জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عَلْقَمَةَ قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ أَلاَ أُصَلِّى بِكُمْ صَلاَةَ رَسُولِ اللَّهِ ﷺ قَالَ فَصَلَّى فَلَمْ يَرْفَعْ يَدَيْهِ إِلاَّ مَرَّة
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. বলেন আমি কি তোমাদেরকে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নামায সম্পর্কে অবহিত করব না? এ কথা বলে তিনি নামায পড়ে দেখালেন এবং নামাযে তাকবীরে তাহরীমার সময় একবার রাফয়ে’ ইয়াদাইন করলেন। নামাযে আর কোথাও তিনি রাফয়ে’ ইয়াদাইন করলেন না। (আবু দাউদ ৭৪৮, তিরমিযী ২৫৭, সুনানে দারেমী ১৩০৪, সুনানে নাসায়ী ৬৪৫, সুনানে বায়হাকী কুবরা মুসনাদে আহমাদ ৩৬৮১)
রাফয়ে ইয়াদাইন এর ক্ষেত্রে তিন রকমের হাদীস এসেছেঃ
,
এক,
তাকবিরে তাহরিমা বাধা,রুকুতে যাওয়ার আগে তাকবির বলে,রুকু থেকে উঠার পর তাকবির বলে হাত উঠানো।
দুই,
তাকবিরে তাহরিমা বাধা,রুকুতে যাওয়ার আগে তাকবির বলে,রুকু থেকে উঠার পর,
তাকবির বলে,সেজদাতে যাওয়ার সময় তাকবির বলে, এবং সেজদা থেকে উঠার সময় তাকবির বলে হাত উঠানো।
তিন,
শুধু মাত্র নামাজের শুরুতে তাকবিরে তাহরিমা বলার সময় হাত উঠানো।
বাকি সময় আর না উঠানো।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ফিক্বহে হানাফী মতে তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া বাকি সময় হাত উঠানো এবং সূরা ফাতিহার পর জোরে আমীন বলা উত্তম নয়। এ বক্তব্যটিও সহীহ হাদীস এবং সাহাবাদের ফাতওয়া এবং বিজ্ঞ ব্যক্তিদের আমলের সূত্র পরম্পরায় আমাদের পর্যন্ত পৌঁছেছে, তাই এটি আমাদের নিকট উত্তম।
,
আবার অন্য ফকীহ,এবং কিছু ইসলামি স্কলারগন এর বিপরীত মত পোষণ করেন। এক্ষেত্রে এই পার্থক্যটুকু শুধু সুন্নাহ আদায়ের উত্তম ও অনুত্তম পদ্ধতি নিয়ে।
অর্থ্যাৎ চার মাযহাবই এ বিষয়ে একমত যে, রাফয়ে’ ইয়াদাইন করা হোক বা না হোক; এতে নামাযের কোনো ক্ষতি হবে না।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনি হানাফি মাযহাবের অনুসারী হলে সমস্ত নামাজেই শুধুমাত্র তাকবিরে তাহরিমা বলার সময়েই হাত উঠাবেন।
প্রত্যেক বার আল্লাহু আকবার বলার পর হাত উঠাবেননা।
,
তবে আপনি শাফেয়ী বা আহলে হাদীস অনুসারী হলে তাদের মত অনুযায়ী সব নামাজেই রফয়ে ইয়াদাইন এর আমল করতে পারবেন।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
রফয়ে ইয়াদাইন সহ এরকম আরো মতবিরোধ পূর্ণ মাসয়ালায় একাধিক রকমের হাদীস পাওয়া যায়।
সবই রাসুলুল্লাহ সাঃ এ-র হাদীস।
কোনোটাকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
ভূল বলারও সুযোগ নেই।
কেননা সবই রাসুলুল্লাহ সাঃ থেকে প্রমানিত।
,
ফিকহী ইমামগন কোনো মাসয়ালার ক্ষেত্রে এরকম একাধিক রকমের হাদীস পেলে তারা যেই হাদীসের মান সবচেয়ে শক্তিশালী, যেই হাদীস অনুপাতে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর শেষ জীবনের আমল ছিলো,যেই হাদীসের উপর আমল করলে কুরআনের সাথে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়,যেই রকমের হাদীসের আধিক্যতা হাদীসের কিতাবে আছে,ইত্যাদি আরো কতিপয় বিষয় লক্ষ্য করে একটি মতকে প্রাধান্য দেন।
যেই ইমাম তার সর্বোচ্চ মেহনতের পর যেই মতকে প্রাধান্য দেন,সেই মাযহাবের অনুসারী গন সেই মত অনুযায়ী আমল করবেন।
★হাদীসের ক্ষেত্রে এরকম একাধিক রকমের হাদিস অনেক মাসয়ালা ক্ষেত্রেই রয়েছে।
যাহা সংখ্যায় বলা কষ্টসাধ্য।
প্রাই মতবিরোধ পূর্ণ মাসয়ালায় এরকম একাধিক রকমের হাদীস রয়েছে।