আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
140 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (61 points)
১/আসসালামু আলাইকুম, একজন ছেলের বউয়ের জন্য যেকোনো বিষয়ে শ্বশুর শাশুড়ীর অনুমতি নেওয়াটা কতটা জরুরি? তারা কি পুত্রবধুর অবিভাবক?
২/বিয়ের পর পুত্রের ব্যক্তিগত বা সাংসারিক জীবনে যেকোনো বিষয়ে কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারে?অনেক সময় দেখা যায় বিয়ের পরও ছেলে কে ছোট মনে করে তার সংসারের যেকোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে যার ফলে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সাংসারিক কলহল লেগে যায়।

৩/মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত এই কথার প্রভাব খাটিয়ে বিনা ওজরে স্ত্রীকে ছেড়ে দিতে বলাটা কতটা যুক্তিযুক্ত।
৪/আমাদের সমাজে প্রচল আছে বিয়ের পর মেয়ের মা বাবা বা তার পরিবার পর হয়ে যায় এই কথাটা কতটুকু যৌক্তিক?
৫/ বাবা মা যদি ছেলেকে তার সাংসারিক দায়িত্ব বা স্ত্রীর দায়িত্ব নিতে না দিয়ে বরং ছেলের বউকে যদি বলে তারা যতদিন বেঁচে আছে তাঁরা ই ছেলের বউয়ের দায়িত্ব নিবে এরুপ কাজ কতটা গ্রহণযোগ্য। স্ত্রী চায় স্বামী দায়িত্বশীল হোক ও তার ভরণপোষণ স্বামী নিজে দিবে।

1 Answer

0 votes
by (574,350 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
একজন ছেলের বউয়ের জন্য প্রত্যেক বিষয়ে শ্বশুর শাশুড়ীর অনুমতি নেওয়া আবশ্যক নয়।

তার অভিভাবক শ্বশুর শাশুড়ী নয়,তার স্বামী তার অভিভাবক। 

(০২)
বাবা মা চাইলে শরয়ী গন্ডির মধ্যে থেকে বিয়ের পর পুত্রের ব্যক্তিগত বা সাংসারিক জীবনে বিশেষ প্রয়োজনে কোনো বিষয়ে পুত্রের অনুমতিতে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
তবে স্ত্রীর হক যেনো নষ্ট না হয়।


প্রশ্নে উল্লেখিত হস্তক্ষেপ জায়েজ নয়। 

(০৩)
পিতা মাতা যদি কোনো শরয়ী কারন ছাড়াই তার স্ত্রীকে   তালাক দিতে বলে,তাহলে এই আদেশ মানা যাবেনা।
এটা গুনাহের আদেশ,কোনোভাবেই পিতামাতার গুনাহের আদেশ মানা যাবেনা।
এহেন ছুরতে স্বামী তার পিতা মাতাকে আপ্রান  চেষ্টা করে বুঝাতে থাকবে।

যদি তারা না বুঝে,তারপরেও কোনো ভাবেই স্ত্রীকে তালাক দিবেনা।
 (ফাতাওয়ায়ে উসমানী ১/১৯২,
ফাতাওয়ায়ে হক্কানিয়াহ ২/৪৪৯) 
,
★★তবে বাবা মা যদি শরয়ী কোনো কারনে তালাক দিতে বলে,তাহলে তালাক দিতে হবে।
হাদীস শরীফে এসেছে   
عَنْ مُعَاذٍ قَالَ: أَوْصَانِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَشْرِ كَلِمَاتٍ قَالَ: ” لَا تُشْرِكْ بِاللهِ شَيْئًا وَإِنْ قُتِلْتَ وَحُرِّقْتَ، وَلَا تَعُقَّنَّ وَالِدَيْكَ، وَإِنْ أَمَرَاكَ أَنْ تَخْرُجَ مِنْ أَهْلِكَ وَمَالِكَ،

হযরত মুয়াজ রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ আমাকে দশটি বিষয়ে ওসিয়ত করেছেন। তিনি বলেছেন, তুমি নিহত বা দগ্ধও হয়ে যাও তবু আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না। যদি তোমার পরিবার ও সম্পদও ছেড়ে দিতে আদেশ দেন পিতা-মাতা তবু তাদের অবাধ্য হয়ো না। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২০৭৫}

عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: كَانَتْ لِي امْرَأَةٌ كُنْتُ أُحِبُّهَا، وَكَانَ أَبِي يَكْرَهُهَا، فَقَالَ لِي: طَلِّقْهَا، فَأَبَيْتُ، فَأَتَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ، فَقَالَ: «طَلِّقْهَا» فَطَلَّقْتُهَا
হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার একজন স্ত্রী ছিল। যাকে আমি ভালবাসতাম। কিন্তু আমার পিতা [হযরত উমর বিন খাত্তাব রাঃ] তাকে পছন্দ করতো না। তিনি আমাকে বললেন, তাকে তালাক দিতে।কিন্তু আমি তালাক প্রদান করতে অস্বিকৃতি জানালাম। তখন আমার পিতা রাসূল সাঃ এর কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করলে রাসূল সাঃ বললেন, তাকে তালাক দিয়ে দিতে। ফলে আমি আমার স্ত্রীকে তালাক প্রদান করি। {মুসনাদে আবু দাউদ তায়ালিসী, হাদীস নং-১৯৩১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৪৭১২, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৫১৩৮}

আরো জানুনঃ- 

(০৪)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এ কথা যুক্তিসঙ্গত। 
তবে তারা তার আসল বাবা মার পর্যায়ে কোনোভাবেই পড়বেনা।

(০৫)
এরুপ কাজ শরীয়তের দৃষ্টিকোণ হতে গ্রহণযোগ্য নয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...