আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
106 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (24 points)
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ!

আমার কিছু প্রশ্ন আছে

১. অনলাইনে অনেকে টিশার্ট ডিজাইন করে বিক্রি করে। এখন আমি যদি তাদের ডিজাইন দেখে ধারণা নেই যে তারা একটা ডিজাইনে কি কি গ্রাফিক্স ব্যবহার করছে,কি কি লিখা ব্যবহার করছে, কিভাবে ডিজাইন করছে, তারপর আমি যদি তারা যেই গ্রাফিক্স ব্যবহার করছে ডিজাইনে ওরকম গ্রাফিক্স ব্যবহার করি, যেমন তারা ডিজাইনে দিছে হাতের ছবি বা একটা তালা, আবার আরেকজনের দিছে বল এর ছবি। এখন যদি আমার ডিজাইনে আমি হাতের ছবি বা বল এর ছবি দেই, সাথে কোনো লিখা যোগ করে একটি টিশার্ট ডিজাইন করি এবং এই ডিজাইন টি টিশার্ট এর উপর প্রিন্ট করে বিক্রি করি তাহলে কি আমার ইনকাম হারাম হবে? কারণ তাদের গ্রাফিক্স এবং আমার গ্রাফিক্স তো এক হবেই। হাত এর ছবি তো প্রায় এক এই রকম। এখন বলা যায় এক জন হাতের ছবি ব্যবহার করছে আমি দিবো লাঠির ছবি কিন্তু ওই লাঠির ছবি ও আবার অনেকে ব্যবহার করে ডিজাইন করছে।
এইভাবে ডিজাইন করে ইনকাম করলে যদি হারাম হয় তাহলে আমি কিভাবে ডিজাইন করবো? (১.২)

২. বিদেশী একটা কোম্পানি আছে ওদের টিশার্ট এবং অন্যান্য পণ্য আছে। ওরা একটা টিশার্ট এর দাম ৬০০ টাকা করে বিক্রি করে। আমি যদি ওদের ওয়েবসাইটে একাউন্ট করি এবং আমার তৈরি করা ডিজাইন তাদের দেই , তারপর তারা আমাকে টিশার্ট বা অন্য পণ্যের দাম নির্ধারণ করতে বলবে। যেমন: ওদের টিশার্ট এর দাম ৬০০ টাকা এখন আমি ওই টিশার্ট এর উপর আমার ডিজাইন দিয়ে ৬০০ টাকার উপর যত বেশি বিক্রি করতে পারবো তা আমার লাভ। তারপর আমাকে ওই টিশার্ট এর মার্কেটিং করতে হবে এবং বিক্রি করতে হবে। বিক্রি হলে প্রতি পিস বিক্রিতে ৬০০ টাকার উপরে যা বিক্রি করতে পারবো ওরা আমাকে ওই টাকা আমার এক একাউন্ট এ দিয়ে দিবে এবং ওরা আমার ডিজাইনটি ওই টিশার্ট বা অন্য কোনো পণ্যের উপরে বসিয়ে প্রিন্ট করে কাস্টমার এর ঠিকানায় পাঠিয়ে দিবে। এইভাবে ইনকাম করলে কি ইনকাম হালাল হবে? (বি:দ্রঃ ওই কোম্পানি পণ্য গুলো স্টক করে তাদের কাছে রাখে এবং পণ্য শেষ হয়ে গেলে আবার পণ্য কিনে আনে, এমন ও হতে পারে ওদের পণ্য শেষ কিন্তু আমি মার্কেটিং করে পণ্য বিক্রি করে ফেলেছি,তখন তারা আবার পণ্য টা কিনে এনে কাস্টমার কে দিবে। ও হ্যা কাস্টমার আগে পেমেন্ট করে অর্ডার করবে তারপর পণ্য পাবে।

 আমি কত টাকা লাভ করতে পারবো ওই টিশার্ট বা অন্য কোনো পণ্যের এমন কোনো নির্দেশনা আছে আমাদের ইসলাম ধর্মে?(২.২)

