আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
203 views
in পবিত্রতা (Purity) by (136 points)
edited by
আসসালামুআলাইকুম।

1.চিবুকের কাছাকাছি একটি ব্রণ উঠে, মুখ কুলি করার সময় পানি গড়িয়ে পড়ে , পরে চেক করে দেখি যে ব্রণ থেকে হালকা রক্ত/পুঁজ বেরিয়েছে গড়িয়ে পড়ার মতো না, এক্ষেত্রে মুখ বেয়ে গড়ানো পানি তো ব্রণ বেয়েই পড়েছে আমার প্রবল ধারণা , রক্ত/পুঁজ মুখ ধোয়ার আগে বের হয়েছে না পরে বলতে পারছিনা, এরপর মুখ ধোয়ার সময় ও পানি ছিটা পড়েছে। এক্ষেত্রে আমার শরীরে বেয়ে পড়া পানি এবং কাপড়ে পানির ছিটা সব কি নাপাক?
2.বেসিন এর সাইড এ যে পানি ছিটা লেগেছে ওইসব ও কি নাপাক? নাপাকীর চিহ্ন নেই।

3. হালকা ছিটেফোঁটা নাপাকী যুক্ত সামান্য ভেজা কাপড় চুলে বা শরীরে লাগলে নাপাকীর গন্ধ বা চিহ্ন না থাকলে শরীর কি নাপাক হবে?

4. নাপাক কাপড় বাথরুম এ কাপড় রাখার হেঙ্গার এ রাখি। এক্ষেত্রে নাপাক হালকা ভেজা কাপড়, নিংরালে কিছু বের হবে না এমন কাপড় এর ছোঁয়া দেওয়াল( টাইলস করা) এ লেগে গেলে দেওয়াল কি নাপাক হয়ে যাবে?

5. দুঃখিত এতগুলো প্রশ্নের জন্য,

ব্রণ থাকা অবস্থায় অযুর সময় সাবধানে হাতে পানি নিয়ে মুখ মুছে নেই ভালোভাবে ধুতে নিলে ব্রণ থেকে পুঁজ বের হতে পড়ে বলে। এরপর অযুর পর বা মাঝে টিস্যু দিয়ে চেক করে দেখি যে হালকা পুঁজ বের হয়েছে গড়িয়ে পড়ার মতো না। অযুর সময় বের হয়েছে কিনা নিশ্চিত না। হাতে কাপড়ে যে পানি লেগেছে টা কি নাপাক?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ الْعَلَاءِ ، ثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شَوْكَرِ بْنِ رَافِعٍ الطُّوسِيُّ ، نَا أَبُو إِسْحَاقَ الضَّرِيرُ إِبْرَاهِيمُ بْنُ زَكَرِيَّا ، نَا ثَابِتُ بْنُ حَمَّادٍ ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ ، عَنْ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ ، قَالَ : أَتَى عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - وَأَنَا عَلَى بِئْرٍ أَدْلُو مَاءً فِي رِكْوَةٍ لِي ، فَقَالَ : يَا عَمَّارُ ، مَا تَصْنَعُ ؟ قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، بِأَبِي وَأُمِّي ، أَغْسِلُ ثَوْبِي مِنْ نُخَامَةٍ أَصَابَتْهُ . فَقَالَ " يَا عَمَّارُ ، إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ : مِنَ الْغَائِطِ ، وَالْبَوْلِ ، وَالْقَيْءِ ، وَالدَّمِ ، وَالْمَنِيِّ ، يَا عَمَّارُ ، مَا نُخَامَتُكَ وَدُمُوعُ عَيْنَيْكَ وَالْمَاءُ الَّذِي فِي رِكْوَتِكَ إِلَّا سَوَاءٌ "

আহমাদ ইবনে আলী ইবনুল 'আলা (রহঃ) ... আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এলেন, তখন আমি একটি কূপ থেকে বালতি দিয়ে পানি তুলে আমার একটি পানির পাত্রে ভর্তি করছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আম্মার! তুমি কি করছো? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কোরবান হোক। আমি আমার পরিধেয় বস্ত্রে লেগে যাওয়া শ্লেষ্মা পরিষ্কার করছি। তিনি বলেনঃ হে আম্মার! পাঁচটি জিনিস থেকে কাপড় ধৌত করা প্রয়োজনঃ বিষ্ঠা, পেশাব, বমি, রক্ত ও বীর্য। হে আম্মার! তোমার নাকের শ্লেষ্মা, তোমার উভয় চোখের অশ্রু এবং তোমার এই পানির পাত্রের পানি একই সমান (পাক-নাপাকীর হুকুমের ক্ষেত্রে)।
(সুনানে দারা কুতনি ৪৫০)

