আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
207 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আমার আম্মু যখন জীবিত ছিল তখন একটা মেয়ের(নীলার) সাথে আমার পরিচয় হয়। আমি আমার আম্মু কে বলি। আম্মু আব্বুর সাথে কথা বলে নীলার আম্মুর সাথে কথা বলে। তারপর আমার আব্বু আম্মু আর নীলার আম্মুর সম্মতিতে আমাদের বিয়ে হয় একটা মসজিদে। কারণ তখন ওর বয়স ১৮ হয়নি। উল্লেখ্য নীলা মাদরাসায় পড়াশোনা করতো।।

বিয়ের পর আমরা স্বামী-স্ত্রীর মতোই ছিলাম। সব কিছুই ঠিক ছিলো।আমরা একে অপরের জন্য খুবই পাগল ছিলাম।।

নীলার বয়স ১৮ হওয়ার আগেই আম্মু মারা যায়। আর আমার অবস্থা ও একটু খারাপ হয়ে যায়। ২০২০ সালের বিবিএ শেষ করছি ২০২২ সালে। তাই চাকরির ব্যবস্থা ও করতে পারিনি।।কিন্তু আমি ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে ৩০০০০/৩৫০০০ টাকা ইনকাম করি। আর নীলা একটা মাদরাসায় জব করে। আমি ঢাকা থাকি ও গ্রামে মাদরাসায় জব করে। আমি এবং আমার আব্বু বেশ কয়েকবার নীলার আব্বু কে বলি যে এখন তো নীলার পড়াশোনা শেষ তাহলে আমাদের বিয়ে টা রেজিস্ট্রার করা দরকার। তখন নীলার আব্বু বলে আমাদের জমি নিয়ে ঝামেলা আছে, ঝামেলা শেষ হলো তোমাদের বাসায় এসে দিন তারিখ ঠিক করবো। তাই আমরাও অপেক্ষা করতে ছিলাম।

নীলা গত কুরবানির ঈদে বাসায় আসে। বাসায় আসার আগে আমাকে বারবার বলতে ছিলো যে আমার খুব মাথা ব্যাথা। আপনার সাথে দেখা করা দরকার। কিন্তু আমি খুবই অসুস্থ ছিলাম তাই আর যেতে পারিনি। পরে ঈদের মধ্যে যাবো, তখন ওর আম্মু বললো। তোমাদের বিয়ের কথা তো আমরা ছাড়া কেউ জানে না। তাহলে তুমি এখন এসো না। কয়েকদিন পর আসো। এখন বাসায় অনেক মেহমান আছে। তাই আর যাওয়া হয়নি। ঈদ শেষ হলো কিন্তু হটাৎ করে দেখি নীলা আমার কথা শুনছে না। সব কেমন জানি উল্টো পাল্টা কাজ করতেছে। তাই নীলার সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয় জুলাইয়ের ১৭ তারিখ রাতে। তারপর সবাই আমাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। আমি নীলার মাদরাসায় ফোন করলেও ধরে না। আমার আব্বু কে বলে ফোন করালাম, নীলার আম্মু বললো, যে আমরা আপনাদের বাসায় আসবো। কিছু ঝামেলা আছে ঠিক করে নেই। তখন আমার আব্বু বলে নীলা কথা বলে না কেন? বলে নীলার সাথে আপনার ছেলে রাগারাগি করছে তাই কথা বলে না। কথা বলবে সমস্যা নাই। কিন্তু নীলা কে আমি আর ফোনে পাচ্ছিলাম না। হটাৎ করেই নীলার এক আন্টি ফোন করে আমাকে বলে যে, নীলা কে তো পরিবর্তন করে ফেলছে, নীলার মন থেকে তোমাকে মুছে ফেলছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম এটা কিভাবে সম্ভব??  বলে কয়েকদিন আগে একজন ফকির এনেছিল, সেই ফকির দিয়ে কুফরি করছে। আরও অনেক কিছু করছে। এসব কথা শুনে আমি তো বাকশক্তিহীন হয়ে পরলাম।। তখন আমার মনে হলো যে নীলা আমার সাথে উল্টো পাল্টা শুরু করছিলো ১৫ জুলাই থেকে আর আমি ১৪ জুলাই থেকে আমার রুমে, আমার খাটে, আমার শরীরে বালু লেগে থাকতে দেখি। আর আমার রুম যেখানে সেখানে তো বালু আসার কথা নয়। তাহলে কি তারা সত্যি কোনো ফকির দিয়ে কিছু করছে!! এটা জানার জন্য আমি কয়েকজন হুজুরের সাথে কথা বললাম, সবাই বলছে নীলা কে কুফরি করছে, আপনার সকল কিছু ভুলিয়ে ফেলতে। খাবারের সাথে নীলা কে বেশ কিছু খাওয়ানো হইছে।। তাই এমনটা হইছে। আর আপনার ও কিছু ক্ষতি করছে, এবং এসব করতে তারা জ্বীনের সাহায্য ও নিয়েছে। আপনাদের ঝগড়া লাগানো হয়েছিল।

