আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
125 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (53 points)
শায়খ আপনার কাছে অনেক আগে জিজ্ঞেস করেছিলাম ফোনেও কথা হয়েছে।আপনি বলেছেন যে তালাক হবে না। তবে ৬/৭ মাস পর ঐ বিষয় টা নিয়ে আবার সমস্যা ফিল করতেছি। এখন আরেকটু ডিটেইলসে বলছি সবটা পড়ে উত্তর দিবেন প্লিজ।এ বিষয়ে আবার বিরক্ত করার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

আমি ও আমার স্বামী একদিন ফোনে কথা বলছিলাম তখন সে আমাকে একটা কাজের কথা উল্লেখ করে বলেছিলো তুমি যদি ঐ কাজটা করো তাহলে তোমাকে ত্যাগ করবো,বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা।পরের দিন আমি এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করার জন্য একটা কৌশল অবলম্বন করি কারণ সরাসরি জিজ্ঞেস করতে ভয় লাগছিলো। সেটা হলো আমি প্রথমে তালাকের মাসয়ালা আলোচনা করি আর আমার স্বামীও মাসয়ালা বলতে থাকে আমার সাথে সাথে।আমার উদ্দেশ্য ছিলো মাসয়ালা আলোচনা করার ফাকে তাকে আগেরদিনের শর্তের নিয়ত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবো।তাই আমি তাকে বলি আজ আমি তালাকের মাসয়ালা দেখেছি।স্বামী যদি এধরনের কেনায়া শব্দ বলে তাহলে নাকি তালাক হয়ে যায় তখন আমার স্বামী বলে তুমি কোথা থেকে শুনছো কে জানে।তুমি এ মাসয়ালা ভালোভাবে বুঝোইনি।এখানে তালকের নিয়ত অবশ্যই থাকতে হবে।তখন আমি বলি আমি বিষয় টা জানি তবুও হুজুর রা বললো তাই আপনাকে একটু জানালাম। তারপর আরো কিছু কথা হলো যেটা আমার মনে নেই।তারপর আমি বললাম কোনো স্বামী যদি তার স্ত্রীকে তালাক দেয় তার পরের মাসে যদি না দেয় বা তার পরের মাসেও যদি না দেয় তাহলে তালাক হয়ে যায়।তখন আমার স্বামী এই একই মাসয়ালা বলতে গিয়ে বলে যে
*মনে কর তোমাকে তালাক দিলাম।তারপর বলে  এরপরের মাসে যদি তালাক না দেয় সে এতটুকু বলার পর তখন মনে হয় আমি বলে উঠেছিলাম *কেউ যদি তার স্ত্রীকে না দেয় তখন সেও বলেছিলো যদি কেউ না দেয়।এবং বলেছিলো এরপরের মাসেও যদি না দেয় অর্থাৎ তালাক না দেয়। তাহলে এমনিতে তালাক হয়ে যাবে* আমার স্বামী। (আর এই বৈঠকেই আমি তাকে জিজ্ঞেস করি আগের দিনের শর্তের কথা জিজ্ঞেস করি আপনি যে কাল বলেছিলেন ঐ কাজটা করলে তোমাকে ত্যাগ করবো,বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা এগুলো কেনো বলেছিলেন তখন সে বলে হ্যা ওরকম হলে তোমাকে ত্যাগ করবো,বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে মানে আমাকে আগেরদিনের ঘটনা বুঝিয়ে বলে। তবে এ বিষয় টা তাকে কখন জিজ্ঞেস করি মসয়ালা আলোচনার আগে নাকি শেষে এটা শিওরলি এখন মনে পড়ছে না কারন এই বিষয় টা নিয়ে আগে ভাবা হয়নি)।শায়েখ এটা শিওর যে আমি তালাকের  ঐ মাসয়ালা বলার পরই আমার স্বামী ঐ মাসয়ালা টা বলতে গিয়ে বলছে মনে করো তোমাকে তালাক দিলাম....বাকি অংশটুকু।
এখানে মাসয়ালাটা বলতে গিয়ে ওভাবে বলেছিলো।তখন আমাকে তালাক দেওয়া তার কোনো উদ্দেশ্যই ছিলো না।সেরকম কোনো কারনও ছিলো না।পরবর্তীতে আমার মনে সন্দেহ হয় যে তার সে মাসয়ালা বলতে গিয়ে "মনে করো তোমাকে তালাক দিলাম"বলছে এ কথায় আমার উপর তালাক পতিত হয়েছে কিনা? তাই আমি তাকে ঘটনার পরের দিন  জিজ্ঞেস করি যে আপনি মাসয়ালার বলার সময় বলেছিলেন"মনে কর তোমাকে তালাক দিলাম" এতে কি কিছু হয়েছে।আমার একথা শুনে স্বামী অনেক রেগে গেছে আর বলছে তুমি আমাকে হয়রানি করছো।স্বামী তখন ভালভাবে ভেবে বলে যে তুমি যেটা বলছো আমি সেটা বলিই নি(আল্লাহর কসম করে বলছে)।সে বলতেছে যে সে বলেছিলো "মনে করো যদি কোন ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে তালাক দেয়"। এখানে তোমাকে কেন বলবো?সে আমাকে বলছে তুমি যদি সঠিক হও তাহলে আমার মতো কসম খাও।আমি ভয়ে কসম খাইনি।কিন্তু আমি শিওর সে ওভাবে বলছে।
আমি আবার একদিন আমার স্বামীকে বলি হুজুর বলছেন মাসয়ালা আলোচনা বা শিক্ষা দেওয়ার জন্য স্বামী যদি তার স্ত্রীকে ওভাবে বলে(মনে করো তোমাকে তালাক দিলাম) তাহলে তালাক হয়না।আপনার কি উদ্দেশ্য ছিলো সেদিন।সে উত্তর দেয় এখানে যোকোনো ২ টা উদ্দেশ্য হতে পারে হয় তোমাকে মাসয়ালা শিক্ষা দেওয়ার জনয নয়তো তোমাকে স্ত্রী হিসেবে ত্যাগ করার জন্য।যদিও শুরুতে বলেছিলো সে ওভাবে বলেইনি কিন্তু তাকে এ সম্পর্কে বারবার জিজ্ঞেস করার কারনে বিরক্ত হয়ে এমন বলছে।

