জবাবঃ
হাফিজদের জন্য ফযিলতপূর্ণ যে সব হাদীসে কথা আপনি প্রশ্নে উল্লেখ করেছেন,
মিশকাতুল মাসাবিহ গ্রন্থে হাদীস গুলো এভাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «يُقَالُ لِصَاحِبِ الْقُرْآنِ اقْرَأْ وَارَتْقِ وَرَتِّلْ كَمَا كُنْتَ تُرَتِّلُ فِي الدُّنْيَا، فَإِنَّ مَنْزِلَكَ عِنْدَ آخِرِ آيَةٍ تَقْرَؤُهَا» " رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ.
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুরআন পাঠকারীকে কিয়ামতের দিন বলা হবে, পাঠ করতে থাকো আর উপরে উঠতে থাকো। (অক্ষরে অক্ষরে ও শব্দে শব্দে) সুস্পষ্টভাবে পাঠ করতে থাকো, যেভাবে দুনিয়াতে স্পষ্টভাবে পাঠ করতে। কারণ তোমার স্থান (মর্যাদা) হবে যা তুমি পাঠ করবে শেষ আয়াত পর্যন্ত (আয়াত পাঠের তুলনাগত দিক থেকে)। (আহমদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী)(মিশকাত-২১৩৪)
وَعَنْ مُعَاذٍ الْجُهَنِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «مَنْ قَرَأَ الْقُرْآنَ وَعَمِلَ بِمَا فِيهِ أُلْبِسَ وَالِدَاهُ تَاجًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ ضَوْؤُهُ أَحْسَنُ مِنْ ضَوْءِ الشَّمْسِ فِي بُيُوتِ الدُّنْيَا لَوْ كَانَتْ فِيكُمْ، فَمَا ظَنُّكُمْ بِالَّذِي عَمِلَ بِهَذَا؟» " رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُدَ.
মু‘আয আল জুহানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুরআন পাঠ করে এবং এর মধ্যে তাঁর হুকুম-আহকামের উপর ‘আমল করে, তার মাতাপিতাকে কিয়ামতের দিন একটি মুকুট পরানো হবে। এ মুকুটের কিরণ দুনিয়ার সূর্যের কিরণ হতেও উজ্জ্বল হবে, যদি এ সূর্য তোমাদের মধ্যে থাকত (তবে উপলব্ধি করতে পারতে)। যে ব্যক্তি এ কুরআনের উপর ‘আমল করে তার ব্যাপারে এখন তোমাদের কী ধারণা? (আহমদ, আবূ দাঊদ)(মিশকাত-২১৩৯)
وَعَنْ عَلِيٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «مَنْ قَرَأَ الْقُرْآنَ فَاسْتَظْهَرَهُ فَأَحَلَّ حَلَالَهُ، وَحَرَّمَ حَرَامَهُ أَدْخَلَهُ اللَّهُ الْجَنَّةَ وَشَفَّعَهُ فِي عَشَرَةٍ مِنْ أَهْلِ بَيْتِهِ كُلِّهِمْ قَدْ وَجَبَتْ لَهُ النَّارُ» " رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ، وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ، وَحَفْصُ بْنُ سَلْمَانَ الرَّاوِي لَيْسَ هُوَ بِالْقَوِيِّ يَضْعُفُ فِي الْحَدِيثِ.
‘আলী ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুরআন পড়ে ও একে মুখস্থ করে, এর হালালকে হালাল এবং হারামকে হারাম মেনে চলে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। তার পরিবারের এমন দশ ব্যক্তির জন্য তার সুপারিশ কবূল করবেন, যাদের প্রত্যেকেরই নিশ্চিত ছিল জাহান্নাম। (আহমদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী। কিন্তু ইমাম তিরমিযী বলেছেন, এ হাদীসটি গরীব। এর একজন বর্ণনাকারী হাফস ইবনু সুলায়মান হাদীস বর্ণনায় দুর্বল।)(মিশকাত-২১৪১)
মোল্লা আলী কারী রাহ ইমাম তিবীর ব্যখ্যাকে উল্লেখ করে বলেন,
ولا عبرة بطعن ابن حجر فيه وتضعيف كلامه وحمله على التكلفة والمنافاة لظاهر الحديث فإن التحقيق كما يستفاد من حديث: أن من عمل بالقرآن فكأنه يقرؤه دائما وإن لم يقرأه، ومن لم يعمل بالقرآن فكأنه لم يقرأه وإن قرأه دائما، وقد قال الله - تعالى - {كتاب أنزلناه إليك مبارك ليدبروا آياته وليتذكر أولو الألباب} [ص: ٢٩] فمجرد التلاوة والحفظ لا يعتبر اعتبارا يترتب عليه المراتب العلية في الجنة العالية
যে ব্যক্তি কুরআনী বিধানের উপর আ'মল করে নিবে,সে যেন সর্বদাই কুরআন পড়তেছে।যদিও সে কুরআন না পড়ে থাকুক।আর যে ব্যক্তি কুরআনের উপর আমল করবেনা,সে যেন কুরআন পড়েইনি।যদিও সে সর্বদা কুরআন পড়ে থাকুক না কেন।আল্লাহ তা'আলা বলেন,
এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে।(সূরা ছোয়াদ-২৯)
সুতরাং শুধুমাত্র কুরআন হিফজ বা কুরআন তিলাওয়াত জান্নতের সুউচ্ছা মর্যাদার জন্য যথেষ্ট হবে না।(বরং সাথে আ'মল থাকতে হবে) (মিরকাত-৪/১৪৭০)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বে-আমল হাফেজ রা কিয়ামতের দিন,আয়াত ভুলে যাবে।তাদের বিরুদ্ধে কুরআন অভিযোগ দায়ের করবে।তারা হাদীসে বর্ণিত এ সমস্ত ফযিলতের ভাগিদার হবে না।যারা কুরআনের হাফেয না,কিন্তু কুরআনী বিধানের উপর আ'মল করতেছে,আল্লাহ তা'আলা কিয়ামতের দিন,তাদেরকে সেই সব আয়াত স্বরণ করিয়ে দেবেন।ফলে তারা এক এক আয়াত করে পড়তে থাকবে এবং সিড়ি আরোহন করে করে জান্নাতে ফ্লোরসমূহকে আরোহন করতে থাকবে।