আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
191 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
১. স্বামী স্ত্রীর কথোপকথন নিন্মরূপঃ স্বামী বাইরে থেকে এসে মোবাইল দেখছে আর স্ত্রী স্বামীকে বলছে রান্নায় সহযোগীতা করতে।স্ত্রী অভিযোগ করছে যে তার ছোট বোনের স্বামী তার বোনকে রান্না করে খাওয়ায়,তুমি রান্না ঘড়েই যাও না।

স্বামী তার সামনে স্ত্রীর ছোট বোনের স্বামীর প্রসংশা শুনে রেগে গেল এবং বলল চলে যাও ওদের কাছে রান্না করে খাওয়াবে নে।

স্ত্রী বলল যাব নে,স্বামী বলল একেবারে চলে যাও রান্না করে খাওয়াবে তোমাকে।

এখানে কিন্তু স্বামীর তালাকের কোন নিয়ত করে নি,কথা কাটাকাটি তে বলেছে রাগ হয়ে।তালাকের উদ্দেশ্যে যদিও বলেনি,কিন্তু ছোট বোনের স্বামীর বাড়ীতে যে চলে যাওয়ার কথা বলেছে এতে কি কেনায়া হবে বা কোন সমস্যা হবে?

২. কেনায়া হলে নতুন বিবাহ কিভাবে পড়াতে হয়? স্বামী স্ত্রী নিজেরা মোহর ধার্য্য করে ইজাব কবুল বললে কি হবে?

দয়া করে উত্তর দিবেন।আমি এমনিতেই সন্দেহপ্রবন ব্যক্তি।অল্প কিছুতেই অয়াসওয়াসা আসে।এটাও কি কোন ওয়াসোয়াসা নাকি সত্যি কেনায়া বুঝতে পারছি না।

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/37078/?show=37078#q37078 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তালাক খুবই জঘন্য একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যেআল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক। (আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।)

এ ভয়ানক শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়।

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

*****প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই   

তালাক স্পষ্ট বাক্য দ্বারাও হতে পারে,আবার কেনায়া শব্দ,ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারাও হতে পারে। কেনায়া তালাক বলা হয় স্পষ্ট তালাক শব্দ না বলে বরং তালাকের ইঙ্গিতসূচক শব্দ বলে তালাক দেওয়া।

★★শরিয়তের পরিভাষায় প্রশ্নে উল্লেখিত জাতীয় শব্দে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷

সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,

وفي حالة الغضب يصدق في جميع ذلك لاحتمال الرد والسب إلا فيما يصلح للطلاق ولا يصلح للرد والشتم كقوله اعتدي واختاري وأمرك بيدك فإنه لا يصدق فيها كذا في الهداية...............  وفي الينابيع ألحق أبو يوسف - رحمه الله تعالى - بالخمسة ستة أخرى وهي الأربعة المتقدمة وزاد خالعتك والحقي بأهلك هكذا في غاية السروجي.

রাগের অবস্থাঃ- রাগের অবস্থায় স্বামী তালাকের নিয়তকে অস্বীকার করলে স্বামীর উক্ত বক্তব্য-কে সত্যায়ন করা হবে।কেননা সেই শব্দ সমূহে গালিগালাজ ও স্ত্রীর তালাকের আবেদন-কে  ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।

তবে যেই সমস্ত শব্দাবলীতে শুধুমাত্র তালাকের অর্থ বিদ্যমান রয়েছে। গালিগালাজ বা (স্ত্রীর তালাকের আবেদন) ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান না থাকে,তাহলে সেই সমস্ত শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকার-কে সত্যায়ন করা হবে না। বরং তালাক পতিত হবে।

যেমন- তুমি ইদ্দত গণনা করো,তুমি পছন্দ করো,তোমার বিষয় তোমার হাতে, ইত্যাদি।সুতরাং এমন শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকারকে সত্যায়ন করা যাবে না,বরং তালাক পতিত হবে।(হেদায়া) ইমাম আবু ইউসুফ রাহ পূর্ববর্তী পাঁচের সাথে আরো দুইটি শব্দ সংযোগ করেন,তখন সর্বমোট ছয়টি শব্দ হয়।সেই দুইটি হল,আমি তোমার সাথে খোলা করলাম,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হয়ে যাও। (গায়াতুস-সুরুজী) (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)

কেনায়া বাক্যের উদাহরণ অনেক রয়েছেঃ তোমাকে আমি ছেড়ে দিলাম,যা খুশি তাই করো,তুমি মুক্ত, তুমি খালি, তুমি স্বাধীন, তুমি ইদ্দত গণনা করো, তুমি পছন্দ করো, তোমার বিষয় তোমার হাতে, তুমি স্বামী খুজো, তুমি স্বামী তালাশ করো, তোমার রশি তোমার ঘাড়ে, তুমি তোমার পরিবারের সাথে যুক্ত হও, আমি তোমার পরিবারের কাছে তোমাকে দিয়ে দিলাম, আমি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম, তুমি আমার সামনে পর্দা করো, তুমি আমার সামনে খিমার পরিধান করো,চেহারা ঢাকো, ইত্যাদি ইত্যাদি।   আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/7162/

https://ifatwa.info/7406/

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১. প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে তালাকের নিয়ত না থাকলে তালাক হবে না।

২. তবে যদি তালাকের উদ্দেশ্যে উক্ত বাক্য বলে থাকে তাহলে তালাক হবে। আর এক তালাকে বায়েন পতিত হলে আবার নতুন করে মহর ধার্য করে দুজন স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়ে করতে হবে। নতুন করে বিবাহ পড়ানো ছাড়া সংসার করা যাবে না।  আরো জানুন: https://ifatwa.info/32807/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...