আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
259 views
in পবিত্রতা (Purity) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি মাজুর নই।কিন্তু হায়েজ থেকে ভালো হওয়ার পরে ১০-১৫ দিন পানির মতো সাদাস্রাব যায়।এরমধ্যে ৯০ ভাগ সময়ই আমি বুঝতে পারি না স্রাব নির্গত হয়েছে।স্রাবের পরিমাণও খুবই কম।সাধারণত নামায শেষে  অন্য একটি কাপড়ের টুকরা দিয়ে চেক করলেই স্রাব আসছে কিনা বুঝতে পারি।দেখা যায় বেরিয়ে আসা স্রাবের পরিমাণ ১-২ টি শস্যদানা পরিমাণের বেশি হয় না।আমি নিশ্চিত হওয়ার জন্য কমপক্ষে ৩-৪ বার চেক করি।কখনো দেখা যায় ৪ বার চেক করলাম প্রথমবার দেখি নি,কিন্তু ২য় বার দেখলাম যা পরিমাণে ১-২টি শস্য পরিমাণ,আবার  ৩য়_৪র্থ বার আর দেখি না। এই অবস্থায় আমার মনে হতে থাকে হয়ত যোনি পথের ভিতরে এসেছে আর আমার চেক করার পার্থক্যের কারণে একবার দেখতে পেয়েছি, অন্যসব বার দেখতে পাইনি।তখন আমি সালাত পুনরায় পড়ব কিনা বুঝতে পারি না।যদি না পড়ে দিই তাহলে মন সারাক্ষণ খচখচ করে।আবার একাধিকবার সালাত আদায় করলে পর্যাপ্ত মনোযোগও থাকে না।অনেক সময় ৩বার পর্যন্তও সালাত আদায় করতে হয় যা আমার জন্য কষ্টকর হয়ে যায়।আর ওয়াসওয়াসার সমস্যা থাকায় আমার কোনো সিদ্ধান্তে পৌছানো সত্যিই কস্টকর ব্যাপার।আমার প্রশ্ন-

১।উপরে উল্লেখিত অবস্হায় আমার করণীয় কি?

২।দুই-তিনবার সালাত আাদায়ের পরেও যদি দেখি স্রাব আসছে,তাহলে করণীয় কী?স্রাবের পরিমাণ কখনোই বেশি হয় না।

৩।অনেক সময় মনে হয় স্রাব আসছে কিন্তু চেক করলে দেখতে পায় না তখন করণীয় কী?

৪।যদি কাপড় দিয়ে চেক করার পরে কোনো স্রাব না দেখি তাহলে কি  উক্ত ওযুতে সালাত চালিয়ে যেতে পারব?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


https://ifatwa.info/9904/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হায়েযের সর্বোচ্ছ সময়সীমা ১০দিন।
এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী জেওর-১/২০৬)  

হায়েজের দিন গুলোতে যেই কালারেরই রক্ত হোক,সেটি হায়েজের রক্ত বলেই গন্য হবে। 
উক্ত সময় নামাজ রোযা ইত্যাদি আদায় করা যাবেনা।
(কিতাবুল ফাতওয়া ২/৭৬)

তবে স্পষ্ট সাদা কালারের কিছু বের হলে সেটাকে হায়েজ বলা যাবেনা।
(ফাতাওয়ায়ে হক্কানিয়াহ ২/৮৩৩)

উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,

عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "

তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন।(মুয়াত্তা মালিক-১২৭)
,

أن النساء کن یبعثن بالکرسف إلی عائشۃ رضی اللہ تعالیٰ عنھا فکانت تقول : لا حتی ترین القصۃ البیضاء‘‘ ( المؤطأ للإمام مالک : ۱/۵۹۱ ،  : مصنف ابن عبد الرزاق، حدیث نمبر : ۱۱۵۹ )
সারমর্মঃ আয়েশা সিদ্দিকা রাঃ সেই সমস্ত মহিলাদের বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা দেখিতে না পাও। 
,
আরো জানুনঃ

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
(০১)
হায়েজ ভালো হয়ে যাওয়ার পর যদি দশদিনের মধ্যেই আবারো স্রাব আসে,সেক্ষেত্রে স্পষ্ট সাদা না হলে হায়েজ শুরু হওয়ার দিন থেকে ১০ দিন পর্যন্ত এই অন্য কালারের স্রাবকে হায়েজ ধরতে হবে।

যদি স্পষ্ট সাদা হয়,বা দশদিন পরেও আসে,সেক্ষেত্রে এটি ইস্তেহাজা।
নামাজ চালিয়ে যেতে হবে।

আপনি যেহেতু মা'যুর নন,তাই শরীর ও কাপড় পাক করেই আপনাকে প্রত্যেক ওয়াক্তের নামাজ আদায় করতে হবে।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি আপনার স্রাব যোনিপথের ভিতরেই থাকে,তাহলে এতে নামাজের সমস্যা হবেনা।
এভাবে নামাজ চালিয়ে যেতে পারবেন।

আর যদি যোনিপথের বাহিরে চলে আসে,সেক্ষেত্রে অযুর পর বা নামাজের মধ্যে সামান্য কয়েক ফোটা বাহিরে আসলেও অযু ভেঙ্গে যাবে,যার দরুন নামাজ হবেনা।

আপনার জন্য করনীয় হলো, যেই সময়ে যোনিপথের বাহিরে স্রাব আসছেনা,সেই সময়ে আপনি নামাযে দাড়াবেন।
নামাজ শেষে দেখবেন যে যোনিপথের বাহিরে স্রাব এসেছে কিনা? 
(এখানে টিস্যু ভিতরের প্রবেশ করবেননা,একেবারে যোনিপথের বাহিরে স্রাব এসেছে কিনা,সেটি দেখতে হবে।)

যদি যোনিপথের বাহিরে স্রাব আসে,তাহলে পরিমান সামান্য হলেও অযু ভেঙ্গে যাওয়ার দরুন নামাজ হবেনা।
পুনরায় পাক হয়ে উক্ত নামাজ আদায় করতে হবে।

আর যদি যোনিপথের বাহিরে স্রাব না আসে,বরং তাহা ভিতরেই থাকে,(টিস্যু ভিতরে প্রবেশ না করালে স্রাব দেখা যায়না,) তাহলে এতে নামাজ হয়ে যাবে।

(০২)
এক্ষেত্রে আপনি মা'যুর হোন কিনা,সেটি নির্ণয় করবেন।

মা'যুর না হলে আরো কিছু সময় অপেক্ষা করে পরে নামাজ আদায় করবেন। 

(০৩)
যেহেতু যোনিপথের বাহিরে আপনি স্রাবের অস্তিত্ব পাননি,তাই এক্ষেত্রে সমস্যা নেই।

(০৪)
হ্যাঁ, সালাত চালিয়ে যেতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 163 views
...