আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
260 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (-1 points)
আসসালামু আলাইকুম,

ওয়াজ-মাহফিলে অনেক বক্তাকে দেখা যায় খুব সুন্দর করে কুরআন তিলাওয়াত করে কিন্তু প্রতিটা আয়াত খুব টেনে পড়ার কারনে প্রতি আয়াতের পর থামতে হয় তখন শ্রোতারা সবাই চিৎকার করে আল্লাহ আকবার বলে।

অনেক সময় বক্তারাই ইচ্ছা করেই প্রতি আয়াতের পর থামে যাতে শ্রোতাদের থেকে আল্লাহ আকবার শুনতে পারে।
আমার কাছে এই ব্যাপারটি খুবই বিরক্তিকর মনে হয় কারন এতে তিলাওয়াত শোনার মনোযোগ একেবারে নষ্ট হয়ে যায়।

প্রশ্ন: এভাবে প্রতি আয়াতের পর চিৎকার দিয়ে আল্লাহ আকবার বলা শরীয়তসম্মত কীনা?

1 Answer

0 votes
by (671,960 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

কুরআনের ইহানত হয়,এমন কাজ করা কোনো ভাবেই উচিত নয়।  
وَعَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: إِنَّ اللهَ يَرْفَعُ بِهٰذَا الْكِتَابِ أَقْوَامًا وَيَضَعُ بِه اٰخَرِينَ

উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা এ কিতাব কুরআনের মাধ্যমে কোন কোন জাতিকে উন্নতি দান করেন। আবার অন্যদেরকে করেন অবনত।
(মুসলিম ৮১৭, ইবনু মাজাহ ২১৮, আহমাদ ২৩২, দারিমী ৩৪০৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫১২৫, শু‘আবূল ঈমান ২৪২৮, সহীহাহ্ ২২৩৯।)

وکذا قولہم بکفرہ، إذا قرأ القرآن في معرض کلام الناس، کما إذا اجتمعوا فقرأ فجمعناہم جمعًا، ولہ نظائر کثیرۃٌ في ألفاظ التکفیر کلہا ترجع إلی قصد الاستخفاف، بہ قال قاضیخان الفقاعی إذا قال عند فتح الفقاع للمشتري صل علی محمد ، قالوا: یکون آثمًا۔ (الأشباہ والنظائر ۱۰۴ زکریا)

যার সারমর্ম হলো কুরআনের অসম্মান হয়,অবমাননা হয়,এহেন জায়গায় কুরআন তেলাওয়াত করা গুনাহ হবে।

সুতরাং এটার মাধ্যমে যদি কুরআনের প্রতি ইহানত হয়,তাহলে তো জায়েজ নাই।
 
★★প্রশ্নে উল্লেখিত  এভাবে প্রতি আয়াতের পর চিৎকার দিয়ে আল্লাহ আকবার বলা শরীয়তসম্মত কিনা,সেটার পূর্বে জলি যিকিরের হুকুম জেনে নেই।  

শরীয়তের বিধান হলো জলি যিকির শর্ত সাপেক্ষে জায়েয আছে।

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার প্রতি বান্দার ধারণা অনুযায়ী আমি তার সাথে থাকি। সে যদি একাকী আমার যিকির করে তাহলে আমি গোপনে তাকে স্মরণ করি। সে কোনো মজলিসে আমার যিকির করলে আমি তাদের চেয়ে উত্তম মজলিসে তার আলোচনা করি।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৭৪০৫

ইমাম সুয়ূতী রাহ. বলেন, জামাতে যিকির করলে আওয়াজ তো হবেই।-আলহাবী লিলফাতাওয়া ২/১২৯
তবে এক্ষেত্রে বিশেষভাবে কয়েকটি শর্ত পূরণ করা অত্যাবশ্যক। যথা :
১. লোক দেখানোর উদ্দেশ্য থেকে মুক্ত হওয়া।
২. কোনো ব্যক্তির নামাযে বা অন্য কোনো ইবাদতে বিঘ্ন না ঘটানো।
৩. কোনো ব্যক্তির বিশ্রামে সমস্যা না হওয়া।
৪. আওয়াজ স্বাভাবিক হওয়া, চিৎকার করে বা অতিরিক্ত উঁচু আওয়াজে না হওয়া এবং মাইক ব্যবহার না করা।
৫. সাধারণভাবে এবং সহীহ-শুদ্ধ করে যিকির করা। যিকিরের শব্দ উচ্চারণে লাহনে জলী থেকে বেঁচে থাকা। যদি উল্লেখিত শর্তাবলি পাওয়া যায় তবে ইজতিমায়ী যিকির করতে কোনো অসুবিধা নেই। আর যদি কোনো ক্ষেত্রে উল্লেখিত শর্তসমূহ বা তা থেকে কোনো একটি শর্ত না পাওয়া যায় তাহলে সেক্ষেত্রে কাজটি শরীয়তসম্মত হবে না। উল্লেখ্য, বর্তমানে অনেক যিকিরের মজলিসে উল্লেখিত শর্তগুলোর অনেক কিছুই লঙ্ঘিত হতে দেখা যায়, যা সংশোধনযোগ্য।

(-রদ্দুল মুহতার ১/৬৬০; সিবাহাতুল ফিকরি ফিলজাহরি বিযযিকর, আবদুল হাই লাখনৌভী পৃ. ৩৮; নতীজাতুল ফিকরি ফিলজাহরি বিযযিকর, (আলহাবী লিল ফাতাওয়া ২/১২৮) ইমাম সুয়ূতী; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৫/১৫১)

সুতরাং এটার মাধ্যমে যদি কুরআনের প্রতি ইহানত হয়,তাহলে তো জায়েজ নাই।
যদি লোক দেখানো উদ্দেশ্য হয়,তাহলেও জায়েজ নাই।
আর যদি মনের আবেগে মুখ দিয়ে বের হয়,বা কুরআনের তা'জিমে এমন তাকবির বলে,লোক দেখানো উদ্দেশ্য না থাকে,তাহলে উপরে উল্লেখিত শর্তের ভিত্তিতে জায়েজ আছে।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...