শায়েখ এখন সমস্যা,হলো হটাৎ ৬/৭ মাস পর মনে হচ্ছে- মাসয়ালার ক্ষেত্রে মনে করো তোমাকে তালাক দিলাম এখানে তোমাকে তালাক দিলাম এটা বলার আগে মনে করো কথাটা বলেছিলো কিনা সন্দেহ হচ্ছে।তবে আমি বলতে পারি ঐঘটনার পর আমার মনে তখন কোনো সন্দেহ হয়নি।এমনকি ঐদিনই মনে করো তোমাকে তালাক দিলাম এরকম লিখেই অনলাইনে সার্চও করি। অনেক মুফতিদের কাছে জিজ্ঞেস করি আপনার কাছেও জিজ্ঞেস করি আপনি বলেন তালাক হবে না।এখন এরকম কেনো হচ্ছে বুঝতে পারছিনা। ৬/৭ মাস আগের কথা হুবহু মনে রাখাও তো কঠিন।ঘটনাটা কেমন জেনো ঝাপসা হয়ে গেছে কারন এটাকে নিয়ে অনেকদিন ভাবা হয়নি।আর সন্দেহ ও অনেক বেশি প্রবল না।

১.শায়খ সব ঘটনার বিবরণ মতে তালাক হবে কিনা?? এখানে তার কোনো কথা দ্বারা বা ২ উদ্দেশ্য হতে পারে...বাকিটুকু বলার দ্বারা কি তালাকের স্বীকারোক্তি দেওয়া হবে??

