ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
সালাতের মুস্তাহাব সময়
ফজরের সালাত পুরষদের জন্য ফর্সা করে পড়া
মুস্তাহাব। আর মহিলাদের জন্যে একটু অন্ধকারে পড়া মুস্তাহাব।
রাফি’ ইবনে খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা. ) বলেছেন,
"أَصْبِحُوا بِالصُّبْحِ فَإِنَّهُ
أَعْظَمُ لأُجُورِكُمْ ". أَوْ" أَعْظَمُ لِلأَجْر" .
ভোরের আলো প্রকাশিত হলে ফজর সালাত আদায়
করবে। কারণ এতে তোমাদের জন্য অত্যাধিক সওয়াব বা অতি উত্তম বিনিময় রয়েছে।’’ আবু
দাউদ 424
ফজরের এই সময়টুকু দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
শরিয়তের পরিভাষায় প্রথম ভাগকে ‘গালাস’ আর দ্বিতীয় ভাগকে ‘ইসফার’ বলে। রাসূল
সা. অধিকাংশ সময় দ্বিতীয় অংশ তথা ইসফারে
ফজরের সালাত আদায় করতেন। ফিকাহবিদগণ বলেন; প্রথম ভাগ তথা ‘গালাস’ এর সময় মহিলাদের আর দ্বিতীয় ভাগ তথা
‘ইসফার’ এর সময় পুরুষদের ফজর সালাত আদায় করা উত্তম। দুররুল মুখতার ০১/২৬৩, আল- বাহরুর রায়েক ০১/২৪৪
গ্রীষ্মকালে যোহরকে শীতল করে পড়া
মুস্তাহাব
আবু হুরায়রা (রাঃ) ও ‘আবদুল্লাহ্ ইবনে 'উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত আল্লাহ্র রাসূল
(সা. ) বলেছেন,
إِذَا اشْتَدَّ الْحَرُّ فَأَبْرِدُوا عَنِ
الصَّلاَةِ، فَإِنَّ شِدَّةَ الْحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ.
যখন গরমের প্রচণ্ডতা বৃদ্ধি পায়, তখন গরম কমলে সালাত আদায় করবে। কেননা, গরমের প্রচণ্ডতা জাহান্নামের নিঃশ্বাসের
অংশ।’’ সহীহ বুখারী-533
আসরকে দেরী করে পড়া মুস্তাহাব
আলী ইবনে শায়বান (রাঃ) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
قَدِمْنَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
الْمَدِينَةَ فَكَانَ يُؤَخِّرُ الْعَصْرَ مَا دَامَتِ الشَّمْسُ بَيْضَاءَ
نَقِيَّةً .
একদা আমরা মদীনা হয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর
কাছে গেলাম। সে সময় তিনি সূর্যের রং উজ্জ্বল থাকা পর্যন্ত আসরের সালাত বিলম্ব করে
আদায় করলেন।’’ আবু দাউদ ৪০৮
মেঘাচ্ছন্ন দিনে তাড়াতাড়ি আসরের সালাত পড়া
মুস্তাহাব
বুরায়দাহ আল-আসলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন; আমরা রাসুলুল্লাহ (সা. ) এর সাথে এক
যুদ্ধে যোগদান করেছিলাম। তিনি সা. বলেন,
بَكِّرُوا بِالصَّلاَةِ فِي الْيَوْمِ الْغَيْمِ فَإِنَّهُ مَنْ
فَاتَتْهُ صَلاَةُ الْعَصْرِ حَبِطَ عَمَلُهُ
তোমরা মেঘাচ্ছন্ন দিনে তাড়াতাড়ি (প্রথম
ওয়াক্তে) সালাত আদায় করবে। কারণ যার আসরের সালাত ছুটে যায় তার আমল বিনষ্ট হয়ে
যায়।’’ ইবনে মাজাহ 694
মাগরিবের সালাতের মুস্তাহাব সময়
মারসাদ ইবনে ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন,
لاَ تَزَالُ أُمَّتِي بِخَيْرٍأَوْ قَالَ
عَلَى الْفِطْرَةِ مَا لَمْ يُؤَخِّرُوا الْمَغْرِبَ إِلَى أَنْ تَشْتَبِكَ
النُّجُومُ
আমার উম্মাত ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে
অথবা মূল অবস্থায় থাকবে যতদিন তারা মাগরিবের সালাত আদায়ে তারকা উজ্জ্বল হওয়া
পর্যন্ত বিলম্ব করবে না।’’ আবু দাউদ 418
এশার সালাতের মুস্তাহাব সময়
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, নবী (সা. ) বলেছেন,
لَوْلاَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي لأَمَرْتُهُمْ
أَنْ يُؤَخِّرُوا الْعِشَاءَ إِلَى ثُلُثِ اللَّيْلِ أَوْ نِصْفِهِ
যদি আমি আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর হবে
বলে মনে না করতাম; তাহলে তাদেরকে
এশার সালাত রাতের এক তৃতীয়াংশ অথবা অর্ধরাত পর্যন্ত দেরি করে আদায়ের নির্দেশ
দিতাম।’’ তিরমিযী 167
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
১. আপনি শুধু ফজরের নামাজ
একটু অন্ধকার থাকতে পড়বেন। আর বাকী নামাজগুলো তার মুস্তাহাব সময়েই পড়তে পারেন।
এখানে আর পুরুষ-মহিলাদের আলাদা ভাবে বলা হয়নি।
২. হ্যাঁ, হবে।
৩. মহিলারা তো বাড়ীতে
জুম্মার পরিবর্তে জহরের নামাজ পড়বেন। তাই জুমার খুতবা চলাকালীন নফল নামাজ পড়তে তাদের জন্য মাকরূহ নয়।