৩. আমি আমার ওয়েবসাইটে লিখে দিলাম এই পণ্যটি কিনলে আপনি ৫-৭ দিনের মধ্যে পেয়ে যাবেন। অবশ্য ডেলিভারি টাইম টা ওই কোম্পানি এই লিখে দেয়, আমি নিজে লিখি না। এখন যদি কেউ দেখে যে ৫-৭ দিনের মধ্যে সে পণ্য টি পাবে যদি সে অর্ডার করে তাহলে, আর এটা দেখে সে যদি অর্ডার করে কিন্তু ওই কোম্পানি যদি পণ্য টা ৫-৭ দিনের পরে পাঠায় বা ৫ দিনের ও আগে পাঠিয়ে দেয় তাহলে কি কাস্টমার কে ধোঁকা দেয়া হলো? এইভাবে ইনকাম করলে আমার ইনকাম কি হারাম হবে? (৩.২) কারণ অনেক ক্ষেত্রে কোনো সমস্যার কারণে ডেলিভারি দিতে দেরি হতে পারে।

কাস্টমার অর্ডার করলো সাদা কালার টিশার্ট কিন্তু ওই কোম্পানি কালো কালার টিশার্ট কাস্টমার কে পাঠিয়ে দিলো। আমি তো জানবো না ওই কোম্পানি সাদা টিশার্ট এর পরিবর্তে কালো টিশার্ট কাস্টমার কে দিছে। এইভাবে ইনকাম করলে কি আমার ইনকাম হারাম হবে? (৩.৩) আমার জানা মতে তারা এই কাজ করে না কিন্তু আমি ১০০% সঠিক কোনো টাই বলতে পারি না। (বি:দ্রঃ কাস্টমার চাইলে রিটার্ন করলে পারবে বা রিফান্ড নিতে পারবে কিন্তু কাস্টমার যদি রিটার্ন বা রিফান্ড করে তাহলে কাস্টমার কে ডেলিভারি চার্জ দেয়া লাগবে এবং ট্যাক্স, হ্যান্ডলিং ফি বা অতিরিক্ত কোনো ফি থাকলে তা দেয়া লাগবে।(অনেক ক্ষেত্রে এইগুলা ছাড়া ও আরো নীদিস্ট কোনো আমাউন্ট বেশি লাগতে পারে)। অবশ্য এই গুলা রিটার্ন ও রিফান্ড পলিসি তে দেয়া থাকবে কিন্তু কাস্টমার যদি কোম্পানির দেয়া ডিসকাউন্টে পণ্য কিনে বা বিশেষ দিবসে পণ্য কিনে তাহলে সে রিটার্ন বা রিফান্ড করতে পারবে না। যেমন: বিভিন্ন দিবসে কোম্পানি ডিসকাউন্ট দেয়। অবশ্য এই গুলা রিটার্ন ও রিফান্ড পলিসি তে দেয়া থাকবে এবং ওয়েবসাইটের শেষে নিচের দিকে রিটার্ন এবং রিফান্ড পলিসির লিংক দেয়া থাকে, কাস্টমার চাইলে পণ্য কেনার আগে ওই লিংকে ক্লিক করে রিটার্ন এবং রিফান্ড পলিসি দেখে নিতে পারবে। )

৪. আমার ওয়েবসাইটে ওই কোম্পানির কাস্টমার কেয়ার এর নম্বর দেয়া থাকবে এবং ইমেইল দেয়া থাকবে। কোনো কাস্টমার যদি আমার ওয়েবসাইট থেকে পণ্য কেনার জন্য কোনো তথ্য জানার জন্য ওই কাস্টমার কেয়ারে কল দিয়ে কথা বলে বা ইমেইল করে কথা বলে তাহলে কি আমার গুনা হবে?
আমার ইনকাম কি হারাম হবে? (৪.২) কারণ কাস্টমার কেয়ারে কল দেয়ার মাধ্যমে বা ইমেল করার মাধ্যমে পুরুষ-মহিলার মধ্যে কথা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বা কথা হবে।

