মুহাদ্মদিসগণ এ মর্মে অধ্যায় এনেছেনঃ
* ইমাম বুখারী তাঁর সহীর মধ্যে অধ্যায়
এনেছেন ‘’কেউ ইচ্ছা করলে আযান ও ইকামতের
মধ্যবর্তী সময়ে সলাত আদায় করতে পারে’’
* ইমাম নববী সহীহ মুসলিমের মধ্যে অধ্যায়
এনেছেন ‘’মাগরিবের (ফরয) সলাতের পূর্বক্ষণে
দু’ রাকা’আত পড়া মুস্তাহাব’’
* ইবন হাজার আসকালানি তাঁর বুলুগুল মারামে
অধ্যায় এনেছেন ‘’মাগরিব সলাতের পূর্বে দু’
রাকা’আত নফলের বিধান’’
* ইমাম নাসায়ী তাঁর সুনানের মধ্যে অধ্যায়
এনেছেন ‘’আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে
নামাজ প্রসঙ্গে’’
* ইমাম তিরমিযি তাঁর সুনানে অধ্যায় এনেছেন
‘’সূর্যাস্তের পর মাগরিব নামাজের পূর্বে নফল
আদায় করা’’
* ইমাম আবু দাউদ তাঁর সুনানের মধ্যে অধ্যায়
এনেছেন ‘’মাগরিবের পূর্বে নফল সলাত’’
* মুসনাদ আহমাদে আহমাদ ইবন আব্দুর রহমান
ইবন মুহাম্মাদ আল-বান্না অধ্যায় এনেছেন
‘’মাগরিবের পূর্বে দু’ রাকা’আত (নফল) সম্পর্কে
যা এসেছে’’
মাগরিবের (ফরয) সলাতের পূর্বে দু’ রাকাআত
সলাত আদায় করা মুস্তাহাবঃ
দলীল নঃ ১
আবদুল্লাহ ইবন মুগাফফাল মুযানী (রাঃ) হতে
বর্ণিত। রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ প্রত্যেক আযান
ও ইকামতের মধ্যে সলাত রয়েছে। একথা তিনি
তিনবার বললেন, (তারপর বললেন) যে চায় তার
জন্য’’ বুখারী ৬২৪, ৬২৭; মুসলিম ৮৩৮; আবু
দাউদ ১২৮৩; ইবন মাযাহ ১১৬২; তিরমিযি
১৮৫; নাসায়ী ৬৮১; রিয়াদুস স্বা-লিহীন
১১০৬; মুসনাদ আহমাদ ৯৭১; ইবন খুজায়মাহ
১২৮৭; দারিমী ১৪৪৭
আবদুল্লাহ ইবন যুবাইর (রাঃ) হতে বর্ণিত।
রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ ‘’এমন কোনো ফরয
নামাজ নেই, যার আগে দু’ই রাকা’আত সুন্নাত
নামাজ পড়া যায় না’’ ইবন হিব্বান ৬১৫;
তাবারানী, মুজামুল কাবীর ২/২১০/৬৯); ইবন
আদী, কামিল (২/৪৬); আত-তারাকুকী (১/৪১);
ইবন নাসর, কিয়ামুল লাইল পৃষ্ঠা নঃ ২৬; আর-
রুয়ানী, মুসনাদ (১/২৩৮); দারাকুতনী, সুনান
পৃষ্ঠা নঃ ৯৯; সাহীহাহ ২৩২ (আলবানি
হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন)
উবাই ইবন কা’ব, জাবির ইবন আবদুল্লাহ, আবু
হুরায়রাহ ও সালমান ফারসী রাদিয়াল্লাহু
আনহুমা থেকে বর্ণিত। রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ
‘’তোমরা আযান ও ইকামতের মধ্যে এতটুকু
সময়ের অবকাশ দাও যাতে কোনো পায়খানা-
