আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
115 views
in সালাত(Prayer) by (98 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ
১. বিগত বেশ কিছুদিন যাবত নামাজে তিলাওয়াতে আটকে যাই!  কিছু আয়াত একবারে তিলওয়াতে সম্পুর্ণ শেষ করতে পারি না! আয়াতের মাঝে থেমে যাই, এক আয়াতের কিছু অংশ বার বার তিলাওয়াত করতে হয়, মানে থেমে যাওয়া অংশ থেকে আর সামনে আগাতে পারি না! এভাবে করে নামাজ আদায় করতে খুশু খুজু থাকে না!
অথচ নামাজ ছাড়া তিলাওয়াতে আটকাই না! আগে নামাজে এরকম আটকে যেতাম না! এখন এরকম কেন হচ্ছে বুঝতে পারছি না!  নামাজে এমনিতেও সময় লাগতো আগে থেকেই বেশি, আর এই আটকে যাওয়ার কারণে এখন আরও অতিরিক্ত সময় লাগে যেটা  সব কাজে ব্যাঘাত ঘটায়!  সবাই বিরক্তও হয়!
এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় আছে কোনো উস্তাজ?!
মাখরাজ আলহামদুলিল্লাহ পারি কিন্তু দেখা যায় নামাজে কিছু মাখরাজেও প্রব্লেম হচ্ছে! সঠিক মাখরাজ আসে না, অথচ সেই মাখরাজ নামাজ ছাড়া উচ্চারণে আসে!

২.  নামাজে র উচ্চারণে তাশদীদ থাকলে অথবা সাকিন থাকলে হয়তো খুব বেশি তাকরর হবে নয়তো কোনো তাকরর ই হবে না এমন হয়!  সেই র যুক্ত শব্দটা সহিহ ভাবে উচ্চারণের জন্য বার বার তিলাওয়াত করতে হয়!  এক্ষেত্রে করনিয় কি? নামাজে সমস্যা হয় এতে?!

৩. দ্বদ উচ্চারণেও  দেখা যায় দ্বদ এর মাখরাজ জিহবার কিনারা থেকে আসছে না, যতই চেষ্টা করি জিহবার আগা থেকে দ্বদ উচ্চারণ হয় নামাজে! অনেকবার চেষ্টা করার পরও ঠিক মাখরাজ হতে না আসলে ভুলভাবেই পড়ে যাই! এতে কি নামাজ হয়?!

দ্বদ এর মাখরাজ নামাজ ছাড়া উচ্চারণে আসে আলহামদুলিল্লাহ সম্পুর্ন সহিহ না হলেও জিহবার কিনারা থেকে আসে!  নামাজে এরকম হয়! মাঝে মাঝে আসে নামাজে কিন্তু আগে সবসময় নামাজেও আসতো!
৪. নামাজে  আমার ফোকাস থাকে সম্পুর্ন মাখরাজের দিকে আর মাখরাজের দিকে খেয়াল রেখে অন্য দুনিয়াবি চিন্তা ভাবনা মাথায় আসে!  কোনোভাবেই মেইন ফোকাস নামাজে আনতে পারি না, যে আল্লাহ আমাকে দেখছেন! যদিও হরফের মাখরাজ খেয়াল করে নামাজ আদায় করি তাও নামাজে মন থাকে না!  নামাজে মন এদিক সেদিক থাকলে তো নামাজ আদায় হয় না জানি!  এতে কি গুনাহ হবে?
৫. নামাজে তিলাওয়াতে বার বার উক্ত সমস্যাগুলোর জন্য নামাজে অনেক বেশি সময় লাগছে! আগেও সময় লাগতো কিন্তু এখন আরো বেশি লাগে! যেমন জোহরের দশ রাকাআত পড়তে আগে ৪০ মিনিট লাগতো আর এখন এই সমস্যার জন্য ১ ঘন্টার বেশি লাগে!   দেখা যায় নামাজ পড়তে পড়তে  বিরক্তি চলে আসে নামাজের প্রতি!  নামাজ পড়তে ভালো লাগে না! ক্লান্ত বা হাপিয়ে যাই এমন মনে হয়!   এতে কি গুনাহ হবে আমার?!
৬. সত্যি বলতে গেলে নামাজকে ভয় লাগে এখন! এক ওয়াক্ত পড়ে শেষ করতে পারলে মনে হয় বেচে গেসি এরকম! অথচ অনেক ইচ্ছা করে অনেক বেশি ইবাদাত করতে, যখনই নামাজ পড়তে যাই,  তখন এতো সময় লাগে যে আগ্রহ হারিয়ে ফেলি! এতে কি আমার গুনাহ হচ্ছে?!  কিভাবে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি জানতে চাচ্ছি?!!!
৭.মনে হয় আল্লাহ আমাকে পছন্দ করেন না, তাই ইবাদত করার তাওফিক পাচ্ছি না! সবাই কত কম সময়ে কত কত ইবাদাত করে!  আর আমি ফরজ গুলোই ঠিক ভাবে আদায় করতে পারি না! এতো সময় লাগে আর নিজের উপরও বিরক্ত হয়ে যাই! পরিবারের লোকজনও বিরক্ত হয়!  কি করবো আমি?!
জাযাকাল্লাহ খইরন

