আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
85 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ। আমি বাসায় না জানিয়ে বিয়ে করেছিলাম।কিন্তু বাসায় কোনোমতে না মানার কারণে এইখানে সমস্যার কথা লিখে প্রশ্ন করেছিলাম আর আমাকে উপদেশ দেওয়া হয়েছে তালাক নিয়ে নিতে।ছেলেটার কোনো দোষ না থাকার সত্ত্বেও আমি ওর থেকে তালাক নিয়েছি।আমি প্রথমে পালানোর চিন্তা করেছিলাম।কিন্তু পালালে মা কষ্ট পাবে,পরিবারের সাথে আত্নীয় সম্পর্ক ছিন্ন হতে পারে আর যেহেতু পর্দা করার চেষ্টা করতেছি পালালে সমাজের মানুষ পর্দাকে হেয় করবে পর্দার অমর্যাদা হবে এইসব ভেবে আর পালিয়ে যায় নি।

আর এইদিকে পরিবারও ওকে কোনোদিন মানবে বলে দিছে।আম্মুও অনেক বকাঝকা করছে অভিশাপ দিবে বলেছে
এইসব কথা চিন্তা করে তালাক নিয়েছি। ছেলেটার কোনো দোষ ছিল না

১)আমি আমার এই ত্যাগের কারণে কি আল্লাহর কাছে উত্তম প্রতিদান পাব? নাকি বিনা দোষে ছেলেটার কাছ থেকে তালাক চাওয়ার কারণে জবাবদিহিতা করতে হবে?

২)তালাকের ৪-৫দিন পর যদি আমার হায়েজ হয়ে যায় তাহলে কি এক কুরু অতিক্রম হয়ে গেছে ধরতে হবে?এরপর বাকি ২বার হায়েজ হলে ইদ্দত শেষ হবে?আমার যেহেতু হায়েজ নিয়মিত হয়না এইক্ষেত্রে কি ৩মাস পর ইদ্দত শেষ হবে?

৩)বাসায় জানে না আমার বিয়ের কথা এখন আম্মু কোথাও বেড়াইতে যাওয়ার জন্য জোর করলে যদি যেতে হয় তাহলে কি গুনাহ হবে?(স্বামীর বাড়িতে ইদ্দত পালন সম্ভব না যেহেতু ওর ফ্যামিলি বড়ুয়া আর বিয়ের কথা জানেনা)

৪)আমার শুধু নাকে একটা নাকফুল আছে ইদ্দতকালে ওইটা কি খুলে ফেলতে হবে?

৫)ওর সাথে মাঝেমধ্যে নরমাল কথা বললে কি গুনাহ হবে?

৬)ও বলছে আমি ওকে জাহান্নামের দিকে টেলে দিয়েছি কারণ ও নওমুসলিম বাসায় এখনো জানে না।এখন ও কি করবে কোথায় যাবে বুঝতেছে না। আমি কি এর জন্য দায়ি হব?

৭)ওর জন্য কোনো পরামর্শ থাকলে দিন বাসায় জানে না ও মুসলিম এখন ও কোথায় যাবে?

৮)"আমি এই কাজটা করলে আমার আম্মুকে আমাকে এই অভিশাপটা দিবে বলছে"কাউকে এই কথা বললে কি গীবত হবে?

1 Answer

0 votes
by (676,360 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
এই প্রশ্ন ও আগের প্রশ্নের বিবরণ মতে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে শরীয়ত মানার স্বার্থে আপনার এই ত্যাগের কারনে আল্লাহ তায়ালা আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিবেন,ইনশাআল্লাহ। 

আপনাকে জবাবদিহি করতে হবেনা।
,
(০২)
তালাকের পর যেই হায়েজ শুরু হয়েছে,উক্ত হায়েজ ১ম হায়েজ বলে গন্য হবে।
এর পর আপনার দুইবার হায়েজ হলেই আপনার ইদ্দত শেষ হবে।

হায়েজ প্রতিমাসে না আসলে তিন মাস অতিক্রম করলে হবে।

(০৩)
তালাকপ্রাপ্তা এবং বিধবা মহিলার জন্য স্বামীর বাড়িতেই ইদ্দত পালন করা ওয়াজিব। বিশেষ ওজর ব্যতীত স্বামীর বাড়ি ছাড়া বাবার বাড়িতে কিংবা অন্য কোথাও গিয়ে ইদ্দত পালন করা জায়েয নেই।

