ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি
ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
কারোর কাছে যদি জিলহজ মাসের ১০,১১ ও ১২ তারিখে নিজ ও নিজ
পরিবারের প্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে ৫২ তোলা রুপা (যার বাজার মূল্য ৫৫/৬০ হাজার
টাকা মত হতে পারে) বা তার সমপরিমাণ সম্পদ থাকে তাহলে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব।
সুতরাং যদি কারোর এই
পরিমাণ সম্পত্তি উক্ত
দিনগুলোতে না থাকে তাহলে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব নয়। প্রয়োজনীয় জিনিস বলতে
বোঝায় এক বছরের খোরাকি, বসবাসের
জায়গা, প্রয়োজনীয়
পরনের কাপড় ও বাসার প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ইত্যাদি। পক্ষান্তরে প্রয়োজনের
অতিরিক্ত জিনিস বলতে বোঝায় সোনা রুপার অলংকার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজনে আসে না এমন জমি, সঞ্চিত টাকা, বসবাসের
অতিরিক্ত বাড়ির অপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ইত্যাদি। আর যদি শুধু স্বর্ণ থাকে তাহলে
কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার জন্য শর্ত হলো সাড়ে সাত ভরি বা তার থেকে বেশি স্বর্ণ থাকা।
★কুরবানির নেসাব পৃথক এবং যাকাতের নেসাব পৃথক। কুরবানি
ওয়াজিব হলেই যে যাকাত দিতে হবে, বিষয়টা মূলত
এমন নয়। বরং যাকাত ওয়াজিব হলেই কুরবানিও ওয়াজিব হবে। কেননা যাকাতের জন্য
ক্রমবর্ধমান মাল হওয়া শর্ত। কিন্তু কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য ক্রমবর্ধমান মাল
হওয়া শর্ত নয়।
বিস্তারিত
জানুনঃ https://www.ifatwa.info/1688
★ঋনগ্রস্ত ব্যক্তির যদি ঋনের টাকা ব্যতিত নেসাব পরিমান সম্পদ
না থাকে, তাহলে তার
উপরে কুরবানী আদায় করা ওয়াজিব হবেনা।
,
তবে
ব্যবসায়ী ঋণ হলে কুরবানী ওয়াজিব হবে।
বিস্তারিত
জানুনঃ https://ifatwa.info/14383/
কুরবানী
ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " من
وجد سعة فليضح" .
হযরত
আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু
হতে বর্ণিত । তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন- যে ব্যক্তির সামর্থ্য রাখে সে যেন কুরবানী করে। ( আল মুহাল্লা, ৭/৩৫৭)
অন্য
এক হাদীসে এসেছে -
عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ "
مَنْ كَانَ لَهُ سَعَةٌ وَلَمْ يُضَحِّ فَلاَ يَقْرَبَنَّ مُصَلاَّنَا " .
আবূ
হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্তেও
কোরবানি করে না, সে যেন
আমাদের ঈদের মাঠের কাছেও না আসে। [সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩১২৩]
সুতরাং
যে ব্যক্তির উপর কুরবানী করা ওয়াজিব সে যদি ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা কোরবানি দিতে চাই তাহলে একা একা দিতে হবে।
দুইজন মিলে দিলে সহীহ হবে না। আর যদি গরু, মহিষ ও উট কোরবানি দিতে চাই তাহলে সর্বোচ্চ ৭ জন মিলে দিতে পারবে।
সাত শরীকের বেশি হলে কুরবানী সহীহ হবে না। -সহীহ মুসলিম ১৩১৮, মুয়াত্তা মালেক ১/৩১৯, কাযীখান ৩/৩৪৯, বাদায়েউস
সানায়ে ৪/২০৭-২০৮
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে দেখতে হবে যে, ঐ ৫০+ হাজার টাকা
কার মালিকানাতে। যদি শুধু স্ত্রীর মালিকানাতে হয় তাহলে ৫৫/৬০ হাজার টাকা মত সর্বমোট হলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব
হবে। আর যদি তাদের উভয় জনের মালিকানাতে হয় (যতটুকু বুঝা যাচ্ছে যে, তাদের
উভয় জনের মালিকানাতেই। কারণ তারা উভয় জন এতে শ্রম দেয়) তাহলে শুধু এই টাকার কারণে
তাদের কারোর উপরই কুরবানী ওয়াজিব হবে না।
২. তবে যদি স্ত্রীর বেশ
কিছু ব্যবসায়ী পণ্য থাকে বা সোনা-রূপার গহনা থাকে যা উক্ত টাকার সাথে যুক্ত করলে
স্ত্রীর নেসাব পরিমাণ সম্পদ হয়ে যায় তাহলে আবার স্ত্রীর উপর কুরবানী করা ওয়াজিব
হবে।