৫. আমি আমার আব্বুর নাম এবং বিভিন্ন তথ্য ব্যবহার করে কোনো মার্কেটপ্লেস এ অ্যাকাউন্ট করে যদি পণ্য বিক্রির মাধ্যমে ইনকাম করি এবং সেই ইনকাম এর টাকা আব্বুর ব্যাংক মাধ্যমে আনি, তাহলে কি আমার এই ইনকাম হারাম হবে? (আমি যেই মার্কেটপ্লেস এ আব্বুর নামে অ্যাকাউন্ট করে কাজ করেছিলাম সেই কোম্পানি ১৮ বছরের নিচে কাওকে অ্যাকাউন্ট করে পণ্য বিক্রির অনুমতি দেয় না এবং ১৮ বছরের উপরের কারো অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বিক্রির অনুমতি ও দেয় না)।

ওই মার্কেটপ্লেস এ আমি দুইটা পণ্য বিক্রি করছিলাম ৬০০০ টাকায়, সাপ্লায়ার এর থেকে পণ্য কিনেছিলাম ৫৫০০ টাকায়। কিন্তু পণ্য কেনার সময় ট্যাক্স দেয়া লাগছে তাই আমার লস হয়েছিল। এখন যদি ওই মার্কেটপ্লেস থেকে আমি ওই ৬০০০ টাকা উঠাই এবং তা দিয়ে অন্য কোনো ব্যবসা করি তাহলে কি আমার ইনকাম হারাম হবে? ৫.২

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


https://ifatwa.info/52640/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
অন্যায় ভাবে কোনো কিছু ব্যবহার করা শরীয়তে জায়েজ নেই।
কাহারো অনুমতি ছাড়া তার ডিজাইন এভাবে ব্যবহার করে ইনকান করা তাকে ধোকা দেয়ার শামিল, বিধায় তাহা জায়েজ নেই।
  
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়। (বায়হাক্বী- শু‘আবুল ঈমান, দারাকুত্বনী- মুজতাবা)
সহীহ : আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২,মিশকাতুল মাসাবিহ ২৯৪৬।)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

কেহ যদি অন্যের টিশার্ট ডিজাইন দেখে দেখে ডিজাইন করা,বা  তাহা হতে কিছু অংশ কাটসাট করে নিজের ডিজাইনে নিয়ে আসাটা জায়েয হবে না।এবং এভাবে ইনকাম করাটাও জায়েয হবে না।
অর্ধেক জিডাইন এভাবে ধোকাবাজি. চুরি করলে অর্ধেক ইনকাম হারাম।পূর্ণ ডিজাইন এভাবে ধোকাবাজি, চুরি করলে পূর্ণ ডিজাইন হারাম।

তবে যদি সেই ডিজাইন যে মূলত করেছে,তার থেকে বা কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমতি নিয়ে সে তার ডিজাইন দেখে দেখে এসব করে ইনকাম করে,তাহলে তার একাজ ও ইনকাম জায়েজ হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
আপনি যদি হুবহু তার মতো টি শার্টের ডিজাইন না করেন,বা হুবহু কোনো অংশের ডিজাইম না করেন,সেক্ষেত্রে আপনার ইনকাম হারাম হবেনা।

(০২)
এই ভাবে ইনকাম হালাল হবে।

(০৩)
এক্ষেত্রে ইনকাম হারাম হবেনা।
ডেলিভারি দিতে দেড়ি সেই বাক্তির থেকে ক্ষমা চেয়ে নিবেন।

(০৪)
এক্ষেত্রে আপনার ইনকাম হারাম হবেনা।
হালাল থাকবে।

কোনো মহিলা ফোন দিলে প্রয়োজন অতিরিক্ত কথা বলবেননা।
ফিতনা মূলক কথা ও কাজ হতে দূরে থাকবেন।

(০৫)
এতে আপনার ইনকাম হারাম হবেনা।

আপনি যেহেতু আপনার আব্বুর নাম ও তার বিভিন্ন তথ্য ব্যবহার করছেন,সুতরাং এক্ষেত্রে আপনার আব্বুকে বিষয়টি জানিয়ে রাখবেন।

(তবে না জানালেও আপনার ইনকাম হারাম হবেনা।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...