আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+3 votes
1,363 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
  1. বেশীরভাগ ক্ষেত্রে অপরিচিত মানুষরা সালামের জবাব দেন না৷ ফলে তারা গুনাহগার হন৷ তাই এখন সালামের চর্চা করা ঠিক হবে কি?
  2. নির্দিষ্ট কারও ব্যপারে যদি জানা থাকে যে উনি সাধারণত সালামের জবাব দেন না, তাহলে তাকে সালাম দেয়া কি ঠিক হবে?
  3. সালামের জবাব না দিয়ে থাকলে শুধু তওবা করলে হবে?

1 Answer

+2 votes
by (589,260 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-
  • (১ ও ২)পরিচিত অপরিচিত সবাইকে সালাম দেওয়ার কথা হাদীসে এসেছে,
যেমন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবীজী সাঃ কে প্রশ্ন করল,ইসলামের মধ্যে কোন কাজ সর্বোত্তম?
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮﻭ ﺃﻥ ﺭﺟﻼ ﺳﺄﻝ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺃﻱ ﺍﻹﺳﻼﻡ ﺧﻴﺮ ﻗﺎﻝ ﺗﻄﻌﻢ ﺍﻟﻄﻌﺎﻡ ﻭﺗﻘﺮﺃ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻋﻠﻰ ﻣﻦ ﻋﺮﻓﺖ ﻭﻋﻠﻰ ﻣﻦ ﻟﻢ ﺗﻌﺮﻑ ((ﺍﻟﻜﺘﺐ » ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ » ﺍﻻﺳﺘﺌﺬﺍﻥ » ﺑﺎﺏ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻟﻠﻤﻌﺮﻓﺔ ﻭﻏﻴﺮ ﺍﻟﻤﻌﺮﻓﺔ
নবীজী সাঃ প্রতিউত্তরে বললেনঃপরিচিত অপরিচিত সবাইকে খাদ্য খাওয়ানো এবং (মুসলিম মনে হলে) সালাম প্রদান করা।(সহীহ বুখারী-৫৮৮২)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
সালাম প্রদানের জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।সালাম দেয়া সুন্নাত।তাই আমারা পরিচিত/অপরিচিত সবাইকে সালাম দিবো।জবাব কার উপর ওয়াজিব হচ্ছে সেটা আমার  দেখার বিষয় নয়।বরং সালাম দেয়াটা যে সুন্নাত সেটাই বিবেচ্য।উত্তর দেয়া ওয়াজিব সেটা শরীয়তের পক্ষ থেকে সালামপ্রাপ্ত ব্যক্তির উপর আপতিত হয়েছে।
এখানে আমার কোনো হস্তক্ষেপ নেই।সালাম দেয়ার কথা শরীয়ত আমাকে বলেছে,তাই আমি সালাম দিয়েছি। আমি সেই দায়িত্ব সুন্নাতকে পালন করেছি।জবাব দেয়ার কথা শরীয়ত তাকে বলেছে, সে তার  দায়িত্বকে অন্যান্য দায়িত্বরের মত পালন করবে।
যেমনঃমুওয়াজ্জিন আযান দিলে ফে'লী তথা মসজিদে যাতায়াতের মাধ্যমে জবাব প্রদান করা ওয়াজিব হয়ে থাকে।
এখানে এ কথা বলা যাবে না যে, মুওয়াজ্জিন কেন আযান দিয়েছে?যদি সে আযান না দিতো তাহলে আমার উপর নামায ফরয হতে না বা মসজিদে যাওয়া ওয়াজিব হতে না।মুওয়াজ্জিন সে তার দায়িত্ব পালন করেছে।মুসাল্লি সে তার দায়িত্ব পালন করবে।উভয়ের দায়িত্ব আলাদা আলাদা।

