আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
274 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (48 points)
আসসালামু আলাইকুম।
মা বাবা,তাদের একজন কন্যা সন্তান।আত্নীয় স্বজন রা স্বচ্ছল।একমাত্র কন্যা সন্তানের নামে যদি হেবা করে সব সম্পদ তাহলে কি মা বাবার গুনাহ হবে?
আত্নীয় স্বজনের লিস্ট অনেক।এতজনের সাথে কিভাবে সম্পদের লেনদেন করবে।এবং এ বিষয়ে তারা আগ্রহী ও না।নিজেরা নিজেদের সম্পদ থেকে আত্নীয় স্বজনদের প্রয়োজনে ব্যয় করেন সাধ্যমত,দান সাদাকা করেন।বাড়ির সম্পদ যার যার ভাগ করা হয়েছে।নিজেদের শহরের সম্পদ,জায়গা,বাসা,এসব নিজেদের অধীনে রাখার উপায় তো একমাত্র হিবা করা।এটা কি জায়েজ?

মেয়ের নিরাপত্তার বিষয় আছে।তার দেখাশোনার কেউ নেই।মা বাবার করনীয় কি?মেয়েক হিবা/সব কিছুর নমীনি করলে কি গুনাহ হবে?

করনীয় কি?


মা বাবা মারা যাওয়ার পর তাদের যদি কোন পুত্র সন্তান না থাকে তাদের সম্পূর্ন সম্পত্তি কি তাদের একমাত্র মেয়ের নামে লিখে দেয়া যাবে?মৃত্যুর আগে কি দেয়া যাবে সম্পূর্ন টা মেয়ের নামে?মেয়ের যেহেতু কোন গার্ডিয়ান নেই।তাদের অবর্তমানে যদি মেয়েকে দেয়া হয় তাহলে কি গুনাহগার হতে হবে মা বাবার?হেবার বিষয় সম্পর্কে জানতে চাই?

1 Answer

0 votes
by (588,060 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ভূমিকা
হযরত আবু উমামা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻗَﺪْ ﺃَﻋْﻄَﻰ ﻛُﻞَّ ﺫِﻱ ﺣَﻖٍّ ﺣَﻘَّﻪُ ، ﻓَﻠَﺎ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَﺍﺭِﺙٍ
নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক হক্বদারকে তার প্রাপ্য হক্ব (নির্ধারণ)করে দিয়েছেন।সুতরাং ওয়ারিছদের জন্য আর কোনো ওসিয়্যাত নেই।
অর্থাৎ-মূত্যুর পরে কাউকে কিছু দানের সিদ্ধান্ত নিলে সেটা ওসিয়ত হয়ে যায়,আর নিজ ওয়ারিছদের মধ্য থেকে কারো জন্য ওসিয়ত করা জায়েয নয়।তবে ওয়ারিছ ব্যতীত অন্য কারো জন্য এক তৃতীয়াংশ মালে ওসিয়ত করা জায়েয আছে। (সুনানে আবু-দাউদ-২৮৭০সুনানে তিরমিযি-২১২০সুনানে নাসাঈ-৪৬৪১ইবনে মাজাহ-২৭১৩)

হযরত আনাস ইবনে মালেক রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ فَرَّ مِنْ مِيرَاثِ وَارِثِهِ، قَطَعَ اللَّه ُمِيرَاثَهُ مِنَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ যে ব্যক্তি তার ওয়ারিছদেরকে মিরাছ প্রদান থেকে পলায়ন করবে(তথা-ওয়ারিছদেরকে মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবে)আল্লাহ তা'আলা ক্বিয়ামতের দিন তাকে জান্নাতের মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ-২৭০৩)

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦِ اﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ - ﻋَﻦِ اﻟﻨَّﺒِﻲِّ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻗَﺎﻝَ: «ﻻَ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَاﺭِﺙٍ، ﺇِﻻَّ ﺃَﻥْ ﻳَﺸَﺎءَ اﻟْﻮَﺭَﺛَﺔُ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ ওয়ারিছদের জন্য কোনো ওসিয়ত নেই,তবে যদি অন্যান্য সমস্ত ওয়ারিছরা রাজি থাকে তাহলে জায়েয আছে। (মিশকাত-৩০৭৪)

সুতরাং
(১)
যদি কারো শুধুমাত্র এক মেয়েই থাকে তাহলে তার মৃত্যর পর তার ঐ এক মেয়ে পূর্ণ সম্পত্তির অর্ধেক পাবে।
বাকী সম্পত্তি ঐ মৃতব্যক্তির অন্যান্য আসহাবে ফারায়েযরা পাবেন। যেমন, আপনাদের ভাই,ভাইয়ের সন্তান ইত্যাদি

(২)মৃত্যু পরবর্তী সম্পদকে  আল্লাহ তা'আলা নিজেই বন্টন করে দিয়েছেন।তাই কারো মৃত্যুর পর আল্লাহ তা'আলা প্রদত্ত বিধি-বিধানের আলোকেই তার সম্পদ বন্টন করতে হবে।এক্ষেত্রে কোনো ওয়ারিছকে তার নির্ধারিত অংশ ব্যতীত অতিরিক্ত কিছু দেয়া যাবে না বা তার ওসিয়ত করা যাবে না। জায়েয হবে না।তবে বাকী সমস্ত ওয়ারিছদের সম্মতিতে কোনো এক ওয়ারিছকে সমস্ত সম্পত্তি বা তার নির্ধারিত অংশের চেয়ে বেশী দেয়া যাবে। মৃত্যুর সময় এক তৃতীয়াংশ সম্পত্তিকে ওয়ারিছ ব্যতীত অন্য যে কারো জন্য ওসিয়ত করা জায়েয আছে।

হ্যা, যদি ব্যক্তি তার পূর্ণ সম্পত্তিকে তার ঐ মেয়ের নামে দিয়ে যায়,তাহলে তখন সে গোনাহগার হলেও তার মেয়ে পূর্ণ সম্পত্তির মালিক বনে যাবে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
মেয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে যদি কেউ তার মেয়েকে যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ তার জীবদ্দশায় লিখে দিয়ে যায়, অন্যান্য ওয়ারিছদেরকে বঞ্চিত রাখা উদ্দেশ্য না হয়, তাহলে হয়তো আল্লাহ ক্ষমা করে দিতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...