بسم
الله الرحمن
الرحيم
জবাবঃ-
https://ifatwa.info/5905/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তাওবা ও ইস্তিগফার মুমিন
জীবনের সার্বক্ষণিক ওযীফা।
আল্লাহ তাআলা তো বলেছেন,
قُلْ يَاعِبَادِي الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى
أَنْفُسِهِمْ لا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ
الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
“বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা
নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত
গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”।(সূরা যুমার
৫৩)
হাদীসে এসেছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিনে সত্তর থেকে
এক শতবার তাওবা-ইস্তিগফার করতেন। (সহীহ বুখারী,
হাদীস : ৬৩০৭;
সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৭০২)
রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম ইরশাদ করে-
التائب من الذنب كمن لا ذنب له
অর্থঃ গুনাহ থেকে তাওবাকারী ঐ ব্যক্তির
ন্যায় যার কোন গোনাহ নেই।–(সুনানে ইবনে মাজাহ,
হাদীস নং ৪২৫০)
খাঁটিভাবে তাওবা করলে আল্লাহ্ তাআলা
অতীতের ছোট বড় সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেন। তবে বান্দার কোন হক নষ্ট করে থাকলে তাওবার
পাশাপাশি তাকে তার হক তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া জরুরী।
তাওবা তিনটি জিনিসের সমন্বয়-
এক. পূর্বের গোনাহের জন্য লজ্জিত ও
অনুতপ্ত হওয়া। আর অপরের হক নষ্ট করলে তা তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া।
দুই. ভবিষ্যতে গোনাহ না করার ব্যাপারে
দৃঢ় সংকল্প করা।
তিন. আল্লাহ্ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা
করা।
আর ইস্তেগফার হল শুধু মৌখিকভাবে আল্লাহ্
তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা।
★তবে শুরুতে ২ রাকাত তাওবার
নফল নামাজ পড়ার পর তওবা করা উত্তম ও সুন্দর পদ্ধতি। এটাই বুযুর্গানে দ্বীনদের বাতলিয়ে দেওয়া আমল।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
জ্বী বাংলা ভাষাতেও তওবা ও ইস্তেগফার
করা যাবে। তবে কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত বাক্যসমূহ দ্বারা ইস্তেগফার ও তওবা করাকে উত্তম
বলা হয়। যেমন:
- أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা
করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।
- رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ أنْتَ
التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ
অর্থ : 'হে আমার প্রভু! আপনি
আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবাহ কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তাওবা কবুলকারী করুণাময়।'
- أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ
الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
অর্থ : 'আমি ওই আল্লাহর কাছে
ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছেই (তাওবাহ করে)
ফিরে আসি।'
- সাইয়েদুল ইসতেগফার
পড়া
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ
خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ
أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ
وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا
أَنْتَ
অর্থ : 'হে আল্লাহ! তুমিই আমার
প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই বান্দা আমি
যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল
থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নেয়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি।
আর আমার কৃত গোনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কারন তুমি ছাড়া
কেউ গোনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।'
নিয়ম : সকালে ও সন্ধ্যায় এ ইসতেগফার
করা। ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর এ ইসতেগফার পড়তে ভুল না করা। কেননা হাদিসে এসেছে- যে
ব্যক্তি এ ইসতেগফার সকালে পড়ে আর সন্ধ্যার আগে মারা যায় কিংবা সন্ধ্যায় পড়ে সকাল হওয়ার
আগে মারা যায়, তবে সে জান্নাতে যাবে।' (বুখারি-৬৩০৬)