https://ifatwa.info/38982/ ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে  যে,
و في حاشية ابن عابدين تحت قوله (ولم يخرج
وفي السراج عن الينابيع: الدم السائل على الجراحة إذا لم يتجاوز. قال بعضهم: هو طاهر حتى لو صلى رجل بجنبه وأصابه منه أكثر من قدر الدرهم جازت صلاته وبهذا أخذ الكرخي وهو الأظهر. وقال بعضهم: نجس، وهو قول محمد اهـ ومقتضاه أنه غير ناقض لأنه بقي طاهرا بعد الإصابة، وإن المعتبر خروجه إلى محل يلحقه حكم التطهير من بدن صاحبه فليتأمل

ইবনে আবেদীন রাহ, আরেকটু পরিস্কার করে লিখেন,যখমে প্রবাহিত রক্ত যখন সেটা তার স্বস্থানকে ত্যাগ করবে না,তখন অজু ভঙ্গ হবে না। কেউ কেউ এই রক্তকে পবিত্র রক্ত বলে থাকেন। এমনকি যদি এমন রক্ত যখমে থাকাবস্থায় উক্ত ব্যক্তির পাশে কেউ নামায পড়ে নেয়, এবং পাশের ব্যক্তির শরীর বা কাপড়ে এক দিরহাম থেকে বেশী উক্ত রক্ত লেগে যায়, তাহলেও উক্ত ব্যক্তির নামায হবে।এটাই ইমাম কারখী রাহ এর মত। এটাই বিশুদ্ধতম অভিমত। তবে কিছু সংখ্যক উলামায়ে কেরাম বলেন,এই রক্ত অপবিত্র।এটা ইমাম মুহাম্মদের মত।
উপরের আলোচনার সারমর্ম হল, উক্ত রক্ত বের হয়ে গড়িয়ে না পড়লে অজু ভঙ্গ হবে না এবং উক্ত রক্তকে নাপাকও বলা হবে না। তবে বের হওয়ার পর স্বস্থান ত্যাগ করে অন্যত্র গড়িয়ে গেলে অজু ভঙ্গ হবে এবং উক্ত রক্তকে নাপাকও বলা হবে। 

★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(০১)
ক্ষত স্থান বা ব্রণ থেকে এই পরিমাণ পানি বা রক্ত বের হলে যা গড়িয়ে পড়ার উপক্রম, এমন হলে অবশ্যই অজু নষ্ট হয়ে যাবে এবং উক্ত ঐ পানি বা রক্তও নাপাক বলে বিবেচিত হবে। তবে ঐ পরিমাণ বের হলে যা গড়িয়ে  পড়বে না বরং স্ব স্থানে বহাল থাকবে। এমন হলে অজুও ভঙ্গ হবে না, এবং সেই পানিকে নাপাকও বলা যাবে না।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
কিন্তু প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু উক্ত রক্ত/পুঁজ পানির সাথে মিশে গিয়েছে।
তাই এটিকে নাপাক বলা হবে।
উক্ত পুজ মিশ্রিত পানিও নাপাক হবে।

সেই হিসেবে আপনার শরীরে বেয়ে পড়া পানি এবং কাপড়ে পানির ছিটা সব নাপাক। 

(০২)
এগুলো কি সে রক্ত/পুঁজ ধোয়া পানির ছিটা,যদি তাই হয়,তাহলে সেটিও নাপাক।
এই জায়গা ধুয়ে ফেলতে হবে।

আর যদি সেগুলো অন্য পানির ছিটা হয়,বা কোন পানির ছিটা,সে সম্পর্কে  আপনি নিশ্চিত না হোন,তাহলে সমস্যা নেই।

(০৩)
এতে উক্ত চুল বা শরীর ভিজে গেলে তাহা নাপাক বলে বিবেচিত হবে।

(০৪)
নাপাকির চিন্হ,ভেজা সেই দেওয়ালে দেখা গেলে তাহা নাপাক হবে।
নতুবা নয়।

(০৫)
এই পানি তো পুজ থেকে বের হওয়া পানির সাথে মিশ্রিত হয়নি।
পুজ বের হওয়া নিয়েই তো আপনি সন্দিহান, তাই    হাতে,কাপড়ে যে পানি লেগেছে সেটা নাপাক নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...