আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
283 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (10 points)
আসসালামু আলাইকুম।

হুজুর,
মানসিক সমস্যার চুড়ান্ত পর্যায় আছি। আমার মনে হয় না ওয়াসওয়াসা কারো উপর এতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তালাক নিয়ে এমন ওয়াসওয়াসায় কেউ পড়েছে বলে আমার মনে হয় না । এমন ভাবে চলতে থাকে মনে হয় আমার বেচে থাকা পচিবল হবে না সারাদিন বুকের ভিতর ব্যাথা করতে থাকে তালাক নিয়ে কিছু চিন্তা করলে। এর আগে আপনাদের কাছে অনেক প্রশ্ন করেছি। আপনারা উওর করেছেন। তারপরেও কেন জানি একটার পর একটা প্রশ্ন মাথায় আসতেই আছে। এবং প্রতিনিয়ত ভয় হচ্ছে আমি কি যেনা করছি? আমি চিন্তা করতে করতে ক্লান্ত। আমাকে একটু সলিশন দেন হুজুর। আমি কি সুইসাইড করবো? এর থেকে এটাই ভালো।  ওয়াইফ এর সাথে যে কোন কথা বললেই মনে মনে বলছি তালাক দিলাম!  এ কোন ঝামেলায় আমি পড়লাম।

★রাতে ঘুমালে যখন হালকা ঘুম বা ঘুম ভাংগার মত হয় তখনি মনে হচ্ছে তালাক দিলাম উচ্চারণ করে ফেলছি। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি মনে হয়। এতে কি তালাক হবে হুজুর?

★★খুব কষ্ট করে মুখ কন্টোল করছি। মনে হচ্ছে উচ্চারন করে ফেলবো। আবার কখন ও মনে হচ্ছে উচ্চারন করলাম। জিব্বা নাড়াতেই ভয় হচ্ছে। নিজেকে খুব অপরাধি মনে হচ্ছে। কেনায়া শব্দ নিয়ে খুব চিন্তিত আছি। না জানি কখন কেনায়া শব্দ বলে ফেলি আর মনে তালাক দিলাম চলে আসুক আর ওয়াইফ তালাক হয়ে যাক।আপনাদের কাছে প্রশ্ন করার জন্য তালাক শব্দ লিখলে মনে মনে  বলছি তালাক দিয়ে দিলাম। মনে হচ্ছে নিজের কোন খতি করে  ফেলি।পানি খাওয়ার জন্য হা করছি মনের ভিতর হচ্ছে "তালাক"। আমি বুঝতে পারছি না এটা মনের ভিতর হচ্ছে না মুখে। এভাবে আমি মারা যাব।
আমি স্বাভাবিক থাকা অবস্থায় চাইনা তালাক দিতে। মাঝে মাঝে আমার নিজের নিয়ত নিয়ে ও সন্দেহ হয়।
আমি আপনাদের হয়তো বুঝাতে পারছি না হুজুর। আমার অবস্থা কি!  গত কিছু দিন এসব ভেবে আমার শরীল অনেক খারাপ হয়ে গেছে। শুধু ভয় হয় আল্লাহ মনে হয় আমার যেনাকারি করে তুলবে!

##আশা করি বিস্তারিত বলবেন। আমার কি করা উচিত। কিভাবে আমি স্বাভাবিক জিবনে ফিরে আসবো। শুধু হ্যা বা না বলে উওর দিবেন না প্লিজ। আল্লাহ আপনার উওম প্রতিদান দিবেন ইনসা-আল্লাহ ##

1 Answer

0 votes
by (560,580 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


রাসূল সাঃ আত্মহত্যা করার ভয়াবহ শাস্তির কথা উল্লেখ করে ইরশাদ করেছেন-

عَنْ أبي هريرة , عَن النبي – صلى الله عليه وسلم – قال : من تردى من جبل , فقتل نفسه , فهو في نار جهنم يتردى فيها خالدا مخلدا فيها أبدا , ومن تحسى سما , فقتل نفسه , فسمه في يده يتحساه في نار جهنم خالدا مخلدا فيها أبدا , ومن قتل نفسه بحديدة , ثم انقطع علي شيء , يعني خالدا , كانت حديدته في يده يجأ بها في بطنه في نار جهنم خالدا مخلدا فيها أبدا