আমি রুকাইয়া করলাম। কিন্তু ফলাফল পেলাম না। নীলা কে আর ঠিক করতে পারলাম না। তাই আব্বু কে ওদের বাসায় পাঠালাম। আব্বু কে ওর আব্বু আম্মু বলছে যে, আপনার ছেলের সাথে নীলা কে দিবো না। নীলা কে মামাতো ভাই ভাইয়ের সাথে বিয়ে দিবো। তখন আব্বু বলছে ওদের বিয়ে হইছে ঘর সংসার হইছে। তালাক হয়নি। তাহলে অন্য জায়গায় কেমনে বিয়ে দিতে চান?? তারা বলে যে বিয়ে হইছে হুজুরের মাধ্যমে মসজিদে। এর কোনো প্রমাণ নাই। আমরা আর আপনারা ছাড়া কেউ জানে না।। আর আমরা এই বিয়ে মানি না। তখন আব্বু বলে আমরা আইনের কাছে যাবো, তখন ওর আব্বু বলে আইনে গেলে আমরা ধর্ষন অপহরণ মামলা দিবো। তাই আব্বু আর ঝামেলা করতে চায়নি। ঐ দিকে আমি নীলার মাদরাসা গিয়ে জানতে পারি নীলা মাদরাসায় নেই। কেথায় আছে কেউ জানে না।।।

গত ১২ আগস্ট জানতে পারলাম মামাতো ভাইয়ের সাথে নীলার বিয়ে দিয়েছে মসজিদে হুজুরের মাধ্যমে।। আমার সাথে নীলার তালাক ও হয়নি।। আমি নীলার পরিবার কে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করছি কিন্তু পারিনি। আর যেহেতু আমাদের কাবিন নামা নেই।  তাই আইনি সহায়তা ও পায়নি।

আমি একজন হুজুরের মাধ্যমে চিকিৎসা নিয়েছিলাম। তার চিকিৎসায় নীলার কুফরি কেটে যায়। তারপর নীলা আমাকে ফোন করে বলে আমাকে মাফ করে দাও। আমি নিজের ইচ্ছেয় কিছু করি নাই।।আমাকে দিয়ে এসব করানো হইছে। আমার বাবা মা মামাতো ভাইয়ের টাকার জন্য এসব করছে। তোমার আমার তো তালাক হয়নি। আমি এখনো তোমার বউ। তুমি কি আামকে এখান থেকে নিয়ে যাবে??আমাকে তো জিনাহে লিপ্ত করে রাখছে। সমাজ এবং পরিবারের মানসম্মানের কারণে সত্যি টা প্রকাশ করতেও পারছি না। তোমার কাছে ও যেতে পারছি না। নীলা কে ওর মামাতো ভাইয়ের সাথে থাকতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত জিনাহ হচ্ছে।

তখন আমি আবার সেই হুজুরের সাথে কথা বললাম৷ সে বললো এমন একটা ব্যবস্থা আছে, যা করলে নীলার মামাতো ভাই ইচ্ছে করেই নীলাকে ছেড়ে চলে যাবে।
১. এখন আমি কি এই ব্যবস্থা নিবো?
২. আমি কি নীলা কে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করবো?
৩. নীলা কে নিয়ে কি সুখে থাকতে পারবো?
৪. আমাদের ভবিষ্যৎ জীবন কি ভালো হবে??
৫. আর আমি যদি নীলা কে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা না করি তাহলে আমার কি গুনাহ হবে?

অনুগ্রহ করে আমাকে উত্তর দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করুন।
by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম।
দুঃখজনক ঘটনা। ধৈর্য ধরেন। সম্মানিত মুফতি সাহেব গণ উত্তর দিবেন।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 


(০১)

রুকইয়াহ বা তাবিজ ব্যবহার জায়েয। অর্থাৎ কুরআন সুন্নাহ দ্বারা যে তাবিজ ব্যবহার করা হয়, তা জায়েয । তবে তামিমা অর্থাৎ গরুর শিং, হাতির দাত, ইত্যাদি দ্বারা তাবিজ ব্যবহার করা জায়েয হবে না।