প্রস্রাবকারী (আযান শোনার পরও) ধীরে-সুস্থে
প্রয়োজন সারতে পারে এবং কোনো আহারকারী
তার খানা খাওয়া থেকে ধীরে-সুস্থে বিরত হতে
পারে’’ সাহীহাহ ৮৮৭ (আলবানি হাদিসটিকে
হাসান বলেছেন)
দলীল নঃ ২
আবদুল্লাহ মুযানী (রাঃ) সুত্রে বর্ণিত। নাবী
(সঃ) বলেছেনঃ ”তোমরা মাগরিবের (ফরযের)
পূর্বে (নফল) সলাত আদায় করবে; লোকেরা এই
আমলকে সুন্নাত হিসাবে গ্রহন করতে পারে, এই
কারনে তৃতীয়বারে বললেনঃ এটা তাঁর জন্য যে
ইচ্ছা করে’’ বুখারী ১১৮৩,৭৩৬৮; আবু দাউদ
১২৮১; বুলুগুল মারাম ৩৬০; মুসনাদ আহমাদ
৯৭০; রিয়াদুস স্বা-লিহীন ১১২৯; মিশকাতুল
মাসাবীহ ১১৬৫
ইবন হিব্বানের একটি বর্ণনায় আছে, ‘’নাবী
(সাঃ) মাগরিবের পূর্বে দু’ রাকা’আত সলাত আদায়
করেছিলেন’’ বুলুগুল মারাম ৩৬০ (তাহক্বীক
প্রয়োজন)
দলীল নঃ ৩
মুখতার ইবন ফুলফুল (রহঃ) হতে বর্ণিত। আনাস
(রাঃ) বলেনঃ আমরা রাসুল (সঃ)-এর যুগে
সূর্যাস্তের পর মাগরিবের সলাতের পূর্বে দু’
রাকাআত সলাত আদায় করতাম। আমি তাঁকে
জিজ্ঞেস করলাম, রাসুল (সঃ) কি তা পড়তেন?
তিনি বলেন, তিনি আমাদেরকে এই সলাত আদায়
করতে দেখতেন, কিন্তু তিনি তা পড়তে
আমাদেরকে নির্দেশও করতেন না এবং নিষেধও
করতেন না’’ মুসলিম ৮৩৬; আবু দাউদ ১২৮২;
রিয়াদুস স্বা-লিহীন ১১৩১
দলীল নঃ ৪
আনাস ইবন মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি
বলেন, মুয়াজ্জিন যখন মদিনার মসজিদে
দাঁড়িয়ে মাগরিবের আযান দিতেন তখন যার
ইচ্ছা সে দাঁড়াতো এবং নামাজ পড়তে শুরু করতো
এমনকি মাগরিবের নামাজ দাঁড়িয়ে যেত। আর
যে ইচ্ছা করতো সে দু’ রাকা’আত আদায় করে বসে
পড়ত। আর এ সব কিছু নাবী (সাঃ)-এর চোখের
সামনে ঘটতো’’ মুসনাদ আহমাদ ৯৬৭ (রাবীগন
নির্ভরযোগ্য)
দলীল নঃ ৫
আনাস ইবন মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি
বলেনঃ ‘’আমি নাবী (সাঃ)-এর বিশিষ্ট
সাহাবীদের পেয়েছি। তাঁরা মাগরিবের সময়
(ফরজের পূর্বে দু’ রাকা’আত সলাত আদায়ের
উদ্যেশ্যে) দ্রুত (মসজিদের) খুঁটির কাছে
যেতেন’’ বুখারী ৫০৩; রিয়াদুস স্বা-লিহীন
১১৩০
দলীল নঃ ৬
আনাস ইবন মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি
বলেনঃ মুয়াজ্জিন যখন আযান দিতো, তখন
নাবী (সাঃ)-এর কতিপয় সাহাবী নাবী (সাঃ)-
এর বের হওয়া পর্যন্ত (মসজিদের) খুঁটির কাছে
গয়ে মাগরিবের (ফরজের) পূর্বে দুই রাকা’আত
