আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
202 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (13 points)
প্রিয় শায়েখ,
আসসালামু আলাইকুম।
আমার ছোট বোন এর স্বামী বিদেশে থাকে। মাসে মাসে যে টাকা পাঠায় তা দিয়ে আমার বোন বাসা ভাড়া দিয়ে সংসার চালাতে পারে না। সে নিতে চায় না, কিন্তু আমরা জোড় করে সাহায্য করি। প্রসংগত, তার ইনকাম ভালোই। জেদ্দা তে ফাস্ট ফুড এর দোকান আছে।
আবার বিয়ের সময় তার স্বামী বলেছিল বিদেশ নিয়ে যাবে, কিন্তু আজ ৪/৫ বছর হয়ে গেল এখন বলতেছে, বাচ্চা সহ (মেয়ে) প্লেন এর ভাড়া ২ জনের দেয়া লাগবে, টাকা নাই বলে নিচ্ছে ও না। কিন্তু বোনের ছেলে ১ জনকে কে নিয়েছে, এখন আরেক বোনের ছেলেকে ও নিচ্ছে। কিন্তু কেন জানি অনিহা তার স্ত্রী সন্তান কে নিতে।
আমি একটা চাকরী করি, আয়কর/ট্যাক্স মওকুপ পাওয়ার জন্য, সঞ্চয়পত্র কিনতে হয়, আমি চাচ্ছি এই ইন্টারেস্ট এর টাকা দিয়ে আমার বোন কে সাহায্য করতে, যাতে তার স্বামী আরো কিছু এড করে স্ত্রী সন্তান কে বিদেশ নিয়ে যাবে।
আমার প্রশ্ন হচ্ছেঃ
১।  ব্যাঙ্ক এর ইন্টারেস্ট / সঞ্চয়পত্রের ইন্টারেস্ট/সুদ এর টাকা ছোট বোন কে দিয়ে সাহায্য করলে যায়েজ হবে কি? যেমন তার পাসপোর্ট করে দেয়া, প্লেন ফেয়ার এ সাহায্য করা ইত্যাদি ?

২। আমি সুদ এর টাকা, নিজে খরচ করতে চাচ্ছি না, সেক্ষেত্রে, অন্য কাউকে কি সাহায্য করতে পারি এটা সুদের টাকা না বলে?

৩। আর কি কি ভাবে কাজে এই ইন্টারেস্ট এর টাকা কাজে লাগাতে পারি?

৪। মায়ের একটা সখ আছে, কিন্তু প্রয়োজন না, সখ এর জিনিসটা কি কিনে দিতে পারি? জায়েয হবে?

৫। একজন তার চিকিৎসা এর জন্য সাহায্য চাইছে, তাকে কি এই টাকা থেকে দিতে পারি। (সওয়াবের আশা না করে) ?

৬। ইন্টারেস্ট এর টাকা কি মসজিদ এ দান করতে পারি (সওয়াবের আশা না করে)? কিন্তু সভাপতি, সেক্রিটারি তো জেনে যাবে, তাতে কি রিয়া হবে?

৭। গত ৮ বছরে আমার স্যালারী একাউন্টে ৫০০ - ১০০০ টাকা করে ইন্টারেস্ট এর টাকা অনেক মিশে গেছে, হিসাব নাই বা সেভাবে আগে চিন্তা করি নি? আমি কি তওবা করলে হবে? ডিটেইল বলবেন প্লিজ।

1 Answer

+1 vote
by (573,870 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://www.ifatwa.info/21691/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
হারাম সম্পদ ভক্ষন কারীর ইবাদত দোয়া কিছুই কবুল হয়না।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
 (معارف السنن، كتاب الطهارة، باب ما جاء لا تقبل صلاة بغير طهور-1/34، الفتاوى الشامية، باب البيع الفاسد، مطلب فى من ورث مالا حراما-7/301، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/554، بذل المجهود، كتاب الطهارة، باب فرض الوضوء- 1/37

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না হলে সেটি ফকিরদেরকে সদকাহ করে দিতে হবে।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
আপনার বোনের উপর যদি যাকাত ফরজ না হয়,তিনি যদি গরিব হোন, সেক্ষেত্রে তাকে আপনি তাকে তার যেকোনো প্রয়োজনে ব্যাংক এর ইন্টারেস্ট / সঞ্চয়পত্রের ইন্টারেস্ট/সুদ এর টাকা দিতে পারবেন।

(০২)
গরিব,মিসকিনকে আপনি দিতে পারবেন।
সূদের টাকা না বললেও সমস্যা নেই।

তবে আপনি এক্ষেত্রে ছওয়াবের নিয়ত করবেননা।

(০৩) 
জনকল্যান মূলক কাজ, যেমন
রাস্তাঘাট,ব্রিজ,হাসপাতাল নির্মান ইত্যাদি কাজও করতে পারেন।