সুরা আত ত্বলাকের ০১ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

৬৫:১ یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ اِذَا طَلَّقۡتُمُ النِّسَآءَ فَطَلِّقُوۡهُنَّ لِعِدَّتِهِنَّ وَ اَحۡصُوا الۡعِدَّۃَ ۚ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ رَبَّکُمۡ ۚ لَا تُخۡرِجُوۡهُنَّ مِنۡۢ بُیُوۡتِهِنَّ وَ لَا یَخۡرُجۡنَ اِلَّاۤ اَنۡ یَّاۡتِیۡنَ بِفَاحِشَۃٍ مُّبَیِّنَۃٍ ؕ وَ تِلۡکَ حُدُوۡدُ اللّٰهِ ؕ وَ مَنۡ یَّتَعَدَّ حُدُوۡدَ اللّٰهِ فَقَدۡ ظَلَمَ نَفۡسَهٗ ؕ لَا تَدۡرِیۡ لَعَلَّ اللّٰهَ یُحۡدِثُ بَعۡدَ ذٰلِکَ اَمۡرًا ﴿۱﴾

হে নবী, (বল), তোমরা যখন স্ত্রীদেরকে তালাক দেবে, তখন তাদের ইদ্দত অনুসারে তাদের তালাক দাও এবং ‘ইদ্দত হিসাব করে রাখবে এবং তোমাদের রব আল্লাহকে ভয় করবে। তোমরা তাদেরকে তোমাদের বাড়ী-ঘর থেকে বের করে দিয়ো না এবং তারাও বের হবে না। যদি না তারা কোন স্পষ্ট অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়। আর এগুলো আল্লাহর সীমারেখা। আর যে আল্লাহর (নির্ধারিত) সীমারেখাসমূহ অতিক্রম করে সে অবশ্যই তার নিজের ওপর যুলম করে। তুমি জান না, হয়তো এর পর আল্লাহ, (ফিরে আসার) কোন পথ তৈরী করে দিবেন। 

তবে স্বামীর বাড়িতে যদি পর্দার সাথে থাকার ব্যবস্থা না হয় কিংবা তার জন্য সেখানে থাকা বেশি কষ্টকর বা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয় তাহলে সে বাড়ি ত্যাগ করে বাবার বাড়ি কিংবা অন্য কোনো নিরাপদ স্থানে ইদ্দত পালন করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে যেখানে যাবে সেখানেই ইদ্দত পূর্ণ করবে। ইদ্দত শেষ হওয়ার আগে বিনা জরুরতে সেখান থেকে অন্যত্র থাকা জায়েয হবে না।

হযরত ফাতেমা বিনতে কায়স রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেছি, আমার স্বামী আমাকে তিন তালাক দিয়েছে এখন আমি আমার সাথে ব্যভিচারের ভয় করছি। তখন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে স্থানান্তর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
(সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৪৮২; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ১৯১৬৮)
,
আরো জানুনঃ 

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার যেমন এভাবে নিজ বাসায় ইদ্দত পালন করাও ঠিক হচ্ছেনা,বাহিরে বের হওয়াও ঠিক হচ্ছেনা।

(০৪)
হ্যাঁ, সেটা খুলে ফেলতে হবে।

(০৫)
হ্যাঁ, গুনাহ হবে।

(০৬)
আপনি শরীয়ত সম্মত কারনে এই বিবাহ বিচ্ছেদ করলে আপনার গুনাহ হবেনা।

(০৭)
আপনাকে বিবাহ যে করেছিলো,তারপর তিনি কোথায় যেতেন?

তাকে স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপনের দিকে যেতে হবে।
প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

(০৮)
যদি কেহ সেই অভিশাপ দেয়া থেকে তাকে বাধা দিতে পারে,বুঝাতে পারে,তাহলে তার কাছে উক্ত ব্যাক্তি যেনো অভিশাপ না দেয়,সেই নিমিত্তে এটি বলা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...