সলাত আদায় করতেন’’ বুখারী ৬২৫; মুসলিম
৮৩৭; নাসায়ী ৬৮২; মুসনাদ আহমাদ ৯৬৮;
সাহীহাহ ২৩৪
দলীল নঃ ৭
আনাস ইবন মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি
বলেনঃ রাসুল (সাঃ)-এর জমানায় মুয়াজ্জিন
মাগরিবের আযান দিলে মনে হতো তা যেন
ইকামত। কারন প্রচুর সংখ্যক লোক দাঁড়িয়ে
মাগরিবের আগে দু’ রাকা’আত সলাত আদায় করতো’’
ইবন মাযাহ ১১৬৩ (আলবানি হাদিসটিকে
সহীহ বলেছেন)
দলীল নঃ ৮
আনাস ইবন মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি
বলেন আমরা মদিনায় ছিলাম। মুয়াজ্জিন
মাগরিবের সলাতের আযান দিলে তারা তাড়াহুড়া
করে স্তম্ভের নিকট গিয়ে দু’ রাকাআত সলাত
আদায় করতেন। এমনকি কোন আগন্তুক মসজিদে
প্রবেশ করলে অধিক সংখ্যক সলাত আদায়কারীর
কারনে তাঁর মনে হতো যে, (ফরয) সলাত শেষ হয়ে
গেছে’’ মুসলিম ৮৩৭; রিয়াদুস স্বা-লিহীন
১১৩২
দলীল নঃ ৯
মারসাদ ইবন আবদুল্লাহ ইয়াযানী (রঃ) হতে
বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উকবাহ ইবন
জুহানী (রাঃ)-এর নিকট গিয়া তাঁকে বললাম,
আমি তামিম (রঃ) সম্পর্কে একথা বললে
আপনাকে বিস্মিত করে দিবো না যে, তিনি
মাগরিবের (ফরয) সলাতের পূর্বে দু’ রাকাআত
(নফল) সলাত আদায় করে থাকেন। উকবাহ (রাঃ)
বললেন, (এতে বিস্ময়ের কি আছে?) আল্লাহ্র
রাসুল (সঃ)-এর সময় আমরা তা আদায় করতাম।
আমি প্রশ্ন করলাম, তাহলে এখন কিসে আপনাকে
বাধা দিচ্ছে? তিনি বললেন, কাজকর্মের
ব্যস্ততা’’ বুখারী ১১৮৪; মুসনাদ আহমাদ ৯৬৯
রমজান মাসে রোজাদার ব্যাক্তি যেন ধীরে-
সুস্থে ইফতারি করে মসজিদে এসে মাগরিবের
নামাজ জামা’আতে আদায় করতে পারে সেজন্য
প্রায় দশ মিনিট সময় দেয়া হয়। রমজান মাস
শেষ হয়ে গেলেই আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে
যায় অর্থাৎ আযান দেয়ার প্রায় সাথে সাথেই
জামা’আত দাঁড়িয়ে যায়।
উবাই ইবন কা’ব, জাবির ইবন আবদুল্লাহ, আবু
হুরায়রাহ ও সালমান ফারসী রাদিয়াল্লাহু
আনহুমা থেকে বর্ণিত। রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ
‘’তোমরা আযান ও ইকামতের মধ্যে এতটুকু
সময়ের অবকাশ দাও যাতে কোনো পায়খানা-
প্রস্রাবকারী (আযান শোনার পরও) ধীরে-সুস্থে
প্রয়োজন সারতে পারে এবং কোনো আহারকারী
তার খানা খাওয়া থেকে ধীরে-সুস্থে বিরত হতে
পারে’’ সাহীহাহ ৮৮৭ (আলবানি হাদিসটিকে
হাসান বলেছেন)