২.৬/৭ মাস পর হঠাৎ এখন তোমাকে তালাক দিলাম এটা বলার আগে মনে করো কথাটা বলেছিলো কি সেটা নিয়ে সন্দেহ হওয়ার কারণে কি তালাক হবে?? ঘটনাটা ঘটার পর ২/৩ মাস পর্যন্ত কিন্তু মনে করো বা ধরো এ জাতীয় কথা বলা নিয়ে এমন সন্দেহ হয়নি।ধরোর চেয়ে মনে করো বলার ব্যাপারে বেশি শিওর ছিলাম।এরপর এটা নিয়ে আর ভাবিনি।এখন হঠাৎ এমন হচ্ছে। আর শুধু তোমাকে তালাক দিলাম এটাও বা কেন তিনি বলবেন বুঝে আসছে না এটা বলার কোনো কারণ তো ছিলোই না মাসয়ালা বলা ছাড়া।তাও এখন ৬/৭ মাস পর সন্দেহের কারনে কোনো তালাক হবে কি??একটু বুঝিয়ে বলবেন।

এখানে মনে করো তোমাকে তালাক দিলাম এটাই ঐদিন বলেছিলো বলে ধরে নিব এখন যতোই সন্দেহ হোক??

৩.ঐদিনের মজলিসে মাসয়ালা আলোচনা করার ফাকে আগের দিনের কাজের শর্তের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করার কারণে ও স্বামীর উত্তরে তোমাকে ত্যাগ করবো,বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এরকম বলার কারণে কি উক্ত মজলিস তালাকের মজলিস হবে??

৪.ঐদিনের মজলিসে মাসয়ালা আলোচনা করার ফাকে আগের দিনের কাজের শর্তের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করার আর স্বামীর দেয়া উত্তর তোমাকে ত্যাগ করবো, বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবা এগুলো বলার কারণে ঐ মজলিসে মনে কর তোমাকে তালাক দিলাম এটা বলার দ্বারা কি তালাক হবে?

1 Answer

0 votes
by (685,200 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://ifatwa.info/44865/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
তালাক খুবই মারাত্মক এক বিষয় । নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

★শরীয়তের বিধান হলো,তালাকের উদ্দেশ্য ছাড়া শুধু তালাক শব্দ উচ্চারণ করলে বা লিখলেও তালাক হয় না। কেননা, ফকিহগণ বলেছেন,

يشترط بالاتفاق القصد فى الطلاق، وهو إرادة التلفظ به ولو لم ينو فلا يقع طلاق فقيه يكره ولا طلاق حاك عن نفسه أو غيره لأنه لام يقصد معناه، بل قصد التعليم والحكاية، (الفقه الاسلام وادلته، كتاب الطلاق، باب شروط الطلاق-7/368)
সারমর্মঃ  
সকলের মতে তালাকের ইচ্ছা থাকতে হবে। আর তাহল, (তালাকের উদ্দেশ্যে) ইচ্ছাকৃতভাবে তালাক শব্দ উচ্চারণ করা। (আল ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু ৭/৩৬৮)

বিস্তারিত জানতে উক্ত লিংকে ক্লিক করুন।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এক্ষেত্রে তালাক হবেনা।

(০২)
এখানে আপনার সন্দেহের কোনো ধর্তব্য নেই।
আপনি স্বামী যদি বলে যে আমি মনে করো/ধরে নাও ইত্যাদি টাইপের বাক্য বলে তালাকের কথা বলেছেন,তাহলে তালাক হবেনা।

আর যদি সরাসরি "আমি তোমাকে তালাক দিলাম" এ রকম বাক্য বলে,তাহলে তালাক হয়ে যাবে।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এটি তালাকের মজলিস নয়।
তবে এ সংক্রান্ত মাসয়ালা আলোচনার মজলিস ধরা হবে।

(০৪)
না,তালাক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...