আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
133 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (32 points)

আসসালামু আলাইকুম।

(১) অনেকসময় রাস্তায় ঝালমুড়ি খাওয়ার সময় ঝালমুড়ি যেই কাগজে দেয় সেই কাগজে অথবা চিপ্সের প্যাকেটে কোন সুরা/ আরবী অক্ষর লেখা থাকে। খাওয়ার পর সাধারণত আমরা মুড়ির কাগজ/ চিপ্সের প্যাকেট রাস্তায়/ডাস্টবিনে ফেলে দেই। এখন সেই কাগজ/ প্যাকেটে আরবী অক্ষর/লেখা থাকার কারনে।যদি সেই কাগজগুলো রাস্তায়/ ডাস্টবিনে ফেলে দেই, তাহলে আমাদের পাপ হবে? এই কাগজ/ প্যাকেট তো রেখে দেওয়াও সম্ভব না। কারন তাহলে মাস/বছর শেষে অনেক প্যাকেট হয়ে যাবে। তাহলে এক্ষেত্রে করনীয় কি?

(২) নামাজে ২য় বা ৪র্থ রাকাতে দুইটি সেজদা দেওয়ার পর বৌঠকে তাশাহুদ পড়ার সময় তাশাহুদ এত জায়গায় প্রথমে যদি ভুলে সুরা ফাতিহা এর ২/৩ লাইন পড়ে ফেলি। তারপর মনে পড়ার পর আবার তাশাহুদ পড়ি, তাহলে কি সেজদা সাহু দেওয়া লাগবে?

(৩) ওজুতে ব্যবহৃত পানির কিছু ফোটা যদি পাশে থাকা অর্ধেক/সম্পুর্ন পবিত্র পানি দিয়ে ভরা বালতিতে গিয়ে পড়ে তাহলে কি পরবর্তীতে সেই বালতির পানি দিয়ে ফরজ গোসল করা যাবে? (কারন আমি জানি যে, ওজুর পানি পাক হলেও সেটি একাধিকবার ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু ওই কয়েক ফোটা পানির জন্য বালতির সব পানি ফেলে দেওয়াও তো ঠিক হবে না)

(৪) শরীরের কোনো অল্প অংশ (২-৩ ইঞ্চি) কেটে গিয়ে (যেমনঃ আংগুলের কোনা) যদি সেখান থেকে অনবরত অল্প অল্প রক্ত বা তরল বের হতে থাকে তবে সেই ব্যক্তি কি মাযুর হিসেবে বিবেচিত হবে?

(৪.১)যদি সে মাযুর হিসেবে বিবেচিত হয় তাহলে হয়তো সে ৫ ওয়াক্তের জন্য ৫ বার ওজু করে নামাজ পড়তে পারবে। মাযুর হিসেবে বিবেচিত না হলেও তো নামাজ পড়তেই হবে।

কিন্তু নামাজ চলা অবস্থায় তো তার হাত/শরীর থেকে হাল্কা/অল্প রক্ত বের হচ্ছেই। সেই রক্ত তো গায়ে,গেঞ্জি,প্যান্টে লাগতেই পারে। সেই রক্ত নাপাক হয়ে থাকলে তো সেই৷ হাত দিয়ে মোবাইল বা অন্য কিছুপ ধরা যাবে না।

তাহলে, এমন অবস্থায় কি সে সেখানে কাপড় বা ব্যান্ডেজ পেচিয়ে ওজু,নামাজ সম্পন্ন করবে? নাকি এইগুলো ব্যবহার করা যাবে না, ওই অবস্থায়ই নামাজ পড়তে হবে? (যদি ওই রক্ত নাপাক না হয়, তাহলে হয়তো সমস্যা নেই। কিন্তু ওই রক্ত নাপাক হলেই তো সমস্যা যদি না সেই কাটা স্থান কাপড় বা ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢাকা হয়)

(৫) কেও কোন একটা কাজ সম্পন্ন করলে সে যদি এসে বলে যে কাজ শেষ তখন অনেকসময় আমরা কথায় কথায় বলে ফেলি যে, "তো এখন কি তোমার পুজা করবো?" এই কথা বলা দ্বারা কি শিরক হয়ে যাবে? আসলে কথাটা অনেকসময় এমনিতেই বলা হয়। আসলে মিন (mean) করে বলা হয়না। তাও কি এটা বলার জন্য শিরক হয়ে যাবে?