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ "আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় " রয়েছে,
إلقاء السلام على من يظن أنه لا يرد السلام: قال النووي: إذا مر على واحد أو أكثر وغلب على ظنه أنه إذا سلم لا يرد عليه، إما لتكبر الممرور عليه وإما لإهماله المار أو السلام، وإما لغير ذلك، فينبغي أن يسلم ولا يتركه لهذا الظن، فإن السلام مأمور به، والذي أمر به المار أن يسلم ولم يؤمر بأن يحصل الرد، مع أن الممرور عليه قد يخطئ الظن فيه ويرد.
ইমাম নববী রাহ বলেনঃযদি কেউ এমন কারো পাশ দিয়ে অতিক্রম করে,যার ব্যপারে ধারণা করা হয় যে, সে অহংকার বশত বা অতিক্রমকারীকে কিংবা সালামকে তুচ্ছ মনে করা সহ বিবিধ কারণে সালামের জবাব প্রদান করে না বা করবে না।এমতাবস্থায় অতিক্রমকারীদের উচিৎ উক্ত ধারণার প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে সালাম প্রদান করা।কেননা তাকে সালাম প্রদানের আদেশ করা হয়েছে।সালামের জবাব গ্রহণের আদেশ করা হয় হয়নি।অথচ এমন তো হতে পারে যে অতিক্রান্তব্যক্তি অতিক্রমকারী(সালাম প্রদানকারী)এর ধারণাকে পাল্টিয়ে দিয়ে সে এখন সালামের জবাব প্রদান করেছে।

অতঃপর আরো উল্লেখ করা হয়.... 
ثم قال النووي: ويستحب لمن سلم على إنسان وأسمعه سلامه وتوجه عليه الرد بشروطه فلم يرد، أن يحلله من ذلك فيقول: أبرأته من حقي في رد السلام، أو: جعلته في حل منه ونحو ذلك، ويلفظ بهذا، فإنه يسقط به حق هذا الآدمي.ويستحب لمن سلم على إنسان فلم يرد عليه أن يقول له بعبارة لطيفة: رد السلام واجب، فينبغي لك أن ترد علي ليسقط عنك فرض الرد
অতঃপর ইমাম নববী রাহ বলেনوমুস্তাহাব হল, যে ব্যক্তি সালাম প্রদান করবে সে উক্ত ব্যক্তিকে শুনিয়ে শুনিয়ে সালাম প্রদান করবে,এবং জবাব প্রদানের প্রতি  মনযোগী করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে,এর পরও যদি সে না দেয়, তাহলে উক্ত জবাবের মধ্যে সে নিজের হক্বকে পরিত্যাগ করবে।এভাবে যে সে বলবে, সালামের জবাবে আমার যে হক্ব ছিলো তা আমি মাফ করে দিলাম।অথবা আমি তার ব্যপারটা ছেড়ে দিলাম।এভাবে বললে উক্ত সালাম প্রদানকারীর হক্ব সাক্বিত হয়ে যাবে।
তবে মুস্তাহাব পদ্ধতি হলো,সালাম করার পর যে ব্যক্তি সালামের উত্তর প্রদান করেনি,তাকে সহানুভূতির সূরে বলা হবে,
(ভাই) ""সালামের জবাব প্রদান কার ওয়াজিব""সুতরাং ওয়াজিব আদায়ের নিমিত্তে আপনার জন্য সালামের জবাব প্রদান করা উচিৎ।(২৫/১৭২-১৭৩)


  • (৩)সালামের জবাব না দিয়ে থাকলে পরবর্তিতে জবাব দিলে হবে না বরং তাওবা করে গুনাহকে ক্ষমা করাতে  হবে।কেননা সালামের জবাব তৎক্ষণাৎ প্রদান করা ওয়াজিব। ইবনে আবেদীন শামী রাহ বলেনঃ
(قوله ورد السلام وتشميت العاطس على الفور) ظاهره أنه إذا أخره لغير عذر كره تحريما ولا يرتفع الإثم بالرد بل بالتوبة ط
সালামের জবাব প্রদান ও হাসির জবাব প্রদান তাৎক্ষণিকভাবে  ওয়াজিব হয়ে থাকে।কোনো কারণ ব্যতীত জবাব দিতে দেড়ী করা মাকরুহে তাহরীমি।পরবর্তিতে জবাব প্রদান গুনাহকে ক্ষমা করবে না।বরং তাওবাহ করে গুনাহকে ক্ষমা করাতে হবে।(রদ্দুল মুহতার-৬/৪১৪)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (18 points)
আসসালামু আলাইকুম। 
শায়েখ, শেষ প্যারাতে কি সালাম ও হাঁচির কথা বলা হয়েছে? নাকি হাসির কথা?       

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...