بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
মিথ্যা বলা গুনাহের কাজ। কিন্তু আল্লাহ
ও তাঁর রাসুলের নামে মিথ্যা বলা সবচেয়ে বড় কবিরা গুনাহ সমূহের মধ্যে অন্যতম। এর শাস্তিও
ভয়াবহ। আল্লাহ তাআলাকে মিথ্যা আরোপকারীরা সবচেয়ে বড় জালেম বা অত্যাচারী। আল্লাহ তাআলা
বলেন-
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللَّهِ
كَذِباً
‘আর তার চেয়ে বড় জালিম আর কে যে আল্লাহর উপর মিথ্যা রটনা করে। (সুরা আনআম : আয়াত
২১)
যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে
তাদের পরিণতি কেমন হবে। তাদের ব্যাপারে কোরআনে পাকে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
وَ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ تَرَی الَّذِیۡنَ کَذَبُوۡا عَلَی
اللّٰهِ وُجُوۡهُهُمۡ مُّسۡوَدَّۃٌ ؕ اَلَیۡسَ فِیۡ جَهَنَّمَ مَثۡوًی
لِّلۡمُتَکَبِّرِیۡنَ
‘আর যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করে কেয়ামতের দিন তুমি তাদের চেহারাগুলো কালো
দেখতে পাবে। অহঙ্কারীদের বাসস্থান জাহান্নামের মধ্যে নয় কি?’
(সুরা যুমার : আয়াত ৬০)
এসব মিথ্যা আরোপকারীদের পরিণাম হবে
খুবই ভয়াবহ। তারা শুধু আল্লাহর আজাবের ভয়াবহতা দেখে এবং তাদের প্রতি আল্লাহর রাগ দেখেই
তাদের চেহারা কালো হয়ে যাবে।
রাসুলের প্রতি মিথ্যা
আরোপ
আর যারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথাকে বানিয়ে মিথ্যা বলে তাদের পরিণতিও খুবই ভয়াবহ। তারা সুস্পষ্ট
জাহান্নামি। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাদিয়াল্লাহু
আনহু বর্ণনা করেন, আমি আমার পিতা যুবাইরকে বললাম, আমি তো আপনাকে অমুক অমুকের মত আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস বর্ণনা করতে শুনি না। তিনি বললেন- ‘জেনে রাখ! আমি তাঁর
থেকে দূরে থাকিনি, কিন্তু আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, যে আমার উপর মিথ্যারোপ করবে;
সে যেন জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে
নেবে (এজন্য হাদিস বর্ণনা করি না)।’ (মুসলিম মুকাদ্দামা,
বুখারি)
যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসুল যা
হারাম করেননি তা হারাম করলো। আর যা হালাল করেননি তা হালাল বললো;
সে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি মিথ্যা
আরোপ করলো এবং কুফরি করলো।’ কুরআনুল কারিমে এটি না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এভাবে-
وَلا تَقُولُوا لِمَا تَصِفُ أَلْسِنَتُكُمُ الْكَذِبَ
هَذَا حَلالٌ وَهَذَا حَرَامٌ لِتَفْتَرُوا عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ إِنَّ
الَّذِينَ يَفْتَرُونَ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ لا يُفْلِحُونَ
‘আল্লাহর উপর মিথ্যা রটানোর জন্য তোমাদের জিহ্বা দ্বারা বানানো মিথ্যার উপর নির্ভর
করে (কথা) বলো না যে- এটা হালাল এবং এটা হারাম; নিশ্চয় যারা আল্লাহর উপর মিথ্যা রটায়,
তারা সফল হবে না।’ (সুরা আন-নাহল
: আয়াত ১১৬)
তাইতো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তাঁর হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে সতর্কতাঅবলম্বন করতে বলেছেন। না জেনে তাঁর
নামে হাদিস বর্ণনা করাও মিথ্যাচারের সমতুল্য। আর এর পরিণাম জাহান্নাম।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত,
আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি মিথ্যা
আরোপ না করা। না জেনে হালালকে হারাম না বলা এবং হারামকে হালাল না বলা। কেননা এসবই আল্লাহ
ও তাঁর রাসুলের নামে মিথ্যাচার।
***
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি
ভাই/বোন!
১. জেনে শুনে আল্লাহ ও তার রাসূল এবং কুরআনের বিরুদ্ধে
মিথ্যা বলা হারাম ও কবীরা গুনাহ এবং এর শাস্তি জাহান্নাম। যদি কেউ হালাল মনে করে মিথ্যাচার
করে তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে।
২. মৃত্যুর সময় যদি কোন মুসলমান সুস্পষ্ট কোন কুফরী না করে
তাহলে তার প্রতি সুধারণা পোষণ করত বলা যাবে যে, সে মুসলমান অবস্থায় ইন্তিকাল
করেছে। অনুরুপ যদি কেউ প্রকাশ্য কুফরীর উপর মারা যায় তাহলে তাকে বলা যাবে যে, সে অমুসলিম
অবস্থায় মারা গেছে। কেননা ইসলাম জাহের বা বাহ্যিক অবস্থার উপর হুকুম দেয়।