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
যদি তিলাওয়াত করার সময় কুরআন পড়তে গিয়ে কেহ আটকে আটকে যায় এবং কষ্ট হয়, তার জন্য রয়েছে অনেক বড় ফযীলত। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
আয়েশা সিদ্দীকা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

الْمَاهِرُ بِالْقُرْآنِ مَعَ السّفَرَةِ الْكِرَامِ الْبَرَرَةِ، وَالّذِي يَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَيَتَتَعْتَعُ فِيهِ، وَهُوَ عَلَيْهِ شَاقّ، لَهُ أَجْرَانِ.

যারা উত্তমরূপে কুরআন পড়বে তারা থাকবে অনুগত সম্মানিত ফিরিশতাদের সাথে। আর যে কুরআন পড়তে গিয়ে আটকে আটকে যায় এবং কষ্ট হয়, তার জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সওয়াব। 
(সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭৯৮)

নবীজীর এ হাদীসটি একদিকে যেভাবে তিলাওয়াতে পারদর্শী ব্যক্তিদের জন্য সুসংবাদ প্রদানকারী তেমনি কুরআন পড়তে যাদের কষ্ট হয়, মুখে আটকে আটকে যায়, তাদের জন্যও এ বাণী আশা সঞ্চারক এবং উৎসাহব্যঞ্জক। এ ধরনের ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী দ্বিগুণ সওয়াব। তিলাওয়াতের সওয়াব এবং তিলাওয়াতের জন্য যে কষ্ট হয় সেই কষ্টের সওয়াব। 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার নামাজ হয়ে যাবে।
তবে শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে এভাবে থেমে যাওয়া যাবেনা।

(০২)
আসলেই যদি ১ম বার সঠিকভাবে উচ্চারণ না করা হয়,তাহলে ২য় বার উচ্চারণ করতে সমস্যা নেই।

তবে এমনিতেই সন্দেহের ভিত্তিতে এভাবে ২য় বার উচ্চারণ করা যাবেনা।

(০৩)
চেষ্টা করার পরেও সহীহ ভাবে না আসলে তাতে সমস্যা হবেনা।

(০৪)
ইচ্ছাকৃতভাবে মন এদিক সেদিক নিয়ে গেলে গুনাহ হবে।
তবে নামাজ হয়ে যাবে।

(০৫)
আপনি কোনো শুদ্ধ তিলাওয়াত কারীর স্বরণাপন্ন হোন,এভাবে এতো সময় নামাজে লাগাতে মনে হচ্ছে আপনার ওয়াসওয়াসা কাজ দিচ্ছে।
এতো সময় তো লাগার কথা নয়।
২/৩ মিনিট সময় কম বেশি হতে পারে,তাই বলে এক ওয়াক্ত নামাজ পড়তে ১ ঘন্টা লাগবে!
এটাতে সমস্যাই মনে হচ্ছে।

(০৬)
বেশি দীর্ঘ করায় আপনার মনে এখন এমন বিষয় আসছে।
যেই নামাজ ১০/১৫/২০ মিনিটের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা,সেখানে এক ঘন্টা লাগছে।

এই সমস্যার সমাধান হলেই ইনশাআল্লাহ প্রশ্নে উল্লেখিত "বেঁচে গেছি" এমন মনোভাব আসবেনা।
আল্লাহর মুহাব্বত,তার ইবাদতে মজা লাগানোর চেষ্টা ও দোয়া অব্যাহত রাখতে হবে।

(০৭)
৫ নং প্রশ্নের জবাবে দেওয়া পদ্ধতি অবলম্বন করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 171 views
+2 votes
1 answer 217 views
0 votes
1 answer 67 views
...