(০৪)
আপনি হালাল টাকায় তার এ শখের জিনিস ক্রয় করে দিতে পারবেন।
সমস্যা নেই।

(০৫)
তার উপর যাকাত ফরজ না হলে বা তার নিকট নেসাব পরিমান সম্পদ প্রয়োজন অতিরিক্ত না থাকলে তাকে এই টাকা দিতে পারবেন।

(০৬)
এ টাকা মসজিদে দেয়া যাবেনা।

(০৭)
আপনি তওবার পাশাপাশি  প্রবল ধারনার ভিত্তিতে একটি সংখ্যা নির্দিষ্ট করে সেগুলো সদকাহ করে দিবেন।

কেবলমাত্র তওবা যথেষ্ট নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (13 points)
edited by

প্রিয় শায়েখ,

আসসালামু আলাইকুম,
জাজাকাল্লাহু খাইরান। 

ব্যাঙ্ক ইন্টারেস্ট এর টাকা তো ফিরিয়ে দেয়ার সুযোগ নাই আমার জানামতে।

দয়া করে ১ নাম্বার, ৪ নাম্বার এবং ৬ নাম্বার আরও একটু ডিটেইল বলবেন?

 ১। আমার বোন এর স্বামী তো সোদি তে থাকে। আমরা ধারনা করি বোনের স্বামী এর আয় ভালোই।  জেদ্দা তে ফাস্ট ফুড এর দোকান আছে। আল্লাহ ই ভালো জানেন। আমার বোনের স্বামী তার বোনের ১ ছেলে (ভাগ্নে) কে নিয়ে গেছে, এবং এখন আরেক জন কে নিয়ে যাওয়ার চেস্টা করছে সোদিতে। কিন্তু কেন জানি অনিহা তার স্ত্রী সন্তান কে নিতে?

আবার বিয়ের সময় তার স্বামী বলেছিল বিদেশ নিয়ে যাবে, কিন্তু আজ ৪/৫ বছর হয়ে গেল নেয় নি, এখন বলতেছে, বাচ্চা সহ (মেয়ে) প্লেন এর ভাড়া ২ জনের দেয়া লাগবে, টাকা নাই বলে নিচ্ছে ও না।

এবং মাসে মাসে যে টাকা পাঠায় তা দিয়ে আমার বোন বাসা ভাড়া দিয়ে সংসার চালাতে পারে না। সে নিতে চায় না, কিন্তু আমরা জোড় করে সাহায্য করি।

সুতরাং আমার বোনের স্বামী এর ইনকাম সম্প্ররকে আমাদের আসলে কোন আইডিয়া নাই। 

তবে আমার বোনের কাছে কোন টাকা ই সঞ্চয় নাই, পারিবারিক কি জমি পাবে যেটা তার অংশ, সে গুলা ও এখন কোন সুরাহা হচ্ছে না পারিবারিকে মতানৈক্য না হওয়ার কারনে/বিক্রি করা যাচ্ছে না

এমতাবস্তায়, আমার ব্যাঙ্ক এর ইন্টারেস্ট / সঞ্চয়পত্রের ইন্টারেস্ট/সুদ এর টাকা ছোট বোন কে দিয়ে সাহায্য করলে যায়েজ হবে কি? যেমন তার পাসপোর্ট করে দেয়া, প্লেন ফেয়ার এ সাহায্য করা ইত্যাদি ?

৪। মায়ের একটা সখ আছে, কিন্তু প্রয়োজন না, আমার ব্যাঙ্ক ইন্টারেস্ট এর টাকায় কি মায়ের সখ এর জিনিসটা কি কিনে দিতে পারি? জায়েয হবে?

৬। আমি জানতাম, যে ইন্টারেস্ট এর টাকা মসজিদ এ দেয়া যায়, তাই গত বছর ইন্টারেস্ট এর টাকা (৫০০০) মসজিদ এ দান করে দিয়েছি (সওয়াবের আশা না করে)। এটা কি যায়েজ হবে। করনীয় কি?

আরও কিছু সম্পুরক প্রশ্নঃ 

৮। আমার ব্যাংক ইন্টারেস্ট এর টাকা দিয়ে কি আমি আমার জন্য কোন শখের জিনিশ কিনতে পারবো।  যায়েজ হবে?

৯। ইন্টারেস্ট এর টাকা দিয়ে কিছু কিনে আমার বোন দের কে গিফট দিতে পারবো? যায়েজ হবে?

১০। ইন্টারেস্ট এর টাকা দিয়ে কিছু কিনে অন্য কাউকে গিফট হিসাবে দিতে পারবো?যায়েজ হবে?

১১। ইন্টারেস্ট এর টাকা দিয়ে কি মাদ্রাসায় সাহায্য করতে পারবো?যায়েজ হবে?

১২। ইন্টারেস্ট এর টাকা দিয়ে কি কাউকে কোরান শিক্ষা/মাদ্রাসা শিক্ষা এ সাহায্য করতে পারবো? যায়েজ হবে?

একটু ডিটেইল বললে ভবিষ্যত পরিকল্পনা এর জন্য খুব সাহায্য হত। 

 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...