আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
166 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (29 points)
ইসলামে দাসপ্রথা কী ফরজ না ঐচ্ছিক?
কাউকে গালি দেওয়ার পর যদি ব্যক্তি মারা যায় তবে কীভাবে গালিদাতা ক্ষমা পাবে?
কেউ যদি তার সন্তানকে আলেম বানাতে চায়, তবে সে তার সন্তানকে কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাবে?
দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য শেষ বৈঠকে যে দোয়া পাঠ করতে হয়, তা আরবি ও বাংলা অর্থসহ দেওয়ার আনুরোধ রইল।

1 Answer

0 votes
by (566,160 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
গোলাম আযাদ করা বা দাসমুক্ত করার অনেক ফযীলত রয়েছে। এ কাজের সবচেয়ে বড় ফযীলত হ’ল জাহান্নাম থেকে মুক্তি। 

আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি,

مَنْ أَعْتَقَ رَقَبَةً مُؤْمِنَةً، أَعْتَقَ اللهُ بِكُلِّ عُضْوٍ مِنْهُ عُضْوًا مِّنَ النَّارِ، حَتَّى يُعْتِقَ فَرْجَهُ بِفَرْجِهِ،

‘যে ব্যক্তি কোন মুমিন দাসকে আযাদ করবে, আল্লাহ তা‘আলা এর প্রতিটি অঙ্গের বিনিময়ে আযাদকারীর প্রতিটি অঙ্গকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দিবেন। এমনকি এর (দাসের) লজ্জাস্থানের বিনিময়ে তার (মুক্তকারীর) লজ্জাস্থানকে মুক্তি দিবেন’। -বিস্তারিত দেখুন, মুসলিম হা/১৫০৯; তিরমিযী হা/১৫৪১; ইরওয়াউল গালীল হা/১৭৪২।

অপর বর্ণনায় তিনি বলেন,

مَنْ أَعْتَقَ رَقَبَةً مُؤْمِنَةً كَانَتْ فِدَاءَهُ مِنَ النَّارِ،

‘যে ব্যক্তি একজন মুমিন দাসকে আযাদ করে দিবে, এর বিনিময়ে তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত করে দেওয়া হবে’। -সূত্রঃ. আবূ দাঊদ, হা/৩৯৬৬, সনদ ছহীহ।

ছাহাবায়ে কেরাম এই হাদীছগুলো থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে গোলাম আযাদ করার জন্য পরস্পর প্রতিযোগিতা করতেন। নাফে‘ (রহঃ) বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) তার জীবদ্দশায় একশত দাস আযাদ করেছিলেন। ( ছিফাতুছ ছাফওয়া, ১/২৪০ পৃ.।)

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
যেহেতু ইসলামে দাস দাসীদের মুক্ত করার বিশেষ ফজিলত এসেছে,এটির দ্বারাই স্পষ্ট হয় যে দাস বানিয়ে রাখা আবশ্যক বা ফরজ নয়।

ঐচ্ছিক।

(০২)
কাউকে গালি দেওয়ার পর যদি ব্যক্তি মারা যায়,তাহলে
তার জন্য মাগফিরাত এর দোয়া করবে।
তাহলে গালিদাতা ক্ষমা পাবে,ইনশাআল্লাহ। 

যেটি নিম্নের হাদীস থেকে বুঝা যায়ঃ
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: "إِنَّ مِنْ كَفَّارَةِ الْغِيبَةِ أَنْ تَسْتَغْفِرَ لِمَنِ اغْتَبْتَهٗ تَقُولُ: اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لَنَا وَلَهٗ. رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ الدَّعَوَاتِ الْكَبِيرِ".

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ গীবতের কাফফারাহ্ হলো, গীবতকারী যার গীবত করেছে, তার জন্য মাগফিরাত প্রার্থনা করবে এবং এভাবে বলবে, হে আল্লাহ! আমাকে এবং তাকে ক্ষমা করো।
(আদ্ দা‘ওয়াতুল কাবীর লিল বায়হাক্বী ৪৭৮,মেশকাত ৪৮৭৭)

(০৩)
তাকে কোনো কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিতে হবে।
এবং দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত পড়াতে হবে।

(০৪)
দোয়াঃ-
«اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَفِتْنَةِ الْمَمَاتِ اللَّهُمَّ إِنِّي أعوذ بك من المأثم والمغرم» 

উচ্চারণঃ 
‘‘আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন ‘আযা-বিল কবরি, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাসীহিদ্ দাজ্জা-লি। ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহ্ইয়া- ওয়া ফিতনাতিল মামা-তি। আল্লা-হুমা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল মা’সামি ওয়াল মাগরামি’’

অর্থঃ- হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট পানাহ চাচ্ছি কবরের ‘আযাব থেকে। আমি তোমার নিকট পানাহ চাচ্ছি দাজ্জালের পরীক্ষা হতে। আমি তোমার নিকট পানাহ চাচ্ছি জীবন ও মৃত্যুর পরীক্ষা হতে। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে পানাহ চাচ্ছি গুনাহ ও দেনার বোঝা হতে।


হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدْعُو فِي الصَّلَاةِ يَقُولُ: «اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَفِتْنَةِ الْمَمَاتِ اللَّهُمَّ إِنِّي أعوذ بك من المأثم والمغرم» فَقَالَ لَهُ قَائِل مَا أَكثر مَا تستعيذ من المغرم يَا رَسُول الله فَقَالَ: «إِنَّ الرَّجُلَ إِذَا غَرِمَ حَدَّثَ فَكَذَبَ وَوَعَدَ فَأَخْلَفَ»

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের মধ্যে (সালাম ফিরাবার আগে) দু‘আ করতেন। বলতেন,

‘‘আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন ‘আযা-বিল কবরি, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাসীহিদ্ দাজ্জা-লি। ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহ্ইয়া- ওয়া ফিতনাতিল মামা-তি। আল্লা-হুমা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল মা’সামি ওয়াল মাগরামি’’

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট পানাহ চাচ্ছি কবরের ‘আযাব থেকে। আমি তোমার নিকট পানাহ চাচ্ছি দাজ্জালের পরীক্ষা হতে। আমি তোমার নিকট পানাহ চাচ্ছি জীবন ও মৃত্যুর পরীক্ষা হতে। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে পানাহ চাচ্ছি গুনাহ ও ঋনের বোঝা হতে।)।

এক ব্যক্তি বলল, হে নবী! আপনি ঋনের বোঝা হতে বড় বেশী পানাহ চেয়ে থাকেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ কেউ যখন ঋনগ্রস্থ হয় তখন কথা বলে, মিথ্যা বলে এবং অঙ্গীকার করে তা ভঙ্গ করে।
(বুখারী ৮৩৩, মুসলিম ৫৮৯, আবূ দাঊদ ৮৮০, নাসায়ী ১৩০৯, আহমাদ ২৪৫৭৮.মিশকাতুল মাসাবিহ ৯৩৯।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...