আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
248 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম
আমরা জানি যে হাশরের দিনে আল্লাহর আরশের ছায়া যারা পাবে তাদের মাঝে এক প্রকার ব্যক্তি থাকবে যারা একজন অপর জনকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসতো। আল্লাহর জন্য ভালোবাসা বলতে কী বোঝায়, কীভাবে তা অর্জন করতে হয় এবং আল্লাহর জন্য ভালোবাসার স্বরূপ জানালে ইন শা আল্লাহ উপকৃত হতাম।
জাযাকাল্লাহ খাইরান

1 Answer

0 votes
by (59,820 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

কাউকে ভালোবাসা এবং কারও সাথে শত্রুতা রাখার মানদণ্ড হলো একমাত্র আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি। যে ভালোবাসায় আল্লাহর সন্তুষ্টি নেই; সে ভালোবাসা ইসলাম অনুমোদন দেয় না। ব্যক্তি, পরিবার, আপনজন ও আত্মীয়স্বজন; সমাজ, দেশ, ধর্ম-বর্ণ সব ভালোবাসার দিকনির্দেশনা দেয় ইসলাম। আর এর কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ‘মহান আল্লাহর ভালোবাসা’ তিনিই এসবের মধ্যে ভালোবাসার অনুভূতি সৃষ্টি করেন।

 

তাই শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালোবাসতে হবে এবং শত্রুতাও যদি কারও সঙ্গে করার প্রয়োজন হয়; তা-ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করতে হবে। ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য কারও সাথে শত্রুতাও করা যাবে না। এটাই ইসলামের শ্রেষ্ঠতম কর্মপন্থা। হাদিসে পাকে এসেছে-

 

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভালোবাসার সুন্নাত আমলটি সম্পর্কে এভাবে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন-

إِنَّ أَحَبَّ الْأَعْمَالِ إِلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ الْحُبُّ فِي اللَّهِ وَالْبُغْضُ فِي اللَّهِ

নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ আমল হলো- ‘আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালোবাসা এবং শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কারও সঙ্গে শত্রুতা রাখা।’ (মুসনাদে আহমাদ)

 

কোনো ব্যক্তি ঈমানের পরিচয় দিতে গেলেও কাউকে ভালোবাসবার আগে আল্লাহর জন্য হৃদয়ের গভীরে সুদৃঢ় ভালোবাসা রাখতে হবে। যদিও কিছু মানুষ এর ব্যতিক্রম করে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَمِنْ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَندَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَشَدُّ حُبًّا لِلَّهِ

আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ ছাড়া অন্যকে আল্লাহর সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে এবং আল্লাহকে ভালোবাসার মত তাদেরকে ভালোবাসে; কিন্তু যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি তাদের ভালোবাসা সুদৃঢ়।’ (সুরা বাকারাহ : আয়াত ১৬৫)

 

আল্লাহকে ভালোবাসা ছাড়া কোনো ব্যক্তি ঈমানের স্বাদও পাবে না। তাই ভালোবাসতে হবে আল্লাহকে। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ প্রসঙ্গে বলেন-

ثَلَاثٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ وَجَدَ حَلَاوَةَ الْإِيمَانِ أَنْ يَكُونَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا وَأَنْ يُحِبَّ الْمَرْءَ لَا يُحِبُّهُ إِلَّا لِلَّهِ وَأَنْ يَكْرَهَ أَنْ يَعُودَ فِي الْكُفْرِ كَمَا يَكْرَهُ أَنْ يُقْذَفَ فِي النَّارِ

যার মধ্যে তিনটি গুণ থাকে; সে ঈমানের স্বাদ পায়। তাহলো-

১. আল্লাহ ও তাঁর রাসুল অন্য সব কিছু থেকে সবচেয়ে প্রিয় হওয়া।

২. শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালোবাসা।

৩. কুফুরিতে ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মত অপছন্দ করা।’ (বুখারি)

 

আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যারা পরস্পর ভালোবাসার সম্পর্ক স্থাপন করে, কেয়ামতের দিন তাদেরকে তিনি তাঁর রহমতের ছায়ায় জায়গা দেবেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-

إِنَّ اللَّهَ يَقُولُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَيْنَ الْمُتَحَابُّونَ بِجَلَالِي الْيَوْمَ أُظِلُّهُمْ فِي ظِلِّي يَوْمَ لَا ظِلَّ إِلَّا ظِلِّي

কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা আহ্বান করবেন, আমার মহত্ত্বের নিমিত্তে পরস্পর ভালোবাসার সম্পর্ক স্থাপনকারীরা কোথায়? আজ আমি তাদেরকে আমার বিশেষ ছায়ায় স্থান দান করবো। আজ এমন দিন, যে দিন আমার (আরশের) ছায়া ছাড়া অন্য কোনো ছায়া নেই।’ (মুসলিম)

 

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী ইসলামের মানদণ্ড বজায় রেখে পরস্পরকে ভালোবাসার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর সন্তুষ্টিই হোক ভালোবাসার চূড়ান্ত মানদণ্ড। আমিন। (কপি)

 

আরো জানুন- https://ifatwa.info/23162/

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

আল্লাহর জন্য ভালোবাসা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো কাউকে ভালোবাসতে ও মুহাব্বত করতে হলে তা আল্লাহর জন্যই করতে হবে যেমন আমি কোনো হক্কানী আলেমকে মুহাব্বত করি ও ভালোবাসি কারণ, তিনি হক্কানী আলেম তার কথা-বার্তা, চাল চলন আমার খুব ভালো লাগে তিনি কুরআন-হাদীসের সঠিক ব্যাখ্যা করেন ইত্যাদি

তেমনী ভাবে আমি কোনো নাস্তিকের সাথে বিদ্বেষ পোষণ করি কারণ, সে আল্লাহকে মানে না পাশা পাশি সে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলকে গালি গালাজ করে ইত্যাদি

উল্লেখ্য যে, বর্তমানে যেই ভালোবাসা প্রচলিত আছে অর্থাৎ পর পুরুষ ও মহিলাদের যেই ভালোবাসা, বয় ফ্রেন্ড ও গার্ল ফ্রেন্ডদের মধ্যে যেই ভালোবাসা তা একেবারে নাজায়েজ ও হারাম। এখানে আল্লাহর জন্য ভালোবাসার কোনো প্রশ্নই আসে না। কারণ, এই ভালোবাসা শরীয়ত সম্মত নয়। এটা হারাম। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...