জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আকীদা ও বিশ্বাসের ক্ষেত্রে আম্বিয়ায়ে কিরাম (আ:) সকলেই মাসুম বা নিষ্পাপ। আকীদাগত বিষয়ে তাঁদের থেকে কোনরূপ বিচ্যুতি ও বিভ্রান্তির হয়নি।
আহকামের প্রচার ক্ষেত্রেও সমস্ত উম্মাতে মুহাম্মদী একমত যে, আল্লাহর আহ্কাম বান্দা পর্যন্ত পৌঁছানোর ব্যাপারে তাঁরা কোনো প্রকার মিথ্যা,পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করার মতো অপরাধ হতে সম্পূর্ণভাবে পবিত্র ও মুক্ত। আর ইজতিহাদের ব্যাপারে আলিমদের অভিমত এই যে,কোনো ব্যাপারে ওহী অবতীর্ণ না হলে নবীগণ প্রথমে ওহীর জন্য অপেক্ষা করতেন,পরে ইজতিহাদ করে উক্ত বিষয়ের সমাধান দিতেন।
ইজতিহাদের ক্ষেত্রে আল্লাহর মর্জির খেলাফ কোনো সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে সাথে সাথে আল্লাহর পক্ষ থেকে তা শুধরে দেওয়া হতো।কাজেই দ্বিধাহীনভাবে বলা যায় যে,এ ক্ষেত্রেও তাঁরা মাসুম।
নবী-রাসূলগণের কাজকর্ম ও স্বভাব-চরিত্র ইত্যাদির ব্যাপারে আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের অভিমত হলো,এ ক্ষেত্রেও মহান আল্লাহ্ নিজ কুদরত দ্বারা তাঁদেরকে নফস ও শয়তানের প্রভাব থেকে হিফাজত করেছেন।তবে কখনো কখনো অনিচ্ছা বা ভুলবশত তাঁদের থেকে এমন কাজও সংঘটিত হয়েছে যা বাহ্যত তাঁদের শানের পরিপন্থী মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে তা পাপ ছিলনা।
বরং এক বিশেষ উদ্দেশ্যেই আল্লাহ্ তাঁদের থেকে এরূপ কিছু সংঘঠিত করিয়েছেন।যেমন,নামাজে চার রাকাআতের স্থলে দুই রাকাআত আদায় করে সালাম ফিরিয়ে দেওয়া।এতে নামাজের প্রতি অমনোযোগী মনে হলেও প্রকৃত বিষয় তা নয়।বরং উম্মাতকে সাহু সিজদার বিধান শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই আল্লাহ্ তাআলা তাঁর দ্বারা এমনটি করিয়েছেন।এমনটি না হলে উম্মাত ‘সাহু সিজদার’ নিধান সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারত না।
পবিত্র কুরআন পাকেও আল্লাহ পাক শয়তানকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন,
اِنَّ عِبَادِىْ لَيْسَ لَكَ عَلَيْهِمْ سُلْطَانٌ
“হে ইবলিস! আমার বিশিষ্ট বান্দাদের উপর তোমার কর্তৃত্ব নেই।”
[সূরা আল হিজর,আয়াত নং ৪১ ]
আর শয়তানও স্বয়ং স্বীকার করেছিল,
وَلَأُغِوَ ينهُمْ أَجْمعيْنَ – اِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُم الْمُخْلِصِيْنَ
“হে আল্লাহ! তোমার বিশিষ্ট বান্দাগণ ব্যতীত বাকী সবাইকে বিপথগামী করবো।”
[সূরা আল হিজর,আয়াত নং ৪১]
নবী-রাসূলগণের অন্তর গুনাহের উৎস-প্রবৃত্তি ও শয়তানের প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র।আল্লাহর বিশেষ হিফাজত এক মুহূর্তের জন্যও তাঁদের থেকে পৃথক হয় না। হজরত ইউসুফ (আ:) সম্পর্কে আল-কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,আঁমি তার থেকে মন্দকর্ম ও অশ্লীলতা সরিয়ে রাখার জন্যই এইভাবে নিদর্শন দেখিয়েছিলাম।
[সূরা ইউসুফ,আয়াত নং ২৪]
এই আয়াতে হজরত ইউসুফ (আ:) থেকে মন্দকর্মকে সরিয়ে রাখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ইউসুফকে (আ:) মন্দকর্ম থেকে সরিয়ে রাখার কথা বলা হয়নি।এতে এ কথা প্রতীয়মান হচ্ছে যে,নবী-রাসূলগণ সকলেই মাসুম।পবিত্র কুরআনে আরো বহু আয়াতে নবী-রাসূলগণের ইসমত ও নিষ্পাপতার কথা বিবৃত হয়েছে।
[মাআরিফুল কুরআন,মাওলান ইদরীস কান্ধলভী,১ম খণ্ড, পৃষ্ঠ-১০০-১১৩, উর্দূ]
★★সুতরাং রাসুল সাঃ এর শানের খেলাফ কোনো কথা বলা ঠিক হবেনা।
এটা ঈমানের জন্য ক্ষতিকর।
★★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদিও তার ঈমানের ক্ষতি হয়নি,তবে এহেন বাক্য বলা থেকে হেফাজতে থাকা দরকার।