আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
95 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শাইখ কিয়ামতের পূর্বে সমাজের নেতাদের চরিত্র কেমন হবে তা আমি বিভিন্ন ওয়াজে শুনেছি

কিন্তু এই ধরণের হাদিস আমি খুঁজে পাচ্ছি না আমাকে একটু হাদিসের রেফারেন্স ও এই ধরনের নেতাদের যেকোনো ব্যপারে সর্মধন করা যাবে কিনা অথবা তাদের সর্মথন করলে তার কি পরিণতি হবে এইগুলো হাদিসগুলোর ব্যখ্যা আপনার মতো করে বুঝিয়ে দিবেন
ধন্যবাদ জাযাকাল্লাহু খাইর শাইখ আপনার দীর্ঘ হায়াত কামনা করি আল্লাহর নিকট

1 Answer

0 votes
by (574,440 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


শেষ যামানায় অযোগ্য, মূর্খ, নিচু মানুষেরা সমাজের নেতা হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا ضُيِّعَتِ الأَمَانَةُ فَانْتَظِرِ السَّاعَةَ ". قَالَ كَيْفَ إِضَاعَتُهَا يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " إِذَا أُسْنِدَ الأَمْرُ إِلَى غَيْرِ أَهْلِهِ، فَانْتَظِرِ السَّاعَةَ ".

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন আমানত নষ্ট হয়ে যাবে তখন কিয়ামতের অপেক্ষা করবে। সে বললঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমানাত কিভাবে নষ্ট হয়ে যাবে? তিনি বললেনঃ যখন কোন দায়িত্ব অযোগ্য ব্যক্তির উপর ন্যস্ত করা হবে, তখনই কিয়ামতের অপেক্ষা করবে। 
( বুখারী শরীফ ৬৪৯৬.আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৫২)

রাসূল (ছাঃ) বলেন,

لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَكُونَ أَسْعَدَ النَّاسِ بِالدُّنْيَا لُكَعُ ابْنُ لُكَعٍ-

 ‘যতক্ষণ না নিকৃষ্ট লোকের পুত্র নিকৃষ্টরা পৃথিবীতে ভাগ্যবান হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না’।
(তিরমিযী হা/২২০৯; আহমাদ হা/২৩৩৫১; মিশকাত হা/৫৩৬৫; ছহীহুল জামে‘ হা/৭৪৩১।)


অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) বলেন,

تَعَوَّذُوا بِاللهِ مِنْ رَأْسِ السَّبْعِيْنَ وَمِنْ إِمَارَةِ الصِّبْيَانِ. وَقَال لاَ تَذْهَبُ الدُّنْيَا حَتَّى تَصِيرَ لِلُكَعِ بْنِ لُكَعٍ

 ‘তোমরা আল্লাহর নিকট সত্তরের অধিক আয়ু প্রাপ্তি থেকে আশ্রয় চাও। আরো আশ্রয় চাও বালকদের নেতৃত্ব থেকে। তিনি আরো বলেন, দুনিয়া ধ্বংস হবে না যতক্ষণ না নিকৃষ্ট লোকের সন্তান নিকৃষ্টরা এর নেতৃত্ব দিবে।
(আহমাদ হা/১৫৮৬৯; মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/১১৯৬০।)

 তিনি আরো বলেন,

لَا تَذْهَبُ الْأَيَّامُ وَاللَّيَالِي حَتَّى يَكُونَ أَسْعَدُ النَّاسِ بِالدُّنْيَا لُكَعَ بْنَ لُكَعٍ 

‘দিন ও রাতের পরিসমাপ্তি হবে না যতক্ষণ না নিকৃষ্ট লোকের পুত্র নিকৃষ্টরা পৃথিবীতে ভাগ্যবান হবে। অর্থাৎ ততক্ষণ পর্যন্ত ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না’।
(মু‘জামুল আওসাত্ব হা/৬২৮; মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/১২৪৪৩; ছহীহুল জামে‘ হা/৭৪৩১।)

তিনি আরো বলেন,

 يُوشِكُ أَنْ يَغْلِبَ عَلَى الدُّنْيَا لُكَعُ بْنُ لُكَعٍ وَأَفْضَلُ النَّاسِ مُؤْمِنٌ بَيْنَ كَرِيمَتَيْنِ،

 ‘অতিসত্তর নিকৃষ্ট লোকের পুত্র নিকৃষ্টরা পৃথিবীতে বিজয়ী হবে। আর সে সময় দু’জন সম্মানী ব্যক্তির মধ্যে মুমিন ব্যক্তি সর্বশ্রেষ্ঠ হবে’।
(আহমাদ হা/২৩৭০১; মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/১২৪২৫; ছহীহাহ হা/১৫০৫।)

রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন,

سَيَأْتِى عَلَى النَّاسِ سَنَوَاتٌ خَدَّاعَاتٌ يُصَدَّقُ فِيهَا الْكَاذِبُ وَيُكَذَّبُ فِيهَا الصَّادِقُ وَيُؤْتَمَنُ فِيهَا الْخَائِنُ وَيُخَوَّنُ فِيهَا الأَمِينُ وَيَنْطِقُ فِيهَا الرُّوَيْبِضَةُ قِيلَ وَمَا الرُّوَيْبِضَةُ قَالَ الرَّجُلُ التَّافِهُ فِى أَمْرِ الْعَامَّةِ-

