ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
শরীয়তের বিধান হলো, পাগল বাচ্চার বাবা মা দাদার উপর সেই সন্তানের খতনা করা সুন্নাত।
তারও খতনা করে দিতে হবে।
এটি তাদের উপর দায়িত্ব।
পাগল হওয়ার দরুন খতনার বিধান সাকেত হবেনা।
হ্যাঁ যদি তার পাগলামির দরুন খতনা করানো অসম্ভব ও খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়,তাহলে কোনো সমস্যা নেই।
ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছেঃ-
فی الھندیۃ: و للاب ان یختن ولدہ الصغیر و یحجمہ ویداویہ وکذا وصی الاب و لیس لولی الخال والعم ان یفعل ذلک الا ان یکون فی عیالہ فان مات فلاضمان علیہ استحسانا وکذلک ان فعلت الام ذلک کذا فی السراج الوھاج۔ (ج؍۶،ص؍۳۷) و ذکر الاصولیون ان المجنون کالصبی فی احکامہ۔
সারমর্মঃ
বাবার উপত দায়িত্ব হলো তার ছোট সন্তানের খতনা করে দেয়া,,,,উসুলবীদ গন বলেছে৷ যে পাগল ব্যাক্তি আহকামের ক্ষেত্রে ছোট শিশুর ন্যায়।
(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا, عَنْ النَّبِيِّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «رُفِعَ الْقَلَمُ عَنْ ثَلَاثَةٍ: عَنِ النَّائِمِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ, وَعَنِ الصَّغِيرِ حَتَّى يَكْبُرَ, وَعَنِ الْمَجْنُونِ حَتَّى يَعْقِلَ, أَوْ يَفِيقَ»
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- তিন ব্যক্তি থেকে কলম উঠিয়ে রাখা হয়েছেঃ ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়, নাবালেগ, যতক্ষণ না সে বালেগ হয় এবং পাগল, যতক্ষণ না সে জ্ঞান ফিরে পায় বা সুস্থ হয়।
(আবূ দাউদ ৪৩৯৮, নাসায়ী ৩৪৩২, ইবনু মাজাহ ২০৪১, আহমাদ ২৪১৭৩, ২৪১৮২, দারেমী ২২৯৬।)
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، عَنْ أَبِي الْأَحْوَصِ، ح وحَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، الْمَعْنَى، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِي ظَبْيَانَ، قَالَ هَنَّادٌ الْجَنْبيُّ: قَالَ: أُتِيَ عُمَرُ بِامْرَأَةٍ قَدْ فَجَرَتْ، فَأَمَرَ بِرَجْمِهَا، فَمَرَّ عَلِيٌّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَأَخَذَهَا فَخَلَّى سَبِيلَهَا، فَأُخْبِرَ عُمَرُ، قَالَ: ادْعُوا لِي عَلِيًّا، فَجَاءَ عَلِيٌّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَقَالَ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ، لَقَدْ عَلِمْتَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: رُفِعَ الْقَلَمُ عَنْ ثَلَاثَةٍ، عَنِ الصَّبِيِّ حَتَّى يَبْلُغَ، وَعَنِ النَّائِمِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ، وَعَنِ المَعْتُوهِ حَتَّى يَبْرَأَ، وَإِنَّ هَذِهِ مَعْتُوهَةُ بَنِي فُلَانٍ، لَعَلَّ الَّذِي أَتَاهَا وَهِيَ فِي بَلَائِهَا، قَالَ: فَقَالَ عُمَرُ: لَا أَدْرِي، فَقَالَ عَلِيٌّ عَلَيْهِ السَّلَام، وَأَنَا لَا أَدْرِي
আবূ যিবয়ান (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, হান্নাদ আল-জানবী বলেছেনঃ একদা এক যেনাকারিনীকে উমার (রাঃ)-এর নিকট হাযির করা হলে তিনি তাকে পাথর মেরে হত্যার আদেশ দেন। এ সময় আলী (রাঃ) ঐ পথ দিয়ে যাওয়ার সময় তাকে ছেড়ে দিলেন। উমার (রাঃ) এ সংবাদ পেয়ে আলী (রাঃ)-কে ডেকে পাঠান। আলী (রাঃ) তার নিকট এসে বলেন, হে আমীরুল মু‘মিনীন! আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন প্রকার লোকের উপর থেকে কলম তুলে রাখা হয়েছেঃ (১) নাবালেগ, যতক্ষণ না বালেগ হয়, (২) নিদ্রিত ব্যক্তি, যতক্ষণ না জাগ্রত হয় এবং (৩) পাগল, যতক্ষণ না সুস্থ হয়। আর এ তো অমুক গোত্রের পাগলিনী। সে যা করেছে, সম্ভবত উম্মাদ অবস্থায় তা করেছে। বর্ণনাকারী বলেন। উমার (রাঃ) বলেন, আমার বিষয়টি জানা নেই। অতঃপর আলী (রাঃ) বলেন, আমিও জানতাম না।
(আবু দাউদ ৪৪০২)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
পাগলের উপর সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো নামাজ রোযা নেই।
শরীয়তের কোনো বিধান তার উপর আবশ্যক নয়।
(০৩)
পাগল ছেলে হলে ছেলে হিসেবে যেই সম্পদ পেতো,তাহা পাবে।
পাগল মেয়ে হলে মেয়ে হিসেবে যেই সম্পদ পেতো,তাহা পাবে।
তবে এগুলো তার ওলি তথা অভিভাবকের (যে তার জন্য এগুলো খরচ করবে,চিকিৎসা ইত্যাদি করবে,ভরনপোষণ দিবে, তার) হাতে থাকবে।
পাগল সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সম্পদ সেই অভিভাবকের হাতেই থাকবে।
তাহা হতে পাগলের জন্য খরচ করা হবে।
,
★পাগলের অভিভাবক তার ব্যয় বহন করবে।
পাগলের অভিভাবক প্রথমে তার বাবা,তারপর তার বাবা যাকে অছিয়ত করে যাবে,সে হবে।
অতঃপর তার দাদা হবে,অতঃপর তার দাদা যাকে অছিয়ত করে যাবে,সে হবে।
তারপর বিচারক/তার স্থলাভিষিক্ত কেউ তার অভিভাবক হবে।
"قوله ( لا المال ) فإنه الولي فيه الأب ووصيه والجد ووصيه والقاضي ونائبه فقط".(ردالمحتارعلی الدرالمختار،کتاب النکاح،باب الولی،ج4ص190)
সারমর্মঃ
পাগলের অভিভাবক প্রথমে তার বাবা,তারপর তার বাবা যাকে অছিয়ত করে যাবে,সে হবে।
অতঃপর তার দাদা হবে,অতঃপর তার দাদা যাকে অছিয়ত করে যাবে,সে হবে।
তারপর বিচারক/তার স্থলাভিষিক্ত কেউ তার অভিভাবক হবে।
"ولايصح تصرف المجنون المغلوب بحال".(كنزالدقائق على صدرالبحرالرائق،كتاب الإكراه،باب الحجر،ج8 ص142)
সারমর্মঃ
পাগল সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত এই অবস্থায় সম্পদে সে হস্তক্ষেপ করতে পারবেনা,এটি সহীহ নয়। (সেই সম্পদ তার অভিভাবকের হাতেই থাকবে।)
(০৪)
পাগলকে বিবাহ দেয়া আবশ্যক নয়।
,
তবে তার অভিভাবক নিজে যদি তার বিবাহ দিয়ে দেয়,তাহলে এই বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৯/১৪৭)