানা শোনার পরামর্শ উলামায়ে কেরামগন দেন।
যাতে বেশি জানা যায়।

কেহ কেহ বলেন যে, ছয় কালেমা মুখস্থ না থাকলে মানুষ মুসলমান থাকে না এধরনের কথা ঠিক নয়।

তবে ইসলামের যে সমস্ত বিষয়ে সকলের আকীদা পোষন জরুরি, সেসব বিষয় গুলির অনেকটাই যেহেতু এই ছয় কালেমায় পাওয়া যায়,তাই উলামায়ে কেরামগন এই ছয় কালেমা পড়ার পরামর্শ দেন।
যাতে করে সাধারণ দের আকীদা বিশুদ্ধ হয়।

উল্লেখ্য যে ছয় কালেমার মধ্যে শুরুর চার কালেমার বাক্য হবহু হাদীস শরীফে আছে।
বাকি দুই কালেমার বাক্য পৃথক হাদীস থেকে নেয়া হয়েছে।

১ম কালেমা মুসতাদাকে হাকিমে আছেঃ

 المستدرک علی الصحیحین للحاکم 

’’حدثنا علی بن حمشاذ العدل إملاءً ثنا هارون بن العباس الهاشمی، ثنا جندل بن والق، ثنا عمروبن أوس الأنصاري، ثنا سعید بن أبي عروبة عن قتادة، عن سعید بن المسیب عن ابن عباس رضی اللّٰه عنه قال:’’ أوحی اللّٰه إلٰی عیسی علیه السلام یا عیسی! آمن بمحمد وأمر من أدرکه من أمتك أن یؤمنوا به، فلولا محمد ما خلقت آدم، ولولا محمد ما خلقت الجنة ولا النار، ولقد خلقت العرش علی الماء فاضطرب فکتبت علیه لا إلٰه إلا اللّٰه محمد رسول اللّٰه فسکن‘‘. هذا حدیث صحیح الإسناد‘‘. (المستدرك علی الصحیحین للحاکم، ج:۲، ص:۶۷۱، حدیث:۴۲۲۷، دار الکتب العلمیة، بیروت)

২য় কালেমা ইবনে মাজাহ তে আছেঃ

’’حدثنا موسٰی بن عبد الرحمٰن قال: حدثنا الحسین بن علی ویزید بن الحباب ’’ح‘‘ وحدثنا محمد بن یحیٰی قال: حدثنا أبو نعیم قالوا: حدثنا عمرو بن عبد اللّٰه بن وهب أبو سلیمان النخعي، قال حدثنی زید العمي عن أنس بن مالك، عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: من توضأ فأحسن الوضوء، ثم قال ثلاث مرات: أشهد أن لا إلٰه إلا اللّٰه وحده لاشریك له وأشهد أن محمدًا عبده ورسوله، فتح له ثمانیة أبواب الجنة، من أیها شاء دخل‘‘.   (ابن ماجه ، ج:۱،ص: ۱۵۹، حدیث:۴۶۹، دار إحیاء الکتب العربیة)

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোন মুসলিম ব্যাক্তি উত্তমরূপে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করার পর তিনবার বলে (কালিমা শাহাদাত): আমি সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই, তাঁর কোন শারীক নাই, তিনি একক এবং আমি আরো সাক্ষ্য দেই যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে। সে যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছা তাতে প্রবেশ করবে।
(ইবনে মাজাহ ৪৬৯.আবূ দাঊদ ১০৫০ সহীহ, জামি সগীর ৬১৬৮, মাজাহ ১০৯০ সহীহ, তিরমিযী ৪৯৮ সহীহ, মিশকাত ১৩৮৩ সহীহ, ইরওয়াহ ৯৬, সহীহ আবূ দাউদ ১৬২, সহীহ তারগীব ২১৯।)

বুখারী শরীফে আছেঃ 

’’حدثنا مسدد قال: حدثنا یحی عن الأعمش، حدثني شقیق عن عبد اللّٰه، قال: کنا إذا کنا مع النبي ﷺ في الصلاة، قلنا: السلام على اللّٰه من عباده، السلام على فلان وفلان، فقال النبي صلی اللّٰه علیه وسلم: لاتقولوا السلام علی اللّٰه؛ فإن اللّٰه هوالسلام، ولکن قولوا: التحیات للّٰه والصلوات والطیبات، السلام علیك أیها النبي ورحمة اللّٰه وبرکاته، السلام علینا وعلى عباد اللّٰه الصالحین، فإنکم إذا قلتم أصاب کل عبد في السماء أو بین السماء والأرض، أشهد أن لا إله إلا اللّٰه وأشهد أن محمدًا عبده ورسوله، ثم یتخیر من الدعاء أعجبه إلیه فیدعو‘‘.              (صحیح البخاري، ج:۱، ص:۱۶۷، حدیث:۸۳۵، باب ما یتخیر الدعاء بعد التشهد، دار طوق النجاة)

‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতাম তখন এ দু‘আ পাঠ করতাম, ‘‘আসসালা-মু ‘আলাল্ল-হি ক্ববলা ‘ইবা-দিহী, আসসালা-মু ‘আলা- জিবরীলা, আসসালা-মু ‘আলা- মীকায়ীলা, আসসালা-মু ‘আলা- ফুলা-নিন’’- (অর্থাৎ- আল্লাহর ওপর সালাম তাঁর বান্দাদের ওপর পাঠাবার আগে, জিবরীলের উপর সালাম, মীকায়ীল-এর ওপর সালাম। সালাম অমুকের উপর। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষ করলেন, আমাদের দিকে ফিরে বললেন, ‘‘আল্লাহর ওপর সালাম’’ বলো না। কারণ আল্লাহ তো নিজেই সালাম (শান্তিদাতা)।

অতএব তোমাদের কেউ সলাতে বসে বলবে, ‘‘আততাহিয়্যাতু লিল্লা-হি ওয়াস্ সলাওয়া-তু ওয়াত্ব ত্বইয়্যিবা-তু আসসালা-মু ‘আলায়কা আইয়্যুহান নাবিইয়্যু ওয়ারহমাতুল্ল-হি ওয়াবার-কা-তুহু আসসালা-মু ‘আলায়না ওয়া‘আলা- ‘ইবা-দিল্লা-হিস্ স-লিহীন’’

(অর্থাৎ- সব সম্মান, ‘ইবাদাত, উপাসনা ও পবিত্রতা আল্লাহর জন্য। হে নাবী! আপনার ওপর আল্লাহর সব নেক বান্দাদের ওপর সালাম)।

তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, কোন ব্যক্তি এ কথাগুলো বললে এর বারাকাত আকাশ ও মাটির প্রত্যেক নেক বান্দার কাছে পৌঁছবে। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘‘আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহূ ওয়া রসূলুহু’’- (অর্থাৎ- আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মা‘বূদ নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  আল্লাহর বান্দা ও রসূল।)

তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এরপর আল্লাহর বান্দার কাছে যে দু‘আ ভালো লাগে সে দু‘আ পাঠ করে আল্লাহর মহান দরবারে আকুতি মিনতি জানাবে।
বুখারী ৮৩৫, ৬২৩০, মুসলিম ৪০২, আবূ দাঊদ ৯৬৮, নাসায়ী ১২৯৮, ইবনু মাজাহ্ ৮৯৯, আহমাদ ৪১০১।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...