ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(ভূমিকা)
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ فَأْتُوا حَرْثَكُمْ أَنَّىٰ شِئْتُمْ ۖ وَقَدِّمُوا لِأَنفُسِكُمْ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاعْلَمُوا أَنَّكُم مُّلَاقُوهُ ۗ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর। আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও। (সূরা বাকারা-২২৩)
" ملعون من أتى امرأة في دبرها "
যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর পায়ূপথে সঙ্গম করলো,সে অভিশপ্ত
(মসনদে আহমদ-২/৪৭৯,সহিহুল জামে ৫৮৬৫)
: " من أتى حائضا أو امرأة في دبرها أو كاهنا فقد كفر بما أنزل على محمد "
যে ব্যক্তি হায়েযাগ্রস্ত স্ত্রীর সাথে সহবাস করলো বা স্ত্রীর পায়ূপথে সঙ্গম করলো কিংবা গণকের নিকট ভবিষ্যত জানতে গেল, সে মুহাম্মদ সাঃ এর উপর আগত অহী কে অস্বীকার করলো।(সুনানু তিরমিযি-১/২৪৩,সহিহুল জামে- ৫৯১৮)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
স্বামী-স্ত্রী পরস্পর পরস্পরের সমস্ত অঙ্গ দ্বারা ফায়দা নিতে পারবে।উপভোগ করতে পারবে।কিন্তু একে অপরের লজ্জাস্থানকে মুখে নেওয়া বেহায়াপনা ও চুড়ান্ত পর্যায়ের অশ্লীলতা, বিধায় ফুকাহায়ে কেরাম মাকরুহ বলেছেন।যদি স্ত্রী নিজের যৌন অনুভূতিকে মুখে প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করে বা যৌন আখাংকায় বেহুশ হয়ে স্বামীর গোপনাঙ্গকে মুখে নিয়ে নেয়,এক দুইবার হলে মাফ।ঠিক তেমনি স্বামী যৌন আখাংকায় বেহুশ হয়ে যদি স্ত্রীর গোপনাঙ্গকে মুখে নিয়ে নেয়,এক দুই বার হলে মাফ।নিয়মিত অভ্যাস বানিয়ে ফেলা মাকরুহ।বীর্যকে মুখে প্রবেশ করানো যাবে না।এবং গিলে ফেলা মাকরুহে তাহরীমি।(ফাতাওয়ায়য়ে মাহমুদিয়্যাহ-১৮/৬২৪,জামেউল ফাতাওয়া - ৩/২৩৪,ফাতাওয়ায়ে রাহিমিয়্যাহ-৬/৩৭০)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/6009
আপনার প্রশ্নের জবাবঃ-
(১)
স্ত্রীকে মোহাব্বতের প্রকাশ হিসেবে তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে যেমন মুখ মণ্ডল, হাত, পা, স্তন, ঘাড়, পেট, পিঠ লেহন, প্রেশন করা, নিতম্ব, স্তন, হাত পায়ের আঙুলে চুম্বন করা, কোন মিষ্টান্ন তরল নিয়ে তা এখানে লাগিয়ে লেহন করা, কাপড়ের উপর দিয়েই নিতম্বে যৌনাংগ ঘর্ষন করা এসবই জায়েয। অর্থাৎ স্ত্রীর পায়ূপথে সহবাস করা,বীর্য বা দুধকে গিলে ফেলা ব্যতিত সবকিছুই জায়েয।
(২)
স্ত্রীর হাতে পায়ে মেহেদি দিয়ে দিতে পারবেন।এতেকরে কোনো সমস্যা হবে না।
(৩)
বাইরের লোকজনকে বারণ করার অধিকার আপনার থাকবে।তবে স্ত্রীর মাহরাম ও মহিলা আত্মীয় স্বজনকে বারণ করতে পারবেন না। হ্যা, ফিতনার বা সংসারে ফাটল ধরার আশঙ্কা থাকলে তখন আপনি স্ত্রীর আত্মীয় স্বজনকেও বাধা দিতে পারবেন।
(৪)
كَمَا يَجِبُ سَتْرُ الْعَوْرَةِ عَنْ أَعْيُنِ النَّاسِ يَجِبُ كَذَلِكَ سَتْرُهَا وَلَوْ كَانَ الإِْنْسَانُ فِي خَلْوَةٍ، أَيْ فِي مَكَانٍ خَالٍ مِنَ النَّاسِ. وَالْقَوْل بِالْوُجُوبِ هُوَ مَذْهَبُ الْحَنَفِيَّةِ عَلَى الصَّحِيحِ،
যেভাবে লোকসম্মুখে সতরকে ঢেকে রাখা ওয়াজিব,ঠিকতেমনি একাকি অবস্থায়ও সতরকে ঢেকে রাখা ওয়াজিব।বিশুদ্ধমতানুযায়ী এটাই হানাফি ফিকহের সিদ্ধান্ত। (আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-২৪/১৭৬)
وَقَدْ أَجْمَعَ الْفُقَهَاءُ عَلَى فَسَادِ صَلاَةِ مَنْ تَرَكَ ثَوْبَهُ وَهُوَ قَادِرٌ عَلَى الاِسْتِتَارِ بِهِ وَصَلَّى عُرْيَانًا. وَيُشْتَرَطُ فِي السَّاتِرِ أَنَّهُ يَمْنَعُ إِدْرَاكَ لَوْنِ الْبَشَرَةِ.
সমস্ত উলামায়ে কেরাম এ কথা উপর একমত যে, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও সতরকে ঢাকবে না,বরং সে ব্যক্তি উলঙ্গ হয়ে নামায পড়বে, তার নামাযই হবে না।
সতরের কাপড়ের জন্য শর্ত হল যে, শরীরের রংকে প্রকাশ হতে বাধা প্রদাণ করবে। (আল মমাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-২৪/১৭৫)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
স্বামীকে সন্তুষ্ট করার জন্য স্ত্রী বাসায় পাতলা কাপড় পরিধান করতে পারবে যদি বাসায় অন্য কারো আনাগোনা না থাকে, নতুবা স্ত্রী উক্ত পাতলা পোষাক পরিধান করতে পারবে না। এমন পাতলা পোষাক যা পরিধাণ করলে গায়ের রং প্রকাশ হয়ে যায়, তা দ্বারা নামায হবে না।
(৫)
আপনার স্ত্রীর কোনো অভিযোগ না থাকলে, তাতে কোনো সমস্যা নেই।