আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
188 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।

(১)ওজু করার সময় বা নামাজ পড়ার সময় হঠাৎ করে মাথার মধ্যে, মনের মধ্যে এমন গান/কোন কথা চলে আসে যেইটায় শীরক কথাবার্তা থাকে। তখন মনে হয় যে কেউ বার বার সেই গানের লাইনটা/কথাটা মনে করানোর চেষ্টা করতেছে। আমি আমার মন অন্য দিকে নিতে চাইলেও পারি না। বার বার সেই কথাটাই মনে আসতে থাকে।
তখন আমার মনে হয় যে শিরক কথা মনে আসার কারনে ইমান চলে গেল কিনা। তাই প্রত্যেক ওয়াক্তের নামাজের আগে আমি কালিমা শাহাদাত পড়ি।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এরকম কথা মাথায় আসলে করনীয় কি?বারবার মাথায় আসে, মনে হয় কেউ আমাকে জোড় করে সেই গান গাওয়ানোর চেষ্টা করতেছে।  এসব গানের লাইন মনে আসার কারনে কি ইমান চলে যাবে?

(২)কাপড়ের মধ্যে যদি হাল্কা ভিজা কোন নাপাক লেগে থাকে কিন্তু সেই কাপড় নিংড়ানো হলে কাপড় থেকে কোন পানি বের হবে না এমন হয়। কিন্তু কাপড়টি ধরলে হাতে হাল্কা ভিজা অনুভব হয়, তাহলে কি সেই কাপড়টি ধরার ফলে হাত নাপাক হয়ে যাবে?

(৩)অনেক সময় হিন্দুদের কোন বিষয় সম্পর্কে পড়ার সময় (জানার জন্য/বুঝার জন্য) যদি শিরক কোন লাইন পড়ে ফেলি, তাহলে কি ইমান চলে যাবে? নাকি ইমান চলে যাওয়ার জন্য সেই লাইনটা বিশ্বাস করা প্রয়োজন?

(৪) নিয়ম-১ঃ আমি যতটুকু জানি, ফরজ গোসলে,ওজুর মত প্রথমে হাত ধোয়া থেকে মাথা মাসেহ পর্যন্ত করে তারপর সম্পুর্ন গা ভিজিয়ে গোসল করে পা ধুতে হয়।
আমি যদি এভাবে করিঃ সম্পুর্ন গা ভিজিয়ে গোসল করার পর তারপরে ওজু করি তাহলে কি ফরজ গোসল হবে?
নিয়ম-১ এর মত যদি না করি তাহলে কি ফরজ গোসল হবে নাকি হবে না?

(৫) মুখ দিয়ে কোন শিরক গানের লাইন উচ্চারণ করলে অথবা কান দিয়ে সেই গানের শিরক লাইন শুনলে অথবা সেই গান শুনে মনে মনে গাইলেই কি ইমান চলে যায়? নাকি ইমান চলে যাওয়ার জন্য সেই শিরক লাইনটা সম্পুর্নভাবে বিশ্বাস করতে হয়?

(৬) বালতিতে নাপাক কাপড় ধোয়ার পর সেই বালতির পানি ফেলে দেওয়ার পর আবার পানি ভরে ২য়বার সেই কাপড়টা ধোয়া হয়। এখন ১মবার ধোয়ার পর পানি ফেলে দেওয়ার পরও তো কিছু পানি বালতির পাশে লেগে থাকে। তাহলে সাথে সাথেই যদি কল ছেড়ে পানি ভরে ২য় বার ধুতে যাই, তাহলে সেই ১ম বারের কিছু পানি তো বালতিতে লেগেই ছিল। এইকারনে ২য় বার ভরা বালতির পানি তো নাপাক হয়ে যাওয়ার কথা।
আর তাহলে, তো ১ম বারের নাপাক পানি ফেলে দেওয়ার পর সেই বালতি আবার পানি দিয়ে খলিয়ে সম্পুর্ন শুকিয়ে তারপর ২য়বার ধুতে হবে। এমন হলে তো একটা কাপড় ধুতেই তো ১/২ ঘন্টা লেগে যাওয়ার কথা। কারন সেই বালতিতে কাপড় ১ম ধোয়া দেওয়ার পর পানি ফেলে দিলেও কিছু পানি পাশে লেগেই থাকে। সেটা শুকাতে হবে। তারপর ২য় বার সেই কাপড় আবার ধুতে হবে। এতে তো অনেক সময় লাগবে।
এখন তাহলে করনীয় কি?

(৭) অনেক সময় বাসে উঠলে ভীর থাকার কারনে দারিয়ে গেলে অনেকের পায়ের জুতা প্যান্টে বা গায়ে লাগে। এখন সেই জুতায় তো অদৃশ্য নাপাক থাকতে পারে। অনেক সময় কিছু বালুও প্যান্টে লাগতে পারে, যেটা জুতার নিচে থাকার কারনে সেই বালু কিছুটা আদ্র থাকে, একদম শুকনো তো থাকে না যেহেতু পায়ের নিচে থাকে। এখন সেই জুতা ও বালু কি নাপাক হিসেবে ধরবো? তাহলে তো চলাফেরা কষ্টকর হয়ে যাবে। প্রত্যেকবার বাসে উঠলে এবং এরপর বাসায় আসলে জুতা ধুতে হবে, নামাজ পড়ার জন্য প্যান্ট চেঞ্জ করতে হবে ও পুর্বের প্যান্ট ধুতে হবে যা কষ্টকর। তাহলে করনীয় কি?

