#ইম্পর্ট্যান্ট, সবাইকে পড়তে উৎসাহ দিচ্ছি
___________
কখন ঘুমানো উত্তম?
বায়োলজি কি বলে? এ নিয়ে ডা. সাইফুল আলম ভাইয়ের সাথে এক পোস্টের কমেন্টে আলাপ হয়৷ সেই আলাপচারিতা তুলে দিচ্ছি৷
সারমর্মঃ
★ রাতের খাবার মাগরিবের আগে বা পরে খেতে হবে।
★ এশার পর ৯টা,১০ টার আগে ঘুমিয়ে যাওয়া উত্তম।
★ আড়াইটার (২.৩০) দিকে ঘুম থেকে উঠে যাওয়া।
★ ভোরে না ঘুমানো।
★ সকাল ১১ টার আগে শর্করাজাতীয় খাবার না খাওয়া। ডিম, ভিনেগার, চিনি ছাড়া চা ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে এই সময়টায়।
★ সকাল ১১-১২ টায় ব্রেকফাস্ট & লাঞ্চ একসাথে করা।
★ মিল সেরে আধঘন্টা কাইলুল্লাহ (ঘুম/বিশ্রাম) করা, তারপর যোহরের প্রস্তুতি নেয়া।
★ রাতে ঘুমানোর ৩-৪ ঘন্টা আগে খাওয়া। গুরুপাচ্য খাবার এভয়েড করা।
আলাপচারিতাঃ
Mushfiqur Rahman Khan: Only monophasic sleep এ অভ্যস্ত হলে প্রতিদিন কত ঘন্টা ঘুমাতে হবে?
,
Mohammad Saiful Alam Talukder: এটা নির্ভর করে আপনি কোন সময়ে ঘুমাচ্ছেন তার ওপর। আপনি যদি ঈশার পরপর অর্থাৎ ৯ টা বা ১০ টা থেকে ঘুমান তবে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা ঘুম আপনার জন্য যথেষ্ট হবে। ১০ টায় ঘুমালে দেখবেন স্টেরয়েড হরমোনের প্রভাবে ২ টা বা আড়াইটায় ঘুম ভেঙ্গে যাবে। তখন উঠে তাহাজ্জুদ পড়বেন। ফজর পড়ে, সূর্যোদয়ের পর ইশরাক পড়বেন। সারাদিন আপনার স্ট্যামিনা থাকবে তুঙ্গে। যোহরের আগে দুপুরের খাবার খেয়ে চাইলে নামাজের আগে আধাঘন্টা গড়াগড়ি বা কাইলুল্লাহ করে নিতে পারবেন।
তবে একটা ব্যাপার যারা দায়ী তাদের ঘুমে আল্লহ বরকত দান করেন। তাদের অল্প কয়েক মিনিটের ঘুমেও আল্লহ সারা রাতের বরকত দিতে পারেন।
ভুল সময়ে ঘুমালে ডীপ স্লিপ হয় না। এই জন্য বায়োলজিক্যাল ক্লক অনুযায়ী স্লীপ ফিজিওলজি সবার জানা উচিৎ। এ্যাবনরমাল স্লিপ প্যাটার্ণ ইম্মিউনিটি ডিপ্রেস করে, হরমোনাল ইমব্যালেন্স তৈরি করে। ফলে থাইরয়েড প্রবলেম, ডায়াবেটিস, হার্ট ব্লক, স্ট্রোক, হাইপারটেনশান, ED, ডিপ্রেশান ইত্যাদি তৈরি হয়।
,
Muhammad Ahnaf Tahmid Saad: আমিও এটা খেয়াল করেছি। এশার পরে ঘুমালে ৪ ঘন্টার আশে পাশে ঘুমায়। এমন কেন হয়? স্টেরয়েড হরমোনের ব্যাপারটা আরো বিস্তারিত বলতে পারবেন কঢট করে প্লিজ। জানতে অনেক আগ্রহী। আমি ভাবতাম এটা শুধুমাত্র আল্লাহর কুদরতে হয়। আর রাতে এরকম ৪-৫ ঘন্টা ঘুমালে আর দিনে আধা ঘন্টার ন্যাপ নিলেই কি এনাফ? সবাই যে বলে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে। এখানে সবাই বলতে আমি রেলিজিয়াস স্কলার বুঝাচ্ছি। islamqa, ইমাম গাজ্জালি, সবাই ৮ ঘন্টার কথা বলেছেন৷ কিন্তু আবার রুটিন দিয়েছেন এরকম। এশার পর ঘুমিয়ে রাতে উঠে যাওয়া৷ তাহলে ৮ ঘন্টা কিভাবে হয়। আর দিনের বেলার যে কাইলুল্লাহ এটা আসলে কখন করলে উত্তম হয়। দুপুর ২-৩ টার দিকে? নাকি সকাল ১১ টার দিকে। সময় পেলে জানাবেন প্লিজ।
,
