গীবত সম্পর্কে মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ ۖ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ
মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। (সূরা হুজুরাত-১২)
সমস্ত ফুকাহায়ে কেরামের ঐক্যমতে গিবত করা হারাম।ইমাম কুরতুবী রাহ বলেন,গিবত কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত, এতে কারো দ্বিমত নেই।
তবে ৬ টি কারণে গিবত করা বৈধ হয়।
তার মধ্যে অন্যতম কারন হলোঃ-
أمور تباح فيها الغيبة: الأصل في الغيبة التحريم للأدلة الثابتة في ذلك، ومع هذا فقد ذكر النووي وغيره من العلماء أمورا ستة تباح فيها الغيبة لما فيها من المصلحة؛ ولأن المجوز في ذلك غرض شرعي لا يمكن الوصول إليه إلا بها وتلك الأمور هي:
কুরআন-হাদীসের অসংখ্য দলীল প্রমাণ থাকায় গীবত মূলত হারাম।তবে ইমাম নববী রাহ সহ অনেক উলামায়ে কেরাম ছয়টি বিষয়ে গীবতের অনুমোদন দিয়ে থাকেন।বিভিন্ন মুসলিহত ও হেকমত থাকর ধরুণই উলামায়ে কেরাম মূলত এ অনুমতি দিয়ে থাকেন।শরীয়য়ত অনুমোদিত কিছু উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই রুখসত প্রদান করা হচ্ছে, কেননা গীবত ব্যতীত এই উদ্দেশ্য হাসিল হওয়া প্রায়-ই অসম্ভব।
الرابع: تحذير المسلمين من الشر، وذلك من وجوه خمسة كما ذكر النووي. أولا: جرح المجروحين من الرواة والشهود، وذلك جائز بالإجماع، بل واجب صونا للشريعة. ثانيا. الإخبار بغيبة عند المشاورة في مصاهرة ونحوها. ثالثا: إذا رأيت من يشتري شيئا معيبا أو نحو ذلك، تذكر للمشتري إذا لم يعلمه نصيحة له، لا لقصد الإيذاء والإفساد. رابعا: إذا رأيت متفقها يتردد إلى فاسق أو مبتدع يأخذ عنه علما. وخفت عليه ضرره، فعليك نصيحته ببيان حاله قاصدا النصيحة. خامسا: أن يكون له ولاية لا يقوم لها على وجهها لعدم أهليته أو لفسقه، فيذكره لمن له عليه ولاية ليستبدل به غيره أو يعرف. فلا يغتر به ويلزمه الاستقامة.
(চার) মুসলমানকে কারো মন্দ থেকে বাঁচাতে গিবত করা। এটা পাঁচ ভাবে হতে পারে। যথাঃ- (১)হাদীসের রাবীদের দোষত্রুটি নিয়ে আলোচনা করা।এটা সর্বসম্মতিক্রমে জায়েয।এমনকি শরীয়তকে বাঁচানোর জন্য এটা ওয়াজিব পর্যায়ের। (২)বিয়ে-শাদীতে কোনো এক পক্ষের খোঁজ নিতে গিয়ে মাশওয়ারার সময় কারো সম্পর্কে সঠিক সংবাদ দেয়া। (৩)ক্রেতাকে অজ্ঞাতবশত কোনো দোষণীয় জিনিষ ক্রয় করতে দেখলে, তখন তাকে সে সম্পর্কে সতর্ক করে দেয়া। বিক্রেতাকে কষ্ট দেয়া বা ফাসাদ সৃষ্টি করার মনোভাব থাকলে তখন জায়েয হবে না। (৪)যদি কেউ দেখে যে একজন ফকিহ কোনো এক ফাসিক বা বিদাতি লোকের নিকট থেকে দ্বীন গ্রহণ করছে,তাহলে নসিহতের উদ্দেশ্যে ঐ ফকিহকে বাস্তব হাল সম্পর্কে জ্ঞাত করা উচিত। (৫) যদি কোনো ব্যক্তির উপর কারো অভিভাবকত্ব থাকে,কিন্তু সে কোনো কারণে ঐ ব্যক্তির উপর কর্তৃত্ব বাস্তবায়ন করে ওকে শাসন করতে পারে না,এমতাবস্থায় সে তার অভিভাবক (অর্থাৎ ঐ অভিভাবকের অভিভাবক)এর নিকট প্রকৃত অবস্থা বর্ণনা করতে পারবে।
الخامس: أن يكون مجاهرا بفسقه أو بدعته. فيجوز ذكره بما يجاهر به، ويحرم ذكره بغيره من العيوب،
(পাঁচ)প্রকাশ্যে গোনাহ কারী বা বিদআতে অংশগ্রহণ কারীর গীবত করা।সুতরাং সে যা প্রকাশ্যে করবে সেটার গীবত করা জায়েয।তবে এছাড়া তার অন্যান্য দোষ নিয়ে আলোচনা করা জায়েয হবে না।
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার সেই বন্ধু এবং কয়েকজন শিক্ষক যে মন্দ কাজ করবেন,এ সংক্রান্ত আপনারা সকলের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এই বিষয়ে আলোচনা করলে বা অন্যায়ের প্রতিরোধ করার চেষ্টা স্বরুপ এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করলে,বা তাদের এহেন গুনাহ প্রকাশ্য হয়ে থাকলে এমনটি বলা জায়েজ হবে।