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তি পাহাড়ের উপর থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে, সে জাহান্নামের আগুনে পুড়বে, চিরদিন সে জাহান্নামের মধ্যে অনুরূপভাবে লাফিয়ে পড়তে থাকবে। যে ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করবে, তার বিষ জাহান্নামের আগুনের মধ্যে তার হাতে থাকবে, চিরকাল সে জাহান্নামের মধ্যে তা পান করতে থাকবে, যে ব্যক্তি লোহার আঘাতে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামের মধ্যে লোহা তার হাতে থাকবে, চিরকাল সে তার দ্বারা নিজের পেটে আঘাত করতে থাকবে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৪৪২, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-১৯৬৪}

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আত্মহত্যা এটি কোনো সমাধানের বিষয় নয়।
এর জন্য নিজের দুনিয়াবী জীবন ও  আখেরাতের অনন্তকালর জীবনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিবেননা।
এর আখেরাতে চিরস্থায়ী জাহান্নামে যেতে হবে।

কেহ যদি দুনিয়ায় যেনা করে,সেও তো তওবা করলে মাফ পাবে।
কিন্তু আত্মহত্যা করলে চিরস্থায়ী জাহান্নাম।
সুতরাং এটি কোনোভাবেই বুদ্ধিমান ব্যাক্তির কাজ হতেই পারেনা।
,
অহেতুক পেরেশানী করে নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না। আপনি কিছুদিন বাহিরে থাকুন।
তাবলিগে গিয়ে ৪০ দিন সময় লাগান,চিল্লায় চলে যান, মনের তীব্র কনফিউশন থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিন। 

প্রশ্নে উল্লেখিত কোনো ছুরতেই আপনার বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো ধরণের ক্ষতি হবে না। 
তালাক হবেনা।
আপনি সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত থাকুন। 
,
আপনি তালাক নিয়ে যতই চিন্তা করুন না কেন, কিংবা মনে মনে কথা বলুন না কেন, কিংবা মনে মনে যতই উল্লেখিত শর্ত আওড়ান না কেন, কিংবা নিয়ত ও সংকল্প করুন না কেন– যতক্ষণ পর্যন্ত মুখে উচ্চারণের বিষয়টি পরিপূর্ণ নিশ্চিত হবেন না ততক্ষণ পর্যন্ত তালাক হবে না।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ تَجَاوَزَ لأُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ وَحَدَّثَتْ بِهِ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ بِهِ

‘নিশ্চয় আল্লাহ্ তাআলা আমার উম্মতের ওয়াসওয়াসা, মনে মনে কথা বলা ক্ষমা করে দিয়েছেন; যতক্ষণ না সে কর্ম করে কিংবা কথা বলে।’ (সহিহ বুখারী ৬৬৬৪ সহিহ মুসলিম ১২৭)

★আপনি তালাক সংক্রান্ত কোন মাসআলা পড়বেন না। কাউকে জিজ্ঞাসা করতেও যাবেন না। কারো সাথে এ সংক্রান্ত আলাপ ও আলোচনাও করবেন না। 

পরামর্শ থাকবে, আপনি এই ফতোয়া বিভাগ সহ কোনো ফতোয়া বিভাগেই তালাক সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন করবেননা।
,
মনের মাঝে এ বিষয়ক কোন কিছু আসতে দিবেন না। আসলেই অন্য বিষয় নিয়ে মগ্ন হয়ে যাবেন, প্রসঙ্গ পাল্টে ফেলবেন। ইবনে হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,
له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان
‘ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)

★সকাল ও সন্ধ্যায় পড়ুন-

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ

 (আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমার আশ্রয় প্রার্থনা করি তার অসম্ভষ্টি ও শাস্তি থেকে এবং তার বান্দার অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে ও শয়তানের সংস্পর্শ থেকে।)

★ফজর ও মাগরিবের পর এবং ঘুমানোর আগে সূরা ফালাক ও নাস পড়ুন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...