Mohammad Saiful Alam Talukder: ৮ ঘন্টা কি আসলেই ঘুমানো সম্ভব? এত ঘুমালে ইবাদত কখন করবেন? সূর্য ডোবার সাথে সাথে ঘুমানোর জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন রিলিজ শুরু হয়ে যায়। শহুরে জীবনে ব্রাইট লাইটে এই হরমোন এর রিলিজ হ্যাম্পার হয়। একারনেই দেখবেন যে গ্রামে যেখানে কারেন্ট নেই সেখানে কুপি বা হারিকেনের আলোয় সন্ধ্যায়ই ঘুম চলে আসে। তাই এই সময় জেগে থাকলে শরীরে স্ট্রেস পড়ে। ৯ টা ১০ টায় ঘুমালে ২ টার পর থেকে স্টেরয়েড হরমোন রিলিজ শুরু হয়, ফলে ঘুম পাতলা হতে শুরু করে। তাই এই সময় ঘুম থেকে উঠে যাওয়া উত্তম। স্টেরয়েড ইঞ্জেকশান নিয়ে বসে থাকলে শরীরে যেমন চর্বি জমে যায়, তেমনি এই সময় ঘুমিয়ে থাকলে শরীরের হার্ট, বিভিন্ন রক্তনালীতে চর্বি জমবে। একারনেই যারা রাত জাগে আর ভোর রাতে ঘুমিয়ে কাটায় তারা হার্ট ব্লক, হাইপারটেনশান এ ভোগে। উচিৎ হচ্ছে এই সময় অর্থাৎ ২-৩ টার দিকে ঘুম থেকে উঠে যাওয়া। তারপর তাহাজ্জুদ আদায় করে তেলাওয়াত করে, ফজর পরে কিছুক্ষন জিকির করে ইশরাকের পরে প্রয়োজনে রেস্ট নেয়া। প্রায় সকাল ১১ টা পর্যন্ত স্টেরয়েড হরমোনের ইফেক্ট থাকে। তাই এই সময় ব্যায়াম করা উপকারী। এইসকালে কাজের বা রিজিকের বরকত হয় বলে হাদীসে উল্লেখ আছে। ১১ টার আগে না ঘুমানো উত্তম হবে। এই সময় কার্ব জাতীয় খাবার খাওয়াও নিষেধ। এই সময় ইনসুলিন সিক্রেশান কম হয়, তাই এই সময় কার্ব জাতীয় খাবার যেমন ভাত, রুটি, মিষ্টি ইত্যাদি খেলে শরীরে শর্করার পরিমান আনকন্ট্রোল্ড ভাবে বেড়ে যাবে, শরীর ব্যাক্টেরিয়া ভাইরাসের আক্রমনে পর্যুদস্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে। ব্রেকফাস্ট ও লাঞ্চ একসাথে ১১-১২ টায় করলে ভাল, এই সময় লাঞ্চ করে আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা ঘুমিয়ে তারপর যোহরের নামাজের প্রস্তুতি।
ঠিক একই ভাবে রাতের খাবার এমন সময় খেতে হবে ও এতটুকু খেতে হবে যেন তা ঘুমানোর আগেই স্টমাক থেকে বের হয়ে যায়। স্টমাক ক্লিয়ারেন্স টাইম ৩-৪ ঘন্টা। তাই ১০ টায় ঘুমালে ৭ টায় ডিনার সারতে হবে। এবং গুরু পাচ্য খাবার এ্যাভয়েড করতে হবে।
,
Muhammad Ahnaf Tahmid Saad: তাহলে এশার পর পর ঘুমিয়ে পড়লে (যেমন ৯ঃ৩০) রাতের খাবারের জন্য বেটার সময় মাগরিবের আগে হলে ভাল হয় নাকি মাগরিবের পর। কারন সাড়ে ৬ থেকে ৭ টা এই সময়ের আশে পাশে মাগরিব হয়। ৬ টার দিকে খেলে বিফোর মাগরিব হবে, আর বাদ মাগরিব করতে হলে সাড়ে ৭ টার মত বেজে যাবে৷ আর আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস বলেছেন। আপনার কমেন্ট গুলো একসাথে কপি করে এই গ্রুপেই পোস্ট আকারে দিতে পারি কি? অনেকেই এগুলো জানতে চাইতে পারে। আর সকালে, ১১ টার পূর্বের সময়টায় কি রকম খাবার খাওয়া যায়। আমি মুড়ি খাই, এতে কি সমস্যা আছে?
,
Mohammad Saiful Alam Talukder: সেক্ষেত্রে মাগরিবের আগে পার্ফেক্ট হবে। তবে মাগরিব আর আওয়াবীনের মাঝেও হতে পারে। সকালে মুড়ি খাওয়া যাবে না। চিনি ছাড়া চা খেতে পারেন। ডিম খেতে পারেন। পানিতে ভিনেগার মিশিয়ে খেতে পারেন। সোজা কথায় সকালে শর্করা এ্যাভয়েড করবেন। তবে আপনি যদি শারিরীক শ্রমের কাজ করেন, যেমন সকালে অনেক দূর হাটা, বা এ ধরনের কিছু তবে আপনি সকালে ভাত খেলেও সমস্যা নেই। আমি শহুরে সেডেন্টারি লাইফের মানুষের অনুযায়ী বলছি।
হ্যা পোস্ট দিতে পারেন।
© আত তাআউন গ্রুপ থেকে সংগৃহীত