ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ فَقَالَ: هَلَكْتُ، قَالَ: «وَمَا أَهْلَكَكَ؟» قَالَ: وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي فِي رَمَضَانَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَعْتِقْ رَقَبَةً» قَالَ: لَا أَجِدُ، قَالَ: «صُمْ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ» قَالَ: لَا أُطِيقُ، قَالَ: «أَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًا»
অনুবাদ- হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। রাসূল সাঃ জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাকে কে ধ্বংস করেছে? সাহাবী বললেন, রমজানে আমি আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেলেছি। রাসূল সাঃ তাকে বললেন, তাহলে এর বদলে একটি গোলাম আযাদ কর। সাহাবী বললেন, আমি এতে সক্ষম নই। নবীজী সাঃ বললেন, তাহলে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখ। সাহাবী বললেন, আমি এতেও সক্ষম নই। তখন রাসূল সাঃ বললেন, তাহলে তুমি ৬০ জন মিসকিনকে খানা খাওয়াও। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৬৭১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৬৯৪৪, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-১১০৭, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৯৪৯, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৫২৭}
★★রোযার কাফফারা আদায় করার পদ্ধতিঃ
আপনি যদি শারিরিকভাবে শক্ত সামর্থ হয়ে থাকেন। তাহলে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখতে হবে। মাঝখানে রোযা ভাঙ্গা যাবে না। যদি মাঝখানে রোযা ভেঙ্গে ফেলেন তাহলে আবার প্রথম থেকে ৬০ দিন গণনা করতে হবে। এভাবে ষাট দিন রোযা রাখলে আপনার রোযা ভঙ্গের কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। আর যদি লাগাতার ষাট দিন রোযা রাখতে সক্ষম না হন, তাহলে প্রতি রোযার জন্য সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা গরীবদের দান করে দেয়া আবশ্যক। তথা ষাট রোযার জন্য ষাটটি সদকায়ে ফিতির পরিমাণ অর্থ দান করা আবশ্যক।
প্রতি রোযার পরিবর্তে একজন গরীবকে দুবেলা খাবার খাওয়াবে অথবা পৌনে দু’ কেজি গমের মূল্য সদকা করবে। এটাকে বলা হয় ফিদিয়া ।
যেমন সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা যদি ৬০ টাকা হয়। তাহলে আপনার তিন হাজার ছয়শত টাকা দান করা আবশ্যক। কিন্তু মনে রাখতে হবে রোযা রাখতে সক্ষম হলে ফিদিয়া আদায় করলে তা আদায় হবে না।
বিস্তারিত জানুনঃ
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার উপর যদি রোযার কাফফারা আবশ্যক হয়,সেক্ষেত্রে কাফফারা হিসেবে রমজান মাস ব্যাতিত অন্য সময়ে লাগাতার ৬০ দিন রাখতে হবে।
,
আপনার লাগাতার ৬০ টি রোযা রাখার শক্তি না থাকলে ৬০ টি সদকায়ে ফিতর সমপরিমাণ টাকা গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।
এই টাকা আপনি রমজান মাসেও দান করে দিতে পারবেন।
তার মানে রোযা রাখার মাধ্যমে কাফফারা রমজানে আদায় করতে পারবেননা,তবে টাকা দেয়ার মাধ্যমে কাফফারা রমজান মাসে আদায় করতে পারবেন।
★একাধিক রোজার কাফফারা একাধিক ব্যক্তিকে দেয়া যাবে।
★রোজার কাফফারা আদায়ের ক্ষেত্রে কাফফারা গ্রহণকারী ব্যক্তির জীবনযাত্রার মান বিবেচনা করতে হবে, সে ফকির/মিসকিন হলে তাকে কাফফারা দিতে হবে।
★কাফফারা গ্ৰহণককারী কাফফারার অর্থ দিয়ে খাদ্য না খেয়ে অন্যান্য প্রয়োজন মিটাতে পারবেন।
(০২)
সমাজে কেহ কেহ নিষেধ করলেও চিংড়ি মাছের পিঠের রগ খাওয়াকে ইসলামী স্কলারগন হালাল বলেছেন।
(০৩)
হ্যাঁ, হাদীয়া দেয়া যাবে।
নিষেধাজ্ঞা নেই।
(০৪)
ইন্সুইরেন্স এর টাকায় যেহেতু সূদ রয়েছে।
তাই সূদি এই অর্থ যাতায়াতে খরচ করাও হারাম।
এতে হারাম টাকায় হজ্জ করা হয়েছে,বলে গন্য হবে।
হজ্জ কবুল হবেনা।
হারাম টাকায় হজ্জ করা জায়েজ নেই।
আরো জানুনঃ
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
হারাম টাকায় হজ্জ করলে হজ্জ আদায় হয়ে যাবে ঠিকই,তবে কোনো ছওয়াব পাবেনা।
আরো জানুনঃ-
(০৫)
হজ্জ্ব ও বৈদেশিক লেনদেনের জন্য বৈধ যেকোনো পদ্ধতিতে মানি এক্সচেঞ্জ করা জায়েজ।
মানি এক্সচেঞ্জ করার ক্ষেত্রে নির্ধারিত স্থান থেকে না করে অন্য কারোর কাছ থেকে কম বা বেশি অর্থ দিয়ে মানি এক্সচেঞ্জ করলে গুনাহ হবেনা।
তবে এক্ষেত্রে সরকারী নিষেধাজ্ঞা থাকলে গুনাহ হবে।
(০৬)
আরাফার দিনে হজ্জব্রত পালন কারী গন রোযা রাখতে পারবেনা।
তবে যারা হজ পালন করছেনা,তারা রোযা রাখতে পারবে।
আরাফার দিনের রোযা ও তার ফজিলত বহু হাদীস দ্বারা প্রমানিত।
(০৭)
পছন্দ হয়নি,এটি বলাই যথেষ্ট।
(এতে মনে মনে অর্থ নিতে হবে যে তার দ্বীনদারিত্ব পছন্দ হয়নি।)
এখানে মিথ্যা বলারও দরকার হবেনা,নিজেদের রিয়াও হবেনা।