(৬) রাস্তায় হাটার সময় অনেকসময় দেখা যায় যে, রাস্তার পাশে দিয়ে ময়লার গাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসব গাড়ি থেকে ফোটা ফোটা পানি রাস্তায় পড়তে থাকে। যেহেতু এটি ময়লার পানি, তাহলে রাস্তায় হাটার সময় রাস্তার যেখানে এই পানি পড়েছে সেখানে হাটাচলার সময় যদি কেউ জুতা পড়া অবস্থায় পাড়া দেয় তাহলে কি সেই জুতা নাপাক হয়ে যাবে?

(৬.১) যদি জুতা নাপাক হয়, তাহলে রাস্তায় চলাচলের সময় আশেপাশে যেই বালু (শুকনো/হাল্কা ভিজা) দেখা যায়, সেই বালুতে জুতার তলা ঘষা দিলে কি সেই জুতা পাক হয়ে যাবে?

(৭) নামাজ পড়ার পর অনেকক্ষন সময় অতিবাহিত হওয়ার পর আরেকজন আমাকে বলার পর আমি খেয়াল করি যে, প্যান্টের পিছনের দিকে ছিড়া ছিল। (কোমড় থেকে আরো নিচের অংশের)

এখন আমি এটা সঠিক বলতে পারতেছি না যে, প্যান্টটা নামাজের আগেই ছিড়া ছিল নাকি নামাজের পড়ে ছিড়েছে। এখন কি সেই নামাজ আবার পড়তে হবে? (প্যান্ট যে ছিড়া, এটা নামাজের পড়ে খেয়াল করা হয়েছে, তাও অন্য একজন  আমাকে বলার পর খেয়াল করি)

(৮) কেউ যদি জামাতে নামাজ পড়ার সময় কাতার সম্পুর্ন পূরণ না করে পিছনে দাঁড়িয়ে সেই জামাতের সাথে নামাজ পড়ে। তাহলে কি তার নামাজ হবে? নাকি কাতার পূরণ না করার কারনে সেই নামাজ হবে না?

(৮.১) মসজিদে অনেকসময় দেখা যায় যে, সামনের কাতারে কিছু জায়গা খালি থাকে, বা কেও দাঁড়ায় না। কিন্তু পিছনের কাতার গুলো পূর্ণ হয়ে যায়। যদি এমন হয় যে, সামনের কাতার খালি থাকার পরও পিছনের কাতার পূর্ণ হয়ে যায় এবং নামাজ চলা অবস্থায় সামনের কাতার খালি অবস্থাতেই থেকে যায়, তাহলে কি পিছনের কাতারের কারোরই নামাজ হবে না? (এই সম্পর্কে কোনো হাদিস থাকলে, রেফারেন্স দিয়েন)

(৯) এই প্রশ্নটা একটু ভালোভাবে সম্পুর্ন পড়ে উত্তরটাও একটু বড় করে দিলে উপকার হতো। 

আমার বাসায় ২ টা ওয়াশরুম। একটা আমি ইউস করি। এখন একটা সমস্যা হচ্ছে কেউ যেমনঃ আমাদের বাসায় কাজ করে ওই মহিলা অথবা অন্য কেউ মেহমান ওয়াশরুমে গেলেই আমার মনে হয় যে, সব কিছু নাপাক হয়ে গেল কিনা। যেহেতু প্রস্রাব তো পানির মত হয়, তাই বুঝাও যায় না।

কেউ গেলেই পরে আমার ওয়াশরুমে গিয়ে ওয়াশরুমের জিনিসপত্র ধৌত করতে হয়।

এটা ওয়াসওয়াসার কারনে হচ্ছে। প্রত্যেকবার তো ধৌত করাও সম্ভব না।

আর কেউ ওয়াশরুমে গেলে প্রস্রাবের ফোটা যদি আশেপাশে লেগেও থাকে সেটাও তো একবারে সঠিকভাবে বুঝা সম্ভব নয়। কারন আশেপাশে পানির ফোটা ও থাকে।

এমন অবস্থায় করনীয় কি? অন্য কেউ ওয়াশরুমে গেলে প্রত্যেকবার ই কি ওয়াশরুম ধৌত করবো?