(৮) নামাজ শেষে সালাম ফিরানোর সময় "আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ " বলা হয়।
এখানে কি "রাহমাতুল্লাহ" এর জায়গায় "রহমাতুল্লাহ" হবে? অর্থাৎ "র" এর পর কি "া- কার" কি হবে নাকি হবে না?
"রাহমাতুল্লাহ/রহমাতুল্লাহ" দুইটার যেকোনো একটা বললেই হবে? এখানে দুইটাই কি সঠিক নাকি কোন একটা ভুল আছে।
কেউ যদি "রাহমাতুল্লাহ" এর জায়গায় "রহমাতুল্লাহ" বলে নামাজ শেষ করে তাহলে তার নামাজ হবে না?
"া- কার" এর জন্য কি এই শব্দের মধ্যে অর্থের কোন পরিবর্তন হয়?

(৯) আমি জানি, যেই জিনিস শরীরের উপর কোন আবরন ফেলে না সেই জিনিস শরীরে লাগিয়ে ওজু করলে ওজু হবে। (ভুল হলে বলবেন)। এখন আমি জানতে চাচ্ছি যে, সাধারণ রান্নার সয়াবিন তেল/ সরিষার তেল যদি হাতে লাগে, সেই হাত যদি সাবান দিয়ে না ধুয়েই, ওজু করি তাহলে কি ওজু হবে?

(৯.১) অর্থাৎ সয়াবিন/সরিষার তেল কি হাতে/গায়ে লাগলে কি গায়ের উপর কোন আবরণ পড়ে?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
https://ifatwa.info/50282/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
মনের মাঝে শুধুমাত্র বাজে চিন্তা বা কুফরী চিন্তা আসলেই ব্যক্তি কাফের হয়ে যায় না।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ جَاءَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلُوهُ إِنَّا نَجِدُ فِي أَنْفُسِنَا مَا يَتَعَاظَمُ أَحَدُنَا أَنْ يَتَكَلَّمَ بِهِ . قَالَ ” وَقَدْ وَجَدْتُمُوهُ ” . قَالُوا نَعَمْ . قَالَ ” ذَاكَ صَرِيحُ الإِيمَانِ ”

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কতিপয় সাহাবী তাঁর সমীপে এসে বললেন, আমাদের অন্তরে এমন কিছু সংশয়ের উদয় হয়, যা আমাদের কেউ মুখে উচ্চারণ করতেও মারাত্মক মনে করে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেনঃ সত্যই তোমাদের তা হয়? তারা জবাব দিলেন, জ্বী, হ্যাঁ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এটই স্পষ্ট ঈমান। (কারণ ঈমান আছে বলেই সে সম্পর্কে ওয়াসওয়াসা ও সংশয়কে মারাত্মক মনে করা হয়।) [সহীহ মুসলিম-১/৭৯, হাদীস নং-১৩২, ইফাবা, হাদীস নং-২৪০]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। [সহীহ বুখারী-১/৩৪৩, হাদীস নং-২৫২৮, ইফাবা, হাদীস নং-২৩৬১]

★সুতরাং মনের মাঝে কুফরি চিন্তা আসলে ঈমানের কোনো ক্ষতি হবে না। এগুলো মূলত শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। তাই যখনই এ জাতীয় চিন্তার উদ্রেগ হবে, আল্লাহ তাআলার কাছে অভিশপ্ত শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে।
(ফাতহুল বারি ৫/১৬১)


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

(০২)
হাত নাপাক হয়ে যাবে।

(০৩)
বিশ্বাস করলে ঈমান চলে যাবে। 
তবে এগুলো ঈমানের জন্য ক্ষতিকর। 

(০৪)
উভয় ছুরতেই গোসল হয়ে যাবে।
তবে গোসলের পর আর এভাবে অযুর কোনো প্রয়োজনীয়তা থাকেনা।

গোসলের আগে অযু করলে এতে সুন্নাত আদায় হবে।

(০৫)
আকীদা বিশুদ্ধ রেখে উক্ত লাইন্ন বিশ্বাস না করলে এতে ঈমান চলে যাবেনা।
তবে এগুলো ঈমান বিধ্বংসি।

(০৬)
১ম বার ধোয়ার পর বালতিতে হালকা কিছু ফোটা পানি যে থাকে,এতে কোনো সমস্যা হবেনা।

এর মধ্যেই ২য় বার ধোয়ার জন্য সেই বালতিতে পানি নেয়া যাবে।

প্রশ্নের উল্লেখিত কষ্ট আবশ্যক নয়।
তবে সতর্কতামূলক তিন বারের প্রত্যেক বার সামান্য পাক পানি দিয়ে উক্ত বালতিয়ে ধুয়ে নিতে পারেন।

(০৭)
আপনি জুতা প্যান্টে নাপাকির কোনো চিন্হ,গন্ধ না পেলে সেটি নাপাক হবেনা।

(০৮)
রহমাতুল্লাহ বলাই সঠিক।
তবে উভয় ছুরতেই নামাজ হয়ে যাবে।


(০৯)
হ্যাঁ অযু হবে।
তবে সতর্কতামূলক উক্ত স্থান ডলে ধোয়া ধৌত করবেন।

(৯.১)
না,আবরন পড়েনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 162 views
...