আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
111 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (27 points)
১.হুজুর আজকে একটি ভিডিও দেখছিলাম ইয়াজিদ সম্পর্কে ,  সেখানে বলা হয় ইয়াজিদ এর শাসনামলে তিনটি বড় ধরনের অন্যায় কাজ হয়েছে। ইমাম  হোসাইন রাঃ শহিদ হয়েছেন। তার বংশের অনেক মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।  মদিনায় গনহত্যা করা হয়েছে।  মক্কা আক্রমন করা হয়েছে। হুজুর এই কথা গুলো ভিডিও তে শোনার সময় আমি মনে মনে   ইয়াজিদকে শুয়োরের বা.... বলে গালি দেই। এবং আমি সাথে সাথে ইস্তিগফার পড়ি।      আমি মনে করেছি যে, ইয়াজিদের নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ভিডিও শেষে বুজতে পারি যে, ইয়াজিদের শাসনামলে এই ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তিনি কোন বিচার করেন নি।ইয়াজিদ সম্পর্কে   আরো ভিডিও দেখে বুজতে পারি যে, অনেক ইমামগন বলেছেন যে,  আমরা তাকে ভালোওবাসিনা   আবার গালমন্দও  করব না। হুজুর আমার এভাবে মনে মনে গা লি দেওয়ার কারনে আমার ঈমানের কোন সমস্যা হবে?

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/42937/  ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِّن قَوْمٍ عَسَىٰ أَن يَكُونُوا خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِّن نِّسَاءٍ عَسَىٰ أَن يَكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّ ۖ وَلَا تَلْمِزُوا أَنفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ ۖ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ ۚ وَمَن لَّمْ يَتُبْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ [٤٩:١١]

মুমিনগণ,কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম। (সূরা হুজরাত, আয়াত-১১)

 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

 

"ইয়াজিদ" হযরত মুয়াবিয়া রাঃ এর সন্তান ছিলেন।

মুয়াবিয়া রাঃ মারা যাওয়ার পর তার হাতেই মুসলিম জাহানের নেতৃত্ব ছিলো।

তার শাসন আমলে হযরত হুসাইন রাঃ কারবালার ময়দানে শাহাদত লাভ করেছিলেন।

যেহেতু তার শাসন আমলেই এহেন কাজ হয়েছিলো,তাই অনেকেই হত্যার তার দিকেই দেন।

 

প্রশ্নে উল্লেঝিত বিষয় সম্পর্কে জানার উপর আমাদের দ্বীন ও ঈমান নির্ভরশীল নয়। তাই এ বিষয়ে বেশি ঘাটাঘাটি করার কোন প্রয়োজন নেই। একথা দিবালোকের ন্যায় সত্য যে, হযরত হুসাইন রাঃ উপর জুলুম হয়েছে। তাকে অন্যায়ভাবে শহীদ করা হয়েছে। তিনি হকের উপর ছিলেন। মাজলুম ছিলেন।

 

কিন্তু এর জন্য এজিদ কতটুকু দায়ী? এ বিষয়টি যেহেতু কুরআন ও হাদীস দ্বারা নয়, বরং ইতিহাসের উপর নির্ভরশীল। আর এ বিষয়ক অধিকাংশ ইতিহাসই শিয়াদের দ্বারা লিখিত। আর ইতিহাসে সত্য মিথ্যার মারাত্মক মিশ্রণ রয়েছে। তাই এজিদের অবস্থান নিয়ে সরাসরি কিছু না বলাই উচিত। চুপ থাকাই সবচে’ নিরাপদ।

 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

https://ifatwa.info/24647/  ফতোয়ায় উল্লেখ রয়েছেঃ

হযরত হুসাইন রাঃ কে হত্যার জন্য দায়ী মধ্যবর্তী কিছু মুনাফিক এবং ক্ষমতা পিপাসুরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ইবনে যিয়াদ,শিমার ইবন যিল জাওশান, ইত্যাদি ব্যক্তিবর্গ। ইয়াজিদ কিন্তু হত্যার নির্দেশ দেননি।

 

ইয়াজিদ সম্পর্কে আমাদের আকিদা হল, তিনি সাধারণ মুসলামানের মতই একজন একজন মুসলমান। উনাকে ভালোমন্দ কোনো কিছু না বলাই উত্তম। সবার মত উনার হিসাব নিকাশও আল্লাহ করবেন। কেননা, হাদীসে এসেছে, ইস্তাম্বুলে যে দল প্রেরণ নদী পথে জিহাদের উদ্দেশ্যে বের হবে, তারা সবাই জান্নাতি। আর ঐ দলের সেনা প্রধান ইয়াযিদ ছিল। সুতরাং উনার সম্পর্কে ভালোমন্দ কোনো কিছু না বলাই শ্রেয়।

 

মোল্লা আলী কারী রহঃ লিখেছেনঃ

لم يلعن أحد من السلف يزيد بن معاوية سوى الذين اكثر والقول فى التحريض على لعنه وبالغوا فى أمره وتجاوزوا عن حده كالرافضية والخوارج وبعض المعتزلة… فلا شك ان السكوت أسلم (شرح الأمالى لملا على القارى-27-28)

এজিদের উপর সালাফের কেউ লানত বর্ষণ করেননি। রাফেজী, খারেজী এবং কতিপয় মুতাজিলা ছাড়া। যারা বাচালতার ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘণকারী।

فلا شك ان السكوت اسلم

এতে কোন সন্দেহ নেই যে, তার ব্যাপারে চুপ থাকাই নিরাপদ। [শরহুল আমালী, মোল্লা আলী কারীকৃত-২৭-২৮]

 

এ কারণেই আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের আকীদা হল, এজিদের উপর লানতও বর্ষণ করা হবে না। আবার হযরত হুসাইন রাঃ এর বিপরীতে তার প্রশংসাও করা হবে না। [আপ কি মাসায়েল আওর উনকা হল-১/৪০২-৪০৩]

(কিছু তথ্য সংগৃহীত।)

 

উল্লেখ্য যে, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইয়াজিদকে গালি দেওয়ার কারণে তার পিতাকেও গালমন্দ করা হয়ে গিয়েছে। আর তিনি একজন বিশিষ্ট সাহাবী ছিলেন। তবে যেহেতু এর পর আপনি অনুতপ্ত। তাই আশা করা যায় আল্লাহ তায়ালা আপনাকে মাফ করে দিবেন। ফলে আপনার ঈমানের কোনো সমস্যা হবে না ইনশাআল্লাহ। তবে পরবর্তীতে কাউকে গাল মন্দ করা থেকে বিরত থাকবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 200 views
...