https://www.ifatwa.info/226 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে  যে,
আল্লাহ সবকিছুর খালিক ও মালিক,জগতের সব কিছু উনার হুকুমেই সংগঠিত হয়,তাবিজ বা ঔষধের অদ্য কোনো ক্ষমতা নেই।এমন আক্বিদা পোষণ করে জায়েয ও বৈধ কালামের মাধ্যমে চিকিৎসা হিসেবে ঝাড়-ফুক ও তাবিজ ব্যবহার বৈধ আছে।তবে গর্ভবর্তী মহিলার জন্য তাবিজ ব্যবহার জরুরী বা উত্তম বলে ইসলামী শরীয়তে কোনো কিছু নেই।তাবিজকে বিভিন্ন টিকামূলক ইনজেকশনের মত মনে করতে পারেন।যা দেওয়া বা না দেওয়া সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত বিষয়।যেমন নিম্নোক্ত হাদীসে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি নিজ নাবালিগ সন্তাদিকে তাবিজ লঠকিয়ে দিতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়-
আমর ইবনে শুয়াইব তার সনদে বর্ণনা করেন,
ﻋﻦ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺷُﻌَﻴْﺐٍ ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ ، ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ ، ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻗَﺎﻝَ : ( ﺇِﺫَﺍ ﻓَﺰِﻉَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﻮْﻡِ ﻓَﻠْﻴَﻘُﻞْ : ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻜَﻠِﻤَﺎﺕِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟﺘَّﺎﻣَّﺎﺕِ ﻣِﻦْ ﻏَﻀَﺒِﻪِ ﻭَﻋِﻘَﺎﺑِﻪِ ﻭَﺷَﺮِّ ﻋِﺒَﺎﺩِﻩِ ، ﻭَﻣِﻦْ ﻫَﻤَﺰَﺍﺕِ ﺍﻟﺸَّﻴَﺎﻃِﻴﻦِ ﻭَﺃَﻥْ ﻳَﺤْﻀُﺮُﻭﻥِ ﻓَﺈِﻧَّﻬَﺎ ﻟَﻦْ ﺗَﻀُﺮَّﻩُ ) . . ﻓَﻜَﺎﻥَ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦُ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ، ﻳُﻠَﻘِّﻨُﻬَﺎ ﻣَﻦْ ﺑَﻠَﻎَ ﻣِﻦْ ﻭَﻟَﺪِﻩِ ، ﻭَﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﺒْﻠُﻎْ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻛَﺘَﺒَﻬَﺎ ﻓِﻲ ﺻَﻚٍّ ﺛُﻢَّ ﻋَﻠَّﻘَﻬَﺎ ﻓِﻲ ﻋُﻨُﻘِﻪِ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যখন তোমাদের মধ্যে কেউ ঘুমে ভয় পায়, তখন সে যেন পড়ে-  'আউযু বিকালিমা-তিল্লাহিত-তাম্মাতি মিন গাদাবিহি ওয়া ই'ক্বাবিহি ওয়া শাররি ইবাদিহি ওয়া মিন হামাযাতিশ-শায়াতিনি,ওয়া আইয়াহদুরুন'  এই দু'আ পড়লে শয়তান কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি, তার সাবালক সন্তানাদিকে তা শিক্ষা দিতেন।এবং নাবালক সন্তাদির গলায় উক্ত দু'আ তাবিজ আকারে লিখে ঝুলিয়ে দিতেন।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২৪৭৭)

★সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই!

শরীয়ত সম্মত কোনো ব্যাবস্থা হলে আপনি আকীদা বিশুদ্ধ রেখে সেই ব্যবস্থা নিতে পারেন।

(০২)
সে যেহেতু আপনার স্ত্রী,সুতরাং সেক্ষেত্রে তাকে নিয়ে ঘর সংসার করার ইচ্ছা থাকলে তাকে ফিরিয়ে আনার বৈধ যেকোনো চেষ্টা করা আপনার দায়িত্ব। 
হ্যাঁ যদি আপনি তাকে আর স্ত্রী হিসেবে রাখতে না চান,সেক্ষেত্রে তাকে তালাক দিয়ে তাদেরকে বলে দিবেন যে নতুন করে যেনো বিবাহ পড়িয়ে নেয়।

(০৩)
যেহেতু তার পরিবার আপনার প্রতি আগ্রহ নয়,তারা আপনার বিরুদ্ধে এতো কিছু করেছে,সেক্ষেত্রে তাকে না পেলে যদি আপনার তেমন কষ্ট না হয়,যদি বিষয়টি আপনি মেনে নিতে পারেন,তাহলে পরামর্শ থাকবে,তাকে ফিরিয়ে না নিয়ে তালাক দেয়ার।

(০৪)
তাদের পরিবার আপনাকে মেনে না নিলে রুকইয়ার মাধ্যমে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় সে ঘর সংসার এর ক্ষেত্রে মনে হয় যে ভবিষ্যৎ জীবন তেমন ভালো হবেনা।
(আল্লাহই ভালো জানেন)
কেননা তারা আবারো তাদের মেয়েকে জাদু ইত্যাদি কিছু করতেই পারে।

(০৫)
আপনি তো তার পরিবারের সাথে কথা বলে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন,সুতরাং আপনি এক্ষেত্রে আর তাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা না করলে আপনার গুনাহ হবেনা।
,
তবে তাকে আর না নিতে চাইলে তালাক দেয়ার পরামর্শ থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...