জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লজ্জাকে ঈমানের শাখা আখ্যায়িত করেছেন।
শরিয়তের বিধান ও সামাজিক প্রথাগত লজ্জা হচ্ছে- নারী নিজেকে ঢেকে রাখবে, শালীনতা বজায় রেখে চলবে এবং এমন চরিত্র লালন করবে যা তাকে ফেতনা ও সন্দেহ-সংশয়ের উৎস থেকে দূরে রাখবে।
কুরআনের সুস্পষ্ট দলিল প্রমাণ করে- কোন নারী অপর নারীর সামনে তার দেহের ততটুকু অংশ খোলা রাখতে পারবে যতটুকু মোহরেমদের সামনে খোলা রাখা জায়েয। অর্থাৎ সাধারণতঃ বাড়িঘরে থাকাকালে ও গৃহস্থালির কাজ করতে গিয়ে যতটুকু উন্মুক্ত হয়ে পড়ে ততটুকু।
যেমনটি আল্লাহ তাআলা বলেছেন: “তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক, অধিকারভুক্ত বাঁদি, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ ও নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।”[সূরা নূর, আয়াত: ৩১]
মহিলার সামনে মহিলার পর্দা নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত। মহিলা কাফের হলে তার সামনে হাত ও চেহারা ছাড়া অন্যান্য অঙ্গ খোলা বৈধ নয়। যেমন, কোন নোংরা ব্যভিচারী মেয়ের সামনেও নিজের সৌন্দর্য প্রকাশ করা উচিৎ নয়। অনুরূপ এমন কোন মহিলার সামনেও দেহসৌষ্ঠব খোলা নিষিদ্ধ; যে তার কোন বন্ধু বা স্বামীর নিকট অন্য মহিলার রূপচর্চা করে বলে জানা যায় বা আশঙ্কা হয়। এমন মহিলার সাথে মুসলিম মহিলার সখীত্ব বা বন্ধুত্বও বৈধ নয়।
(ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীন ২/৮৪১)
অমুসলিম মেয়েদের সামনে মুসলিম নারীদের পর্দা করতে হবে কিনা,সেই ব্যপারে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ পাওয়া যায়।
কেহ কেহ বলেছেন যে যদিও তাদের সামনে মুসলিম নারীদের পর্দা করা ফরজ নয়,তবে কম আয কম মুসতাহাব অবশ্যই।
তাই তাদের সামনে পর্দা করাই উচিত।
কিতাবুন নাওয়াজেল ৬/৩৫
কেহ কেহ বলেছেন যে প্রত্যেক গাইরে মাহরাম পুরুষের প্রত্যেক গাইরে মাহরাম স্ত্রীলোকের সামনে যে পরিমাণ পর্দা করা ফরজ, কাফির-ফাসিক মেয়েলোক হতেও মুমিন মেয়েদের সে পরিমাণ পর্দা করা ওয়াজিব।
সুতরাং হিন্দু বা খৃষ্টান মেয়েলোক বা যেকোনো বেদ্বীন বা বেপর্দা মেয়ে হতেও পর্দানশীন নারীর পর্দা করা ওয়াজিব। তাদের সামনে কেবলমাত্র মুখমণ্ডল, হাতের পাতা ও পায়ের পাতা ব্যতীত শরীরের কোনো অংশ খোলা রাখা জায়েজ নয়।
لا یحل للمسلمۃ أن تنکشف بین یدي یہودیۃ أو نصرانیۃ أو مشرکۃ إلا أن تکون أمۃ لہا۔ (شامي ۹؍۵۳۴ زکریا)
কোনো মুসলিমা মহিলার জন্য অমুসলিম মহিলার সামনে বেপর্দা হওয়া জায়েয নেই।
وقال ابن حجرؒ: الأصح تحریم نظرہا إلی ما لا یبدو في المہنۃ من مسلمۃ غیر سیدتہا ومحرمہا ودخول الذمیات علی أمہات المؤمنین الوارد في الأحادیث الصحیحۃ دلیل لحل نظرہا منہا ما یبدو في المہنۃ، وقال الإمام الرازي: المذہب أنہا کالمسلمۃ والمراد بنسائہن جمیع النساء وقول السلف محمول علی الاستحباب وہٰذا القول أرفق بالناس الیوم فإنہ لا یکاد یمکن احتجاب المسلمات عن الذمیات۔ (روح المعاني ۱۸؍۲۱۱ أشرفیۃ، معارف القرآن ۶؍۴۰۴)
যথা সম্ভব এটাকে আমরা মুসতাহাব বলতে পারি।
তাই তাদের সামনে পর্দা করাই জরুরি।