বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
এক মুসলমান অন্য মুসলমান থেকে দু'আ চাইতে পারবে।এতে কোনো সমস্যা নাই।আল্লাহ তা'আলা বলেন,
قَالُواْ يَا أَبَانَا اسْتَغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا إِنَّا كُنَّا خَاطِئِينَ
তারা বললঃ পিতা আমাদের অপরাধ ক্ষমা করান। নিশ্চয় আমরা অপরাধী ছিলাম।(সূরা ইউসুফ-৯৭)
উসায়র ইবনু জাবির (রাযিঃ) হতে বর্ণিত যে,
عَنْ أُسَيْرِ بْنِ جَابِرٍ، أَنَّ أَهْلَ الْكُوفَةِ وَفَدُوا إِلَى عُمَرَ، وَفِيهِمْ رَجُلٌ مِمَّنْ كَانَ يَسْخَرُ بِأُوَيْسٍ، فَقَالَ عُمَرُ: هَلْ هَاهُنَا أَحَدٌ مِنَ الْقَرَنِيِّينَ؟ فَجَاءَ ذَلِكَ الرَّجُلُ فَقَالَ عُمَرُ: إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ قَالَ: «إِنَّ رَجُلًا يَأْتِيكُمْ مِنَ الْيَمَنِ يُقَالُ لَهُ أُوَيْسٌ، لَا يَدَعُ بِالْيَمَنِ غَيْرَ أُمٍّ لَهُ، قَدْ كَانَ بِهِ بَيَاضٌ، فَدَعَا اللهَ فَأَذْهَبَهُ عَنْهُ، إِلَّا مَوْضِعَ الدِّينَارِ أَوِ الدِّرْهَمِ، فَمَنْ لَقِيَهُ مِنْكُمْ فَلْيَسْتَغْفِرْ لَكُمْ»
কুফার একটি প্রতিনিধি দল উমর (রাযিঃ) এর কাছে আগমন করলো। তাদের মধ্যে এমন এক ব্যক্তিও ছিল, যে উওয়াইস (রহঃ) কে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত। তখন উমার (রাযিঃ) বললেন, এখানে কারানী গোষ্ঠীর কোন ব্যক্তি আছে কি? তখন সে লোকটি আসলো। এরপর উমর (রাযিঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের নিকট ইয়ামান থেকে এক ব্যক্তি আগমন করবে, যে উওয়াইস নামে খ্যাত। ইয়ামানে তার মা ছাড়া আর কেউ থাকবে না। তার কুষ্ঠরোগ হয়েছিল। সে আল্লাহর নিকট দু'আ করার পরিবর্তে আল্লাহ তাকে কুষ্ঠরোগ দূর করে দেন। কিন্তু কেবল মাত্র এক দীনার কিংবা এক দিরহাম পরিমাণ জায়গা অবশিষ্ট থাকে। তোমাদের মাঝখান থেকে কেউ যদি তার দেখা পায় সে যেন নিজের জন্য তার নিকট মাগফিরাতের দু'আ প্রার্থনা করে।(সহীহ মুসলিম-২৫৪২)
সাফওয়ান ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু সাফওয়ান (রহঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنْ صَفْوَانَ - وَهُوَ ابْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ صَفْوَانَ - وَكَانَتْ تَحْتَهُ الدَّرْدَاءُ قَالَ : قَدِمْتُ الشَّامَ ، فَأَتَيْتُ أَبَا الدَّرْدَاءِ فِي مَنْزِلِهِ ، فَلَمْ أَجِدْهُ ، وَوَجَدْتُ أُمَّ الدَّرْدَاءِ ، فَقَالَتْ : أَتُرِيدُ الْحَجَّ الْعَامَ ؟ فَقُلْتُ : نَعَمْ . قَالَتْ : فَادْعُ اللَّهَ لَنَا بِخَيْرٍ ، فَإِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُولُ : ( دَعْوَةُ الْمَرْءِ الْمُسْلِمِ لِأَخِيهِ بِظَهْرِ الْغَيْبِ مُسْتَجَابَةٌ ، عِنْدَ رَأْسِهِ مَلَكٌ مُوَكَّلٌ ، كُلَّمَا دَعَا لِأَخِيهِ بِخَيْرٍ قَالَ الْمَلَكُ الْمُوَكَّلُ بِهِ : آمِينَ ، وَلَكَ بِمِثْلٍ ) قَالَ : فَخَرَجْتُ إِلَى السُّوقِ ، فَلَقِيتُ أَبَا الدَّرْدَاءِ ، فَقَالَ لِي مِثْلَ ذَلِكَ يَرْوِيهِ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ )
তিনি বলেন, আমি সিরিয়াতে আবু দারদা (রাযিঃ) এর ঘরে গেলাম। আমি তাকে ঘরে পেলাম না; বরং সেখানে উম্মু দারদাকে পেলাম। তিনি বললেন, আপনি কি এ বছর হজ্জ পালন করবেন? আমি বললাম, জি হ্যাঁ। তিনি বললেন, আল্লাহর নিকট আমাদের কল্যাণের জন্যে দু’আ করবেন। কেননা, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ একজন মুসলিম বান্দা তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দুআ করলে তা কবুল হয়। তার মাথার নিকটে একজন ফেরেশতা নিয়োজিত থাকেন, যখন সে তার ভাইয়ের জন্য প্রার্থনা করে তখন নিয়োজিত ফেরেশতা বলে থাকে "আমীন এবং তোমার জন্যও অবিকল তাই"।(সহীহ মুসলিম-২৭৩৩)
উমর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত
عَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ : ( اسْتَأْذَنْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْعُمْرَةِ فَأَذِنَ لِي وَقَالَ : لَا تَنْسَنَا يَا أُخَيَّ مِنْ دُعَائِكَ ، فَقَالَ كَلِمَةً مَا يَسُرُّنِي أَنَّ لِي بِهَا الدُّنْيَا )
তিনি বলেন, আমি ‘উমরাহ করতে যাবার জন্য নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে অনুমতি চাইলে তিনি আমাকে অনুমতি দিয়ে বললেনঃ হে আমার ছোট ভাই! তোমার দু‘আয় আমাদেরকে যেন ভুলো না। পরবর্তীতে ‘উমার (রাঃ) বলেন, তাঁর এ একটি শব্দ আমাকে এতোটা আনন্দ দিয়েছে যে, এর বিনিময়ে সমগ্র দুনিয়ার সম্পদও আমাকে এতোটা আনন্দিত করতে পারতো না। শু‘বাহ (রহঃ) বলেন, পরবর্তীতে আমি মাদীনায় ‘আসিমের সাথে দেখা করলে তিনি আমাকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেন। তবে তিনি ‘আমাদেরকে ভুলো না’ এর স্থলে ‘আমাদেরকেও শরীক করো’ বলেছেন।(আবু-দাউদ-১৪৯৮)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
একজন অন্যজনের জন্য দু'আ করবে।দু'আ মন থেকেই করবে।মন থেকে নয় বরং কাউকে খুশী করার জন্য দু'আ করলে সেটা প্রতারণা হবে।আর প্রতারণাকারী শয়তানী ভাই।আল্লাহ সবকিছুই দেখছেন,ও জানেন।বাহ্যিকভাবে কাউকে খুশী করা, এমনটা করা কখনো মু'মিনের জন্য কাম্যও নয়।তবে এজন্য সে কাফির হবে না।কেউ মন থেকে করুক বা নাই করুক।কবুলের মালিক তো আল্লাহ।আল্লাহ চাইলে ঐ দু'আও কবুল করে নিতে পারেন।যা মানুষ মন থেকে করে না।