আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
191 views
in পবিত্রতা (Purity) by (27 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারা কাতুহু শাইখ,
১।আমি নামাজের জন্য তিনটা কাপড় ট্যাপের প্রবাহিত পানিতে ধুই।কিন্তু পানি নিংড়ানোর সময় একটা সমস্যা দেখা যায়।আমি যতই পানি নিংড়ানোর চেষ্টা করি ততই পানি বের হয়।এভাবে এক পর্যায়ে হাতের চামড়া উঠে যায়।পুরোপুরি তো কাপড় থেকে পানি নিংরানো এভাবে সম্ভব নয়। কারণ যতবারই নিংড়ানোর চেষ্টা করি ততবারই পানি পড়ে। কাপড়ের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ এভাবে নিয়ে নিংড়ালে অনেক সময়ের প্রয়োজন আবার পুরোপুরি পানি যায় না।এক্ষেত্রে কি করব?

২।আমি উপরিউক্ত নিয়মে যে কাপড় ধুয়েছি সেই কাপড় দিয়েই নামাজ পড়ছি।হাতের চামড়া উঠে যাওয়ার কারণে আমি ঠিকমতো কাপড় চিপতে পারছিলাম না।তাই ঐ অবস্আথায় রেখে দিই।আমি শিওর যদি আরো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ নিয়ে পানি নিংড়ানোর চেষ্টা করতাম তাহলে পানি পড়ত। মনে আছে পায়জামার বেল্ট থেকে পুরোপুরি পানি নিংড়ানো যায় নি।আমি চেষ্টা করেছি।যতই পানি নিংড়াতে চাই ততই পানি বের হয়।এখন কি আমার এই নামাজ গুলো হবে?
৩।কাপড় ধেয়ার পর যদি দেখা যায় যে পানি পড়ছে না কিন্তু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ নিয়ে জোরে চিপলে পানি বের হয়-এ ধরনের কাপড়কে কি পাক ধরব নাকি নাপাক ধরব?

৪।বাথরুমে যদি নাপাক পা বা হাত ধুই তাহলে কি পুরো বাথরুমই ৩ বার ধুতে হবে?

৫।বাথরুমে ট্যাপ জোরে ছেড়ে দিয়ে কিছুক্ষণ রাখলে কি বাথরুম পাক হবে? (প্রবাহিত পানি হিসেবে)

৬।আমাদের বাড়িতে পাক নাপাক নিয়ে কেউ সচেতন না।কাপড় সবসময়ই দুইবার ধোয়া হয়,তিনবার নয়।এখন এই কাপড়গুলো তো সবাই পড়ে।বাথরুমে কাপড় ধৌত করলেও ইসলামি বিধান অনুযায়ী কাপড় ধৌত করে না।সেই কাপড় থেকে যে পানি বাথরুমের মেঝেতে পড়ে সেই পানির উপর পা দিয়ে তো সবাই ঘরে হাটাচলা করে।এভাবে তো মনে হয় পুরো বাড়িই নাপাক।মগ,বালতি সব।এখন নামাজের জন্য যদি কাপড় আর জায়নামাজ পাক থাকে তাহলে কি নামাজ হবে?

৭।নামাজের সাথে সরাসরি বাড়ির অন্য জিনিস ব্যবহৃত না হলেও ভেজা হতে বাথরুমের ছিটকিনি ধরা লাগে।সেই হাতে আবার কাপড় ধরলে তো কাপড় নাপাক হবে।আবার বাথরুমে ওযুর পর পা ধুইলে তো জায়নামাজ পর্যন্ত হেটে আসা লাগবে।এভাবে তো পা নাপাক হবে,জায়নামাজ নাপাক হবে।যেহেতু মেঝে সবসময়ই নাপাক।এখন এ বিষয়ে কি করবো?

পাক নাপাক নিয়ে চিন্তিত।দয়া করে সাহায্য করুন।আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিক। আমিন।
by (1 point)
প্রশ্নকারীকে পরামর্শ হল, আপনি দ্রুত ভাল কোন সাইকিয়াট্রিস্ট এর শরাণাপন্ন হোন। ওয়াসওয়াসা একটি মানসিক রোগ, যাকে মেডিক্যালের ভাষায় ওবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসওর্ডার(OCD) বলে।
অনেক দিনের শয়তানি ওয়াসওয়াসা মানসিক রোগে পরিণত হয়। ইনশাআল্লাহ এ রোগ মেডিসিন ও কাউন্সিলিং এ ভাল হয়, সাথে আল্লাহর কাছেও এ রোগ মুক্তির জন্য দোয়া করতে হয়।

1 Answer

0 votes
by (676,360 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


হাদিস শরিফে এসেছে,আসমা রাযি. থেকে বর্ণিত,

 أَنَّ النَّبِيَّ  ﷺ قَالَ -فِي دَمِ الْحَيْضِ يُصِيبُ الثَّوْبَ-: «تَحُتُّهُ، ثُمَّ تَقْرُصُهُ بِالْمَاءِ، ثُمَّ تَنْضَحُهُ، ثُمَّ تُصَلِّي فِيهِ

হায়িযের রক্ত কাপড়ে লেগে যাওয়া প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘পানি দিয়ে ঘষা দিবে তারপর পানি দ্বারা ভালোভাবে ধৌত করবে। অতঃপর সলাত আদায় করবে।’ (বুখারী ২২৭,৩০৭)