(আমি জানি যে,যতক্ষণ পর্যন্ত সিওর হয়ে বলতে পারবো না, ততক্ষণ সেই জায়গা নাপাক ধরবো না)

কিন্তু,

আসলেই যদি আমি ছাড়া অন্য কেউ ওয়াশরুমে গেলে ও প্রস্রাব করলে নাপাকি আশেপাশে ছিটে সেটা তো বুঝবোও না। তাহলে কি প্রত্যেকবার ওয়াশরুমের জিনিসপত্র ধৌত করবো?

1 Answer

0 votes
by (573,660 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: إِنَّ اللهَ يَرْفَعُ بِهٰذَا الْكِتَابِ أَقْوَامًا وَيَضَعُ بِه اٰخَرِينَ

উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা এ কিতাব কুরআনের মাধ্যমে কোন কোন জাতিকে উন্নতি দান করেন। আবার অন্যদেরকে করেন অবনত।
(মুসলিম ৮১৭, ইবনু মাজাহ ২১৮, আহমাদ ২৩২, দারিমী ৩৪০৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫১২৫, শু‘আবূল ঈমান ২৪২৮, সহীহাহ্ ২২৩৯।)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এসব কাগজ,প্যাকেটে কুরআনের আয়াত,বা হাদীস,বা আল্লাহর নাম, রাসুলুল্লাহ সাঃ এর নাম থাকলে তাহা এভাবে ফেলে দেয়া যাবেনা।
যেখানে কেউ চলাচল করেনা,এমন স্থানে মাটিতে দাফন করে দিতে হবে।
আগুনে পুড়িয়েও এর ছাই দাফন করা যাবে।

(০২)
হ্যাঁ সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে বালতিতে  ব্যবহৃত পানির পরিমান 
বালতিতে থাকা সাধারণ পানির তুলনায় কম হওয়ায় এতে কোনো সমস্যা নেই।
সেই বালতির পানি দিয়ে ফরজ গোসল করা যাবে।

(০৪)
যদি কোনো এক নামাজের পুরো ওয়াক্তের মধ্যে কোনো সময়েই রক্ত/তরল বের হওয়া ব্যাতিত নামাজ পড়া সম্ভব মা হয়,অনবরত যদি এভাবে পুরো ওয়াক্তই রক্ত/তরল বের হয়,তাহলে সে মা'জুর।

(৪.১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি সেখানে কাপড় বা ব্যান্ডেজ পেচিয়ে ওজু,নামাজ সম্পন্ন করবে।

(০৫)
এটা বলার জন্য শিরক হয়ে যাবেনা।

(০৬)
জুতায় লেগে থাকা সেই কাদা/পানিতে নাপাকির চিন্হ/গন্ধ পাওয়া না গেলে সেটিকে নাপাক বলা হবেনা।

(৬.১)
এতে জুতা পাক হবেনা।
ধোয়া লাগবে।

(০৭)
এটি যেহেতু সামান্য ছিলো,তাই নামাজ হয়ে গিয়েছে।

(০৮)
নামাজ হয়ে যাবে।
তবে বিনা কারনে এমনটি করলে কাজটি মাকরুহ হবে।

(৮.১)
নামাজ হয়ে যাবে।
তবে বিনা কারনে এমনটি করলে এটি মাকরুহ হবে।

(০৯)
এমন সন্দেহ হলে আপনি প্রত্যেকবার প্রবেশ করার পর ওয়াশরুমের ফ্লোর ধুয়ে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...