আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
882 views
in সালাত(Prayer) by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ মুহতারাম,

নামাজরত ব্যক্তির সামনে দু বছরের বাচ্চা বসে থাকলে বা হাটা চলা করলে কি নামাজ ফাসেদ হয়ে যায়?

একটা ওড়না ঝুলিয়ে দিয়ে হেটে (সুতরা ধরে) নামাজরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে আসা যায় কি?

 বাচ্চারা নামাজে ডিস্টার্ব করলে তাদের কথার উত্তরে মাথা ঝাঁকালে (হ্যা বুঝালে)কি নামাজ ফাসেদ হয়ে যায়?

জাযাকাল্লাহ খইরন কাসীরন শায়খ

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
মুসাল্লির সামন দিয়ে কারো অতিক্রম করার সম্ভাবনা থাকলে ইমাম এবং মুনফারিদেরর(একাকী নামায আদায়কারী) জন্য সামনে সুতরা রেখে নামায পড়া মুস্তাহাব। হযরত আবু-সাঈদ খুদরী রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺳَﻌِﻴﺪٍ ﺍﻟْﺨُﺪْﺭِﻱِّ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﺇِﺫَﺍ ﺻَﻠَّﻰ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ، ﻓَﻠْﻴُﺼَﻞِّ ﺇِﻟَﻰ ﺳُﺘْﺮَﺓٍ ﻭَﻟْﻴَﺪْﻥُ ﻣِﻨْﻬَﺎ )
যখন তোমাদের মধ্য থেকে কেউ নামায পড়বে তখন সে যেন সামনে সুতরা রেখে নামায পড়ে এবং সুতরার নিকটবর্তী থাকে। (সুনানে আবু-দাউদ-৫৯৮)

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 
"আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় (২৪/১৭৭)" রয়েছে,
ﻳﺴﻦ ﻟﻠﻤﺼﻠﻲ ﺇﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻓﺬﺍ (ﻣﻨﻔﺮﺩﺍ)، ﺃﻭ ﺇﻣﺎﻣﺎ ﺃﻥ ﻳﺘﺨﺬ ﺃﻣﺎﻣﻪ ﺳﺘﺮﺓ ﺗﻤﻨﻊ ﺍﻟﻤﺮﻭﺭ ﺑﻴﻦ ﻳﺪﻳﻪ , ﻭﺗﻤﻜﻨﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﺨﺸﻮﻉ ﻓﻲ ﺃﻓﻌﺎﻝ ﺍﻟﺼﻼﺓ ؛ ﻭﺫﻟﻚ ﻟﻤﺎ ﻭﺭﺩ ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺳﻌﻴﺪ ﺍﻟﺨﺪﺭﻱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : (ﺇﺫﺍ ﺻﻠﻰ ﺃﺣﺪﻛﻢ ﻓﻠﻴﺼﻞ ﺇﻟﻰ ﺳﺘﺮﺓ , ﻭﻟﻴﺪﻥ ﻣﻨﻬﺎ , ﻭﻻ ﻳﺪﻉ ﺃﺣﺪﺍ ﻳﻤﺮ ﺑﻴﻦ ﻳﺪﻳﻪ ) ، ﻭﻟﻘﻮﻟﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ( ﻟﻴﺴﺘﺘﺮ ﺃﺣﺪﻛﻢ ﻓﻲ ﺻﻼﺗﻪ ﻭﻟﻮ ﺑﺴﻬﻢ) .ﺃﻣﺎ ﺍﻟﻤﺄﻣﻮﻡ ﻓﻼ ﻳﺴﺘﺤﺐ ﻟﻪ ﺍﺗﺨﺎﺫ ﺍﻟﺴﺘﺮﺓ ﺍﺗﻔﺎﻗﺎ ; ﻷﻥ ﺳﺘﺮﺓ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺳﺘﺮﺓ ﻟﻤﻦ ﺧﻠﻔﻪ , ﺃﻭ ﻷﻥ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺳﺘﺮﺓ ﻟﻪ " ﺍﻧﺘﻬﻰ 
ইমাম বা মুনফারিদের জন্য সমানে সুতরা রেখে নামায পড়া সুনা্নত(সুন্নাত মানে সুন্নাতে যায়েদা যার অর্থ মুস্তাহাব)।যাতে করে সুতরা মুসাল্লির সামনে অতিক্রম করা থেকে বাধা প্রদাণ করে।এবং যাতে করে মুসাল্লির নামাযে খুশু-খুজু তৈরী হয়।কেননা হযরত আবু-সাঈদ খুদরী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
'যখন তোমাদের মধ্য থেকে কেউ নামায পড়ে সে যেন সুতরা সামনে রেখে নামায পড়ে এবং সুতরার নিকটবর্তী থাকে।যাতেকরে তার সামন দিয়ে  অতিক্রম করার সুযোগ কেউ না পায়।এবং রাসূলুল্লাহ আরো বলেন,তোমাদের মধ্যে যারা নামায পড়বে তারা যেন সামনে সুতরা রাখে,চায় তীর দ্বারাই হোক না কেন।
মা'মুমের(ইমাম ব্যতীত অন্যান্য মুসাল্লি)জন্য সামনে সুতরা রাখার প্রয়োজন নেই।কেননা ইমামের সুতরা মা'মুমের জন্য যথেষ্ট।অর্থাৎ ইমাম পরবর্তী মা'মুমদের জন্য সুতরা হিসেবে যথেষ্ট। (আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় (২৪/১৭৭)

