আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
189 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (18 points)
edited by
হুজুর আমার এক ভাতিজির প্রশ্ন গুলো আমি হুবহু লিখছি।
হুজুর আমি জানি যে তালাকের মজলিশে স্ত্রী তালাক চাইলে স্বামী যদি তখন কেনায়া শব্দ বলে তাহলে তালাক হয়ে যায়। আর তালাকের মজলিস হওয়ার শর্ত স্বামী স্ত্রী এক জায়গায় সামনা সামনি থাকতে হবে।
মোবাইলে তালাকের মজলিস  হয়না।
১.সুতরাং মোবাইলে ঝগড়ার  সময় স্ত্রী যদি বলে আমাকে ছেড়ে দাও। আর স্বামী যদি তাৎক্ষণাৎ বলে ওই তুই যা তালাকের নিয়ত ছাড়া বলে কিংবা কোনো কেনায়া শব্দ তালাকের নিয়ত ছাড়া বলে তাহলে কি তালাক হয়ে যাবে? মোবাইলেতো তালাকের মজলিস হয়না।
২. স্ত্রী যদি  সামনা সামনি বলে আমাকে ছেড়ে দাও আমার স্বামী যদি বলে তোমাকে ছেড়েই দিবো তুমি যাও তালাকের নিয়ত ছাড়া । আগে ছেড়ে দিবো বলার পরে তুমি যাও বললে  কি তালাক হবে?এমন ঘটেছে কিনা মনে নেই সন্দেহ থেকে জিজ্ঞেস করা।
৩, একদিন স্ত্রী ঝগড়া করে স্বামীর সাথে বিছানায় না থেকে ফ্লোর এ ঘুমিয়েছে। স্বামী তাকে বিছানায় নেয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু স্ত্রী যায়নি। এই ঘটনা কেনো ঘটেছিলো  কিছুই মনে নেই। কোনো তালাক জাতীয় শব্দ বা কেনায়া শব্দ হয়েছে  কিনা তাও মনে নেই। স্ত্রী রাগ করে আলাদা ঘুমালে  কি তালাক হয়ে যায়?
৪. মহিলা মানুষের ককথার মাধ্যমে কি ঈলা হয়?
৫. মহিলা যদি বলে ওই কাজটা না করা পর্যন্ত তোমাকে আমার কাছে আসতে দিবোনা মানে সহবাস করতে দিবোনা আল্লাহর কসম বলেছে  কিনা মনে নেই স্বামীও জোর করেনি, স্বামী কোনোদিনই এসব ব্যাপারে জোর করেনা মহিলা  তখন প্রেগনেন্ট ছিলো তাই আরো জোর করেনি এটা কি ঈলা? মহিলা পরে স্বামী ওই কাজ করার পর বা আগে তার স্বামীকে কাছে যেতে দিয়েছিলো। কিন্তু কোনো তালাকের কথা বা তালাকের নিয়তে মহিলা এমন কথা বলেনি।
৬. মোবাইলে স্বামী তালাকের নিয়ত ছাড়া কেনেয়া বাক্য বল্লে কি তালাক হবে?
৭.তালাকের ব্যাপারে আগের কথা মনে করতে না পারলে কি গুনাহগার হবে?
৮.একদিন স্বামী স্ত্রীকে মোবাইলে বলে আরেকদিন ঝগড়া করলে একেবারে বিদায়। তালাকের কোনো নিয়ত ছিলোনা। এটা কি তালাক হবে?

মারাত্মক ওয়াসওয়াসা গ্রস্ত মহিলা। বার বার তালাকের বিষয় গুলো নিয়ে মনের মধ্যে ওয়াসওয়াসা আসে। এই ক্ষেত্রে কি করবে  সে?

