আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
670 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (38 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ।
যেই শাইখ উত্তর করবেন,আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাকে এর সর্বোত্তম প্রতিদান পৌঁছে দিন।।
হায়েয শুরু হয়নি এমন মেয়েকে তার বাবা যদি খাহেশাতের সাথে জড়িয়ে ধরে কোলে নিয়ে,(দ্বীনের বুঝ নেই বাবার,মাসায়েল জানা নাই,আর মেয়ে ছোট হওয়ায় এসব মাসায়েলের বিষয়ে পড়াশোনা করা ছিলো না) আর মেয়ের অনিচ্ছা সত্ত্বে এরুপ করে থাকে,তবে কী সেই মেয়ের মা ও বাবার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে?
এখন মেয়ে বড় হয়েছে,বিবাহিত।সেক্ষেত্রে তার বাবাকে এই নিয়ে জিজ্ঞেস করা অনেক ইতস্ততের ব্যাপার। এই মাসায়ালা জানা গেলে মেয়ে তার মাকে অন্তত সুপরামর্শ দিতে পারবে যে তাদের স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক অটুট আছে কি না,না আলাদা থাকতে হবে।

1 Answer

0 votes
by (566,760 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছে 

أخبرنا إسماعیل بن عیاض، حدثنا سعید بن أبی عروبة، من قیس بن سعید، عن مجاهد في الرجل یفجر بالمرأة قال: إذا نظر إلی فرجها فلا یحله له أمها ولا بنتها، أخرجه محمد في الحجج أیضًا ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۲

যার সারমর্ম হলো যদি কেহ কোনো মহিলার লজ্জাস্থানের দিকে দৃষ্টিপাত করে,তাহলে সেই মহিলার মেয়ে বা তার মাকে সে কোনোদিন বিবাহ করতে পারবেনা।

ই'লাউস সুনান ১১/১৩১

أخبرنا أبوحنیفة، عن حماد، عن إبراهیم، قال: إذا قبل الرجل أم أمرأته أو لمسها من شهوةٍ حرمت علیه امرأته، أخرجه محمد في الحجج ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۱)

যার সারমর্ম হলো কেহ যদি তার শাশুড়িকে চুম্বন করে,অথবা উত্তেজনার সাথে স্পর্শ করে,তাহলে স্ত্রী তার উপর চিরজীবনের জন্য হারাম হয়ে যাবে।      

হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে।

শর্তগুলো হল,
১–

সরাসরি খালি গায়ে বা এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। যদি এমন মোটা কাপড় পরিধান করে থাকে যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভূত না হয়, তাহলে নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।

فى الدر المختار- أو لمس ) ولو بحائل لا يمنع الحرارة
وقال ابن عبدين– ( قوله : بحائل لا يمنع الحرارة ) أي ولو بحائل إلخ ، فلو كان مانعا لا تثبت الحرمة ، كذا في أكثر الكتب (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-3/107-108)

যার সারমর্ম হলো যদি কাপড় পরিধান অবস্থায় হয় তাহলে যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। 
তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবে।   

( যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে,যেটা শরীরের গরমি ভাব অনুভব হয়,তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানীত হবে। ) 

অন্যথায় হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা।     

২–

স্পর্শ করলে পুরুষ মহিলা যেকোন একজনের উত্তেজনা অনুভুত হওয়া।

পুরুষের উত্তেজনা অনুভূত হওয়ার লক্ষণ হল গোপনাঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।

وفى رد المحتار- قوله (بشهوة) اي ولو من احدهما،
وفى الدر المختار- وحدها فيهما تحرك آلته أو زيادته به يفتى
وفي امرأة ونحو شيخ كبير تحرك قلبه أو زيادته (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/107-109)  
সারমর্মঃ
উত্তেজিত হওয়ার সীমা হলো লিঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।
মহিলাদের ক্ষেত্রে কলব তথা অন্তর কেঁপে উঠা, আগে থেকেই কেঁপে উঠে থাকলে স্পর্শ করার পর কাঁপা বেড়ে যাওয়া। 