মারাক্বিল ফালাহ তে বর্ণিত রয়েছে-
إذا ظن مروره يستحب له أن يغرز سترةتكون طول ذراع فصاعدا في غلظ الإصبع والسنة أن يقرب منها,
যখন মুসাল্লি তার সামন দিয়ে মানুষ অতিক্রমের ধারণা করবে তখন তার জন্য মুস্তাহাব হল,সামনে একটি সুতরা রাখা।অর্থাৎ এক আঙ্গুল পরিমাণ প্রশস্ত এবং এক গজ পরিমাণ লম্বা একটি লাঠি, ইত্যাদি মাঠিতে ধাবিয়ে খাড়া করে রাখা মুসাল্লির জন্য মুস্তাহাব।সুন্নত হলো সুতরাকে নিকটবর্তী করে রাখা। (মারাক্বিল ফালাহ শরহে নুরুল ইযাহ-১/১৩৪)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত রয়েছে,
ولو مر مار في موضع سجوده لا تفسد وإن أثم وتكلموا في الموضع الذي يكره المرور فيه والأصح أنه موضع صلاته من قدمه إلى موضع سجوده. كذا في التبيين.
যদি কোনো অতিক্রমকারী মুসাল্লির সেজদার স্থান দিয়ে অতিক্রম করে তাহলে মুসাল্লির নামায ফাসিদ হবে না।যদিও অতিক্রমকারী গোনাহগার হবে।
মুসাল্লির সামনে কতটুকু দূর পর্যন্ত অতিক্রম করা মাকরুহ।সে সম্পর্কে মতবিরোধ থাকলেও বিশুদ্ধ মাযহাব হলো, মুসাল্লির পা থেকে নিয়ে সেজদার স্থান পর্যন্ত জায়গা দিয়ে অতিক্রম করা মাকরুহ।(এটা বড় মসজিদের ক্ষেত্রে অর্থাৎ যে মসজিদে চল্লিশজনের বেশী মুসাল্লির ধারণক্ষমতা রয়েছে।অন্যথায় ছোট মসজিদের ক্ষেত্রে মুসল্লির থেকে নিয়ে কিবলার দিকে দেয়ার পর্যন্ত মাকরুহ হবে) (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১০৪)

والجمع بين الإشارة والتسبيح يكره والإشارة بالرأس أو العين أو غيرهما كذا في الكافي.
(কেউ মুসাল্লির সামন দিয়ে অতিক্রম করলে মুসাল্লি তাকে ইশারা বা তাসবীহের মাধ্যমে সতর্ক করবেন।)
তবে ইশারা এবং তাসবীহ উভয়কে একত্র করা মাকরুহ।ঠিক তেমনিভাবে মাথা দ্বারা ইশারা করা,চক্ষু দ্বারা ইশারা করা,অথবা অন্যান্য অঙ্গ দ্বারা ইশারা করা মাকরুহ। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৪০)


মুসল্লির সামনে নিজ পক্ষ থেকে সুতরা রেখে সামন দিয়ে অতিক্রম করা কি যাবে? ইবনে আবেদীন শামী রাহ, বলেন, এসম্পর্কে আমি স্পষ্ট কোথাও কিছু পাইনি,
عصا نمازی کے سامنے رکھتے ہوئے آگے سے گذر جانے کے بارے میں علامہ شامی فرماتے ہیں کہ ہمیں اس کا حکم صراحةً نہیں ملا۔
قال: وإذا کان معہ عصا لاتقف علی الأرض بنفسہا فأمسکہا بیدہ ومر من من خلفہا؛ ہل یکفي ذالک؟ لم أرہ (الدر مع الرد: 1/401) ۔
مفتی رشید احمد صاحب لدھیانی فرماتے ہیں بہ ظاہر اس کے جواز میں کوئی مانع نہیں ہے، لہٰذا بوقت ضرورت اس کی گنجائش ہے۔
فتوی نمبر : 401-313/D=06/1442
دارالافتاء،
دارالعلوم دیوبند

মুফতি রাশিদ আহমদ লুদিয়ানবী রাহ বলেন, সাধারণত এর বৈধতায় কোনো বৈরিতা নেই। সুতরাং জরুরতে এমনটা করা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...