1 Answer

0 votes
by (583,410 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
মুযাকারায়ে তালাক বা তালাকের আলোচনা
وَفِي حَالَةِ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ يَقَعُ الطَّلَاقُ فِي سَائِرِ الْأَقْسَامِ قَضَاءً إلَّا فِيمَا يَصْلُحُ جَوَابًا وَرَدَّا فَإِنَّهُ لَا يُجْعَلُ طَلَاقًا كَذَا فِي الْكَافِي
তালাকের আলোচনার পরিস্থিতিতে সকল প্রকার কেনায়া তালাকে তালাক পতিত হবে।তবে যে শব্দগুলো তালাকের আবেদনের জবাব এবং রদ উভয়টা বুঝাবে,সে শব্দুগুলো দ্বারা তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)

প্রশ্ন জাগে,মুযাকারায়ে তালাক কাকে বলে?
এ বিষয়ে রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত রয়েছে,
"(قَوْلُهُ: وَهِيَ حَالَةُ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ) أَشَارَ بِهِ إلَى مَا فِي النَّهْرِ مِنْ أَنَّ دَلَالَةَ الْحَالِ تَعُمُّ دَلَالَةَ الْمَقَالِ قَالَ: وَعَلَى هَذَا فَتُفَسَّرُ الْمُذَاكَرَةُ بِسُؤَالِ الطَّلَاقِ أَوْ تَقْدِيمِ الْإِيقَاعِ كَمَا فِي اعْتَدِّي ثَلَاثًا وَقَالَ قَبْلَهُ الْمُذَاكَرَةُ أَنْ تَسْأَلَهُ هِيَ أَوْ أَجْنَبِيٌّ الطَّلَاقَ".
( كتاب الطلاق، بَابُ الْكِنَايَاتِ، ٣ / ٢٩٧)
মুযাকারায়ে তালাকের অর্থ হল, স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন করা ,অথবা তৃতীয় কোনো ব্যক্তির পক্ষ থেকে স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন এবং তামান্না করা। এই উভয় প্রকারকে 'মুতালাবায়ে তালাক' নামে অভিহিত করা হয়।তাছাড়া স্বামী যদি ইতিপূর্বে স্ত্রীকে এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকে,তাহলে এদ্বারাও মুযাকারায়ে তালাক প্রমাণিত হবে।এই তৃতীয় প্রকারকে  তাকদীমূল ঈ'কা বলা হয়ে থাকে।(রদ্দুল মুহতার-৩/২৯৭) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1049

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
তালাকের মজলিস বলতে মুযাকারায়ে তালাক, মুযাকারায়ে তালাক হয়ে গেলে তালাক হয়ে যাবে।

(১) মোবাইলে ঝগড়ার সময় স্ত্রী যদি বলে আমাকে ছেড়ে দাও। আর স্বামী যদি তাৎক্ষণাৎ বলে 'ওই তুই যা' তালাকের নিয়ত ছাড়া বললেও তালাক হয়ে যাবে।

(২)স্ত্রী যদি  সামনা সামনি বলে আমাকে ছেড়ে দাও আমার স্বামী যদি বলে 'তোমাকে ছেড়েই দিবো তুমি যাও' তালাকের নিয়ত ছাড়া । আগে ছেড়ে দিবো বলার পরে তুমি যাও বলার দ্বারা যদি স্বামীর নিয়ত থাকে,এখন যাও,তাহলে তালাক হবে না।  

(৩)একদিন স্ত্রী ঝগড়া করে স্বামীর সাথে বিছানায় না থেকে ফ্লোর এ ঘুমিয়েছে। স্বামী তাকে বিছানায় নেয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু স্ত্রী যায়নি।  স্ত্রী রাগ করে আলাদা ঘুমালে  কি তালাক হবে না।

(৪) মহিলা মানুষের কথার মাধ্যমে ঈলা হয় না।

(৫) মহিলা যদি বলে ওই কাজটা না করা পর্যন্ত তোমাকে আমার কাছে আসতে দিবোনা মানে সহবাস করতে দিবোনা, এদ্বারা ইলা হবে না।

(৬) মোবাইলে স্বামী তালাকের নিয়ত ছাড়া কেনায়া বাক্য বল্লে তালাক হবে না।

(৭)তালাকের ব্যাপারে আগের কথা মনে করতে না পারলে গুনাহগার হবে না।

(৮)একদিন স্বামী স্ত্রীকে মোবাইলে বলে আরেকদিন ঝগড়া করলে একেবারে বিদায়। তালাকের কোনো নিয়ত ছিলোনা। এতেো তালাক হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...