শরীয়তের বিধান হলো কাপড়ে/ চাদরে নাপাকি লাগলে তিনবার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং প্রত্যেকবার ভালো করে চাপ দিয়ে নিংড়াতে হবে। ভালো করে নিংড়িয়ে ধোয়ার পরও যদি দুর্গন্ধ থেকে যায় কিংবা দাগ থাকে তাতে কোনো দোষ নেই। এতেই চাদর কিংবা কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে।  (হাশিয়ায়ে তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃষ্ঠা নং ১৬১, বেহেশতি জিওর ২/৭৭ )

কাপড়ে অদৃশ্যমান নাজাসত লাগলে, কাপড়কে তিনবার ধৌত করে তিনবারই নিংড়াতে হতে।এবং শেষ বার একটু শক্তভাবে নিংড়ানো হবে যাতে করে পরবর্তীতে আর কোনো পানি বাহির না হয়।(ফাতাওয়ায়ে হাক্কানিয়া;২/৫৭৪,জা'মেউল ফাতাওয়া;৫/১৬৭) 

আরো জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/118

وغير المرئية بغسلهاثلاثا والعصر كل مرة
অদৃশ্যমান নাপাক বস্তু তিন বার ধৌত করতে হবে।এবং প্রত্যেকবার নিংড়াতে হবে।
(নুরুল ইযাহ ৫৬)

উল্লেখ্য, তিনবারের কথা বলা হয়, যাতে সন্দেহ না থাকে। অন্যথায় যদি প্রবাহমান পানি যেমন, নদী, পুকুরে বা টেপের পানিতে এত বেশি করে ধোয়া হয়, যাতে নাপাকি দূর হওয়ার ব্যাপারে প্রবল ধারণা হয়ে যায় তাহলে তা পাক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তিনবার নিংড়িয়ে ধোয়া জরুরি নয়। (রদ্দুল মুহতার ১/৩৩৩ আলবাহরুর রায়েক ১/২৩৭ শরহুল মুনইয়া ১৮৩) 
,
আরো জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
এতো কষ্টের প্রয়োজন নেই।
আপনি সাধ্যমতো নিংড়ানোর চেষ্টা করবেন।
এভাবে হাতের চামড়া উঠে যাওয়া পর্যায়ে যাওয়া ঠিক হয়নি।

আপনি টেপের পানিতে এত বেশি করে ধুবেন , যাতে নাপাকি দূর হওয়ার ব্যাপারে প্রবল ধারণা হয়ে যায়,তারপর শক্তভাবে সাধ্যের মধ্যে থেকে নিংড়াবেন। 
এতেই তাহা পাক হয়ে যাবে।

(০২)
যদি টেপের পানিতে এত বেশি করে ধুয়ে থাকেন , যে নাপাকি দূর হওয়ার ব্যাপারে প্রবল ধারণা হয়ে যায়,সেক্ষেত্রে প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার নামাজ গুলি হয়ে যাবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا مُوسَى، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، قَالَ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مَيْمُونٍ، قَالَ سَأَلْتُ سُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ فِي الثَّوْبِ تُصِيبُهُ الْجَنَابَةُ قَالَ قَالَتْ عَائِشَةُ كُنْتُ أَغْسِلُهُ مِنْ ثَوْبِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، ثُمَّ يَخْرُجُ إِلَى الصَّلاَةِ وَأَثَرُ الْغَسْلِ فِيهِ بُقَعُ الْمَاءِ.

‘আমর ইবনু মায়মূন (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কাপড়ে জানাবাতের অপবিত্রতা লাগা সম্পর্কে আমি সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ ‘আয়িশাহ (রাযি.) বলেছেনঃ আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাপড় হতে তা ধুয়ে ফেলতাম। অতঃপর তিনি সালাতে বেরিয়ে যেতেন আর তাতে পানি দিয়ে ধোয়ার চিহ্ন অবশিষ্ট থাকত। (বুখারী শরীফ ২৩১. ২২৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৩১)

(০৩)
যদি টেপের পানিতে এত বেশি করে ধুয়ে থাকেন , যে নাপাকি দূর হওয়ার ব্যাপারে প্রবল ধারণা হয়ে যায়,সেক্ষেত্রে প্রশ্নের বিবরণ মতে এক্ষেত্রে সেটিকে পাক ধরবেন।

(০৪)
এক বার ধুয়ে দিলেই যথেষ্ট হবে।

(০৫)
হ্যাঁ, নাপাক লাগা সব স্থানে পানি পৌছে গেলে বাথরুম পাক হয়ে যাবে।

(০৬)
হ্যাঁ, নামাজ হবে।

(০৭)
বাথরুমের ছিটকিনি তে নাপাকি লেগে থাকলে তাহা ধুয়ে আপনি ছিটকিনি ধরবেন,তাহলে আর কোনো সমস্যা হবেনা।

বাসার সব ফ্লোর নাপাক থাকলে ফ্লোর শুকনো হলে আপনি বাথরুমে পা ধুয়ে পা মুছে আপনি সেই ফ্লোরে হেটে জায়নামাজে আসবেন, তাতে কোনো সমস্যা হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 106 views
0 votes
1 answer 217 views
...