৩-
স্পর্শ,দৃষ্টিপাত করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। 
আগে বা পরে উত্তেজিত হলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা।      

وفى الدر المختار- والعبرة للشهوة عند المس والنظر لا بعدهما
وفى رد المحتار- ( قوله : والعبرة إلخ ) قال في الفتح : وقوله : بشهوة في موضع الحال ، فيفيد اشتراط الشهوة حال المس ، فلو مس بغير شهوة ، ثم اشتهى عن ذلك المس لا تحرم عليه (رد المحتار-كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/108)

যার সারমর্ম হলো স্পর্শ,দৃষ্টিপাত করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। যদি স্পর্শ করার সময় কেউ উত্তেজিত না হয়, তাহলেও নিষিদ্ধতা প্রমাণিত হবে না। 

বিস্তারিত জানুনঃ 

البحرالرائق 
'وقد يقال: إنها دخلت تحت حكم الاشتهاء فلا تخرج عنه بالكبر ولا كذلك الصغيرة وليس حكم البقاء كالابتداء۔ وفي الخانية: وقال الفقيه أبو الليث: مادون تسعسنين لا تكون مشتهاة وعليه الفتوى ا هـ
 فأفاد أنه لا فرق بين أن تكون سمينة أو لا، ولذا قال في المعراج: بنت خمس لا تكون مشتهاة اتفاقا وبنت تسع فصاعدا مشتهاة اتفاقا وفيما بين الخمس والتسع اختلاف الرواية والمشايخ، والأصح أنها لا تبثت ( تثبت ) الحرمة'۔[3/106،دارالمعرفہ]
সারমর্মঃ
৫ বছরের মেয়েকে সর্বসম্মতিক্রমে মুশতাহা বলা যাবেনা, ৯ বছরের মেয়ে বা তার চেয়ে বেশি বয়সী মেয়েকে সর্বসম্মতিক্রমে মুশতাহা বলা হয়।
৫-৯ এর মাঝ বয়সি মেয়েকে সহীহ কওল মোতাবেক মুশতাহা বলা হবেনা,তাই এতে হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবেনা।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন ,

সেই সময়ে যদি উক্ত মেয়ের বয়স ৯ বছরের কম হয়,তাহলে এখানে কোনোভাবেই হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবেনা। 

তারা বাবা মায়ের বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো সমস্যা হবেনা।

কিন্তু যদি সেই সময়ে উক্ত মেয়ের পূর্ণ ৯ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়স হয়,তাহলে উপরোক্ত সমস্ত পূর্ণ ভাবে পাওয়া গেলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানিত হবে।

হুরমতে মুসাহারাহ হওয়ার জন্য অনেক শর্ত রয়েছে।যা আপনি উক্ত লিংকে গিয়ে পড়ে আসতে পারবেন।
প্রশ্নে উল্লেখিত মেয়ের যদি সেই সময়ে পূর্ণ ৯ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়স হয়,তাহলে উপরোক্ত হুরমতের মাস'আলার সমস্ত শর্ত সম্পর্কে যেভাবেই হোক পূর্ণ ভাবে তার বাবাকে অবগত করতে হবে,মাসয়ালাটি দেখাতে হবে।।তার জন্য এভাবে তার মেয়েকে স্পর্শ করা,কোলে নেয়া উচিত হয়নি। 

তার বাবা হুরমতের মাস'আলা পড়ার পর যদি কিছু না বলে, তাহলে তার বাবা মার বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো সমস্যা হবে না। সেই মেয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (38 points)
উল্লেখ্য,মেয়ের সঠিক জানা নেই,তার বাবা কী উদ্দেশ্যে বা কী মনে রেখে এমন করেছিলো,আর এখন জিজ্ঞেস করাটাও সম্ভব নয় অত্যন্ত ইতস্ততার জন্য। তবে উত্তেজনাবশত বা কামভাবের জন্য হতে পারে এই ধারণা সে করে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...