‘মানুষের নিকট এমন প্রতারণাপূর্ণ যুগ আসবে, যাতে মিথ্যাবাদীকে সত্যবাদীরূপে এবং সত্যবাদীকে মিথ্যাবাদীরূপে গণ্য করা হবে। যখন খেয়ানতকারীকে আমানতদার মনে করা হবে এবং আমানতদার আমানতে খেয়ানত করবে। যখন জনসাধারণের ব্যাপারে তুচছ লোক মুখ চালাবে। জিজ্ঞেস করা হ’ল, রুওয়াইবেযাহ কি? তিনি বললেন, তুচ্ছ লোক কর্তৃক জনসাধারণের নেতৃত্ব দেওয়া’।
(আহমাদ হা/৭৯১২; ইবনে মাজাহ হা/৪০৩৬; হাকেম হা/৮৪৩৯; ছহীহুল জামে হা/৩৬৫০।)

সুতরাং বুঝা গেলো যে,সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব মূর্খ লোকদের হাতে চলে যাওয়া ক্বিয়ামতের অন্যতম আলামত। 

নবী করীম (ছাঃ) কা‘ব বিন ঊজরাকে  বলেন,

أَعَاذَكَ اللهُ مِنْ إِمَارَةِ السُّفَهَاءِ قَالَ : مَا إِمَارَةُ السُّفَهَاءِ قَالَ :أُمَرَاءُ يَكُونُونَ بَعْدِى لاَ يَقْتَدُونَ بِهَدْيِى وَلاَ يَسْتَنُّونَ بِسُنَّتِى فَمَنْ صَدَّقَهُمْ بِكَذِبِهِمْ وَأَعَانَهُمْ عَلَى ظُلْمِهِمْ فَأُولَئِكَ لَيْسُوا مِنِّى وَلَسْتُ مِنْهُمْ-

‘আমি তোমার জন্য আল্লাহর নিকট মূর্খদের নেতৃত্ব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তিনি বললেন, মূর্খদের নেতৃত্ব কি? রাসূল (ছাঃ) বললেন, আমার পরে এমন কিছু লোক নেতৃত্বে আসবে, যারা আমার নির্দেশনা দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে না। আমার সুন্নাতকে বাস্তবায়ন করবে না। যারা তাদের মিথ্যাকে সত্যায়ন করবে এবং তাদের অত্যাচারে সহায়তা করবে, এরা আমার দলভুক্ত নয় এবং আমিও তাদের দলভুক্ত নই’।
(হাকেম হা/২৬৪; আহমাদ হা/১৪১৮১; ইবনু হিববান হা/৪৫১৪; ছহীহ আত-তারগীব হা/২২৪২।)

অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

مَا عَمَّرَ الْمُسْلِمُ كَانَ خَيْراً لَهُ، قَالَ بَلَى وَلَكِنِّى أَخَافُ سِتًّا إِمَارَةَ السُّفَهَاءِ وَبَيْعَ الْحُكْمِ وَكَثْرَةَ الشُّرَطِ وَقَطِيعَةَ الرَّحِمِ وَنَشَأً يَنْشَئُونَ يَتَّخِذُونَ الْقُرْآنَ مَزَامِيرَ وَسَفْكَ الدَّمِ-

‘মুসলিম যতদিন বেঁচে থাকবে সেটিই তার জন্য কল্যাণকর। তিনি বললেন, হ্যাঁ। কিন্তু ছয়টি বিষয়ের আশঙ্কা করছি। মূর্খদের নেতৃত্ব, বিচার-ফায়ছালা ক্রয়-বিক্রয় করা, পুলিশের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা,  নতুন কিছু সৃষ্টি হওয়া, কুরআনকে বাজনা হিসাবে গ্রহণ করা ও রক্ত প্রবাহিত করা’।
(আহমাদ হা/২৪০১৬; মু‘জামুল কাবীর হা/৬০; ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩৮৯০১; ছহীহাহ হা/৯৬৯।)

তিনি আরো বলেন,

مِنَ اقْتِرَابِ السَّاعَةِ أَنْ تُرْفَعَ الْأَشْرَارُ وَتُوضَعَ الْأَخْيَارُ، وَيُفْتَحَ الْقَوْلُ وَيُخْزَنَ الْعَمَلُ، وَيُقْرَأَ بِالْقَوْمِ الْمُثَنَّاةُ لَيْسَ فِيهِمْ أَحَدٌ يُنْكِرُهَا قِيلَ: وَمَا الْمُثَنَّاةُ؟ قَالَ: مَا اكْتُتِبَتْ سِوَى كِتَابِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ 

‘ক্বিয়ামত নিকটবর্তী হ’লে খারাপ লোকদের মর্যাদা দেওয়া হবে, সৎলোকদের অপমান করা হবে, কথার ঝুরি হবে ও আমল কমে যাবে। লোকদের নিকট মুছান্নাত পাঠ করা হবে কিন্তু কেউ বাধা দিবে না। জিজ্ঞেস করা হ’ল মুছান্নাত কি? তিনি বললেন, আল্লাহর কিতাব ব্যতীত অন্য কিছু দ্বারা যে বই লিখা হয়’।
(ছহীহাহ হা/২৮২১।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...