আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
113 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (37 points)
আসসালামু আলাইকুম
হুজুর,

আশা করি ভাল আছেন।

ইস্তেখারার স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানালে ভাল হয় :

আমি প্রায় এক বছর যাবৎ একজন অনেক বড় আলেম এবং সমকালীন বুযুর্গের সোহবতে আসা যাওয়া করেছি। এতদিনে উনার প্রতি আমার খুব ভালবাসাও তৈরি হয়ে গেছে এবং উনার কাছে জুমআর নামাজ পড়তে না গেলে মন মানতেই চায় না। আর হে, উনি তাসাঊফ জগতের পীর সাহেব এবং উনার কাছে অনেক আলেম উলামাও আসা যাওয়া করে থাকেন। আর উনার কাছে আমি যত ই যাই তত ই আমার ইমান আমলের তরক্কি হয়ে থাকে আলহামদুলিল্লাহ। এখন আমি বাইয়াত হওয়ার আগে উনার সাথে আমার মুনাসাবাত বিষয়ে ইস্তেখারা করেছি টানা ৩ দিন। মুনাসাবাত দেখার পর উনার খানকায় টানা দীর্ঘদিন সময় লাগানোর নিয়ত করেছিলাম। তিনদিন ই স্বপ্ন দেখেছি নিচে তা দেয়া হলো:

১ম দিনের স্বপ্ন: মনে হলো হজরত ওয়ালা দা:বা: এর সামনেই আছি আর আমার ঘাড়ের ডানপাশে কেমন যেন ঘর্ষণের অনুভূতি হলো, মুয়ানাকা করলে যেমন হয় হয়ত এমন অনুভূতি ছিল। আর আমি হজরতজীর সামনে খুশিতে দাড়িয়ে আছি এবং তিনিও খুশি এটা বুঝলাম, হাসিমুখ দুজনার। হঠাৎ ঘুম ভেংগে গেলো।

২য় দিনের স্বপ্ন: মনে হচ্ছিল কোনো খানকাতে সময় লাগানোর জন্য গিয়েছি।এজন্য ঐ খানকাতেই অবস্থান করছিলাম। এরপর ঘুম ভেংগে গেল।

৩য় দিনের স্বপ্ন: মনে হলো একটা খানকাতে  দীর্ঘদিন যাবৎ থাকতেছি ইসলাহের জন্য। স্বপ্নে মনে হচ্ছিল সেটা আমার মহাব্বতের সেই হজরজীর-ই খানকাহ। এরপর ঘুম ভেংগে গেলো।

ইস্তেখারার ফলাফল জানালে ভাল হয়।

জাজাকাল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার ইস্তেখারা পজিটিভ বলেই মনে হচ্ছে।
আপনার জন্য উক্ত শায়েখের সাহচর্য উত্তম বলেই মনে হচ্ছে।

তবে এক্ষেত্রে পরামর্শ থাকবেঃ নিম্নের শর্ত গুলি সেই পীর সাহেবের মধ্যে পাওয়া যায় কিনা?
যদি পাওয়া যায়,তাহলে তার মুরিদ হয়ে তার সোহবতে থাকতে পারেন।

হক্কানী, কামিল পীর হতে হলে খাঁটি ঈমানদার হতে হবে, গুনাহমুক্ত জীবন যাপন করতে হবে। সুন্নত তরিকা মোতাবেক চলতে হবে, নবীওয়ালা জিন্দেগি ও নবীওয়ালা আমল করতে হবে। 

মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন,

اَلَاۤ اِنَّ اَوۡلِیَآءَ اللّٰہِ لَا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَ لَا ہُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ﴿ۚۖ۶۲﴾  الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ کَانُوۡا یَتَّقُوۡنَ ﴿ؕ۶۳﴾ 

 ‘জেনে রেখো, আল্লাহর ওলিদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। (তারাই আল্লাহর ওলি) যারা ঈমান আনে ও তাকওয়া (পরহেজগারি) অবলম্বন করে।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৬২-৬৩)

আয়াত গুলোর ব্যাখ্যায় রয়েছেঃ
আল্লাহর অলী হওয়ার জন্য একটিই উপায় রয়েছে, আর তা হচ্ছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রঙে রঞ্জিত হওয়া, তার সুন্নাতের হুবহু অনুসরণ করা। যারা এ ধরনের অনুসরণ করতে পেরেছেন তাদের মর্যাদাই আলাদা। 

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহর এমন কিছু বান্দা রয়েছে যাদেরকে শহীদরাও ঈর্ষা করবে। বলা হলোঃ হে আল্লাহর রাসূল! তারা কারা? হয়ত তাদের আমরা ভালবাসবো। রাসূল বললেনঃ “তারা কোন সম্পদ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ব্যতীতই একে অপরকে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালবেসেছে। নূরের মিম্বরের উপর তাদের চেহারা হবে নূরের। মানুষ যখন ভীত হয় তখন তারা ভীত হয় না। মানুষ যখন পেরেশান ও অস্থির হয় তখন তারা অস্থির হয় না।” তারপর তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন। [ইবনে হিব্বানঃ ৫৭৩, আবু দাউদঃ ৩৫২৭]

‘কছদুস সাবীল’ নামক কিতাবে হাকিমূল উম্মত হজরত আশরাফ আলী থানভি (রহ.) খাঁটি পীর চেনার ১০টি আলামত লিখেছেন।
১. সুন্নতি লেবাস : মাথা থেকে পা পর্যন্ত লেবাস, পোশাক, ওঠাবসা পুরো সুন্নত মোতাবেক হওয়া কামেল পীরের জন্য জরুরি।

২. কোরআন-হাদিসের পর্যাপ্ত জ্ঞান। 

৩. আমলকারী : শুধু পর্যাপ্ত এলেম থাকলে হবে না, শুধু সুন্নত থাকলে হবে না; বরং ওই পীরের মধ্যে পর্যাপ্ত আমলও থাকতে হবে। 

৪. ইখলাস থাকা : তাঁর মধ্যে এখলাস থাকতে হবে। 

৫. দুনিয়াবিমুখতা : তাঁর মধ্যে দুনিয়াবি লোভ থাকবে না। তিনি লোভী হবেন না।

৬. আখলাক : তাঁর মধ্যে এমন আখলাক থাকবে, যে আখলাক দ্বারা দ্বিনের ব্যাপারে তাঁর মধ্যে শিথিলতা থাকবে না। হক কথা বলতে কাউকে ভয় করবেন না। 

৭. নামাজে মনোযোগী : নামাজ ও জামাতের পাবন্দি করবেন। জামাতের মধ্যে তিনি অলসতা করবেন না। তিনি নামাজের ব্যাপারে শক্ত থাকবেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) ইন্তেকালের আগে অসুস্থ অবস্থায় চারজন ব্যক্তির কাঁধে ভর করে মসজিদ-ই-নববীর জামাতে হাজির হয়েছেন। 

৮. চোখের হেফাজত : সে ব্যক্তি চলাফেরায়, ওঠাবসায় তাঁর চোখের হেফাজত করবেন। 

৯. পর্দা করা। গায়রে মাহরাম মেইনটেইন করে কথা বলা।

১০. নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত করা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...