আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
150 views
in পবিত্রতা (Purity) by (66 points)
আসসালামু আ'লাইকুম
ইস্তেহাজা চলাকালীন কি রোজা রাখা যাবে?  আমি জানতাম না যে ইস্তেহাজা চলাকালীন কাপড়ে এক দিরহামের বেশি ব্লাড থাকলে তা পরিবর্তন করে সালাত আদায় করতে হয়, তাহলে কি ইস্তেহাজা শুরুর দিন থেকে যত নামাজ পড়েছি সেগুলা কাজা করতে হবে? আমার পিরিয়ড এইমাসেই ১ম ১০ দিনের বেশি দিন ধরে হচ্ছে, আগে ৮ দিন পর্যন্ত হতো। আমি ১০ দিন পার হওয়ার পর নামাজ শুরু করেছি।

1 Answer

0 votes
by (57,210 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

হায়েজ ও নেফাসের নির্ধারিত দিনগুলির অতিরিক্ত দিন কোনো নারীর যৌনাঙ্গ থেকে রক্ত বের হলে সে রক্তকে ইস্তেহাযা বলে। এ অবস্থায় তাকে প্রতি ওয়াক্ত নামাজ অজু করে পড়তে হবে এবং রোজার দিনে রোজা রাখতে হবে। হাদীস শরীফে এসেছেঃ

أَنْبَأَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَنْ نَافِعٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ سَأَلَتِ امْرَأَةٌ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ إِنِّي أُسْتَحَاضُ فَلاَ أَطْهُرُ أَفَأَدَعُ الصَّلاَةَ قَالَ " لاَ وَلَكِنْ دَعِي قَدْرَ تِلْكَ الأَيَّامِ وَاللَّيَالِي الَّتِي كُنْتِ تَحِيضِينَ فِيهَا ثُمَّ اغْتَسِلِي وَاسْتَثْفِرِي وَصَلِّي " .

 মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু মুবারক (রহঃ) ... উম্মে সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করলঃ আমার ইস্তিহাযা হয় আর আমি পাক হইনা। আমি কি সালাত ছেড়ে দেব? তিনি বললেনঃ না বরং যে কয়টি দিবারাত্র তোমার হায়য থাকত, ততদিন তুমি সালাত ছাড়বে। তারপর তুমি গোসল করবে এবং পট্টি বাধবে, পরে সালাত আদায় করবে। (সহিহ,নাসায়ী ৩৫৪ ইবনু মাজাহ হাঃ ৬২৩)

আবু দাউদ শরীফের ১৮০ নং হাদীসে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مَخْلَدٍ الطَّالْقَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، - يَعْنِي ابْنَ مَغْرَاءَ - حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، أَخْبَرَنَا أَصْحَابٌ، لَنَا عَنْ عُرْوَةَ الْمُزَنِيِّ، عَنْ عَائِشَةَ، بِهَذَا الْحَدِيثِ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ لِرَجُلٍ احْكِ عَنِّي أَنَّ هَذَيْنِ - يَعْنِي حَدِيثَ الأَعْمَشِ هَذَا عَنْ حَبِيبٍ وَحَدِيثَهُ بِهَذَا الإِسْنَادِ فِي الْمُسْتَحَاضَةِ أَنَّهَا تَتَوَضَّأُ لِكُلِّ صَلَاةٍ

উরওয়াহ আল-মুযানী ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে উপরোক্ত হাদীস বর্ণনা করেন। ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, ইয়াহ্ইয়াহ্ ইবনু সাঈদ আল-কাত্তান এক ব্যক্তিকে এ মর্মে আদেশ দেন, আমার সূত্রে ঐ হাদীস দু’টি বর্ণনা কর। অর্থাৎ আ‘মাশের হাদীস এবং একই সানাদে ইস্তিহাযা রোগিনী’’ সম্পর্কে বর্ণিত তার ঐ হাদীস যাতে রয়েছে, ‘ইস্তিহাযা রোগিনী প্রত্যেক সলাতের জন্যই অযু করবে।’

لقولہ صلی اللہ علیہ وسلم: ”المستحاضة تتوضَّأ لوقت کل صلاة․․․ ویصلون بہ أي بوضوئہم في الوقت ماشاوٴوا من الفرائض الخ (حاشیة الطحطاوی علی المراقی: ۱۴۹، باب الحیض، ط اشرفی)

রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,ইস্তেহাযা ওয়ালা মহিলা নামাজের প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য অযু করবে। আর ঐ অযু দিয়ে ঐ ওয়াক্তে যত ইচ্ছা ফরজ, নফল নামাজ আদায় করতে পারবে।

জরত হান্নাদ [রহ] আম্মাজান আয়েশা [রা]-এর হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, ফাতিমা বিনতে হুবাইশ নামক এক নারী একবার রাসুল [সা]-এর সমীপে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল, আমি একজন ইস্তেহাযাগ্রস্ত মেয়ে। আমি তো পাক হই না। তাই আমি কি নামাজ পড়া ছেড়ে দেবো? রাসুল [সা] বললেন, না, কারণ এ রক্ত হায়েযের নয়; বরং এ হলো শিরা থেকে বেরিয়ে আসা রক্ত। সুতরাং যখন তোমার হায়েযের নির্ধারিত দিনগুলি আসে তখন সে দিনগুলি নামাজ ছেড়ে দেবে। আর হায়েযের দিন চলে গেলে তোমার রক্ত ধুয়ে নেবে এবং নামাজ আদায় করবে। [তিরমিজি, হাদিস-১২৫]

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

পূর্ব থেকে হায়েজের সময়সীমা নির্ধারিত থাকে, তাহলে উক্ত সময়টা হায়েজ ধরা হবে। বাকি দিনগুলো ইস্তিহাজার হুকুমে হবে। আর যদি সময় নির্দিষ্ট না থাকে, তাহলে দশদিন পর্যন্ত হায়েজ ধরা হবে। এর পর থেকে ইস্তিহাজার হুকুম হবে। হায়েজ অবস্থায় নামায পড়া যায় না। রোযাও রাখা যাবে না। তবে পরবর্তীতে রোযার কাযা করতে হবে। কিন্তু নামাযের কাযা করতে হবে না আর ইস্তিহাজার সময়টিতে নামায ও রোযা সবই করতে হবে। সুতরাং দশ দিন অতিক্রম করার পরের রোযা ও নামায বিশুদ্ধ হয়েছে। তবে যদি পূর্বের কোন নামাজ কাপড়ে নাপাকি লেগে থাকা অবস্থায় আদায় করে থাকেন, তাহলে তা পুনরায় কাযা করতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...