আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
104 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (8 points)
আসসালামু আলাইকুম।

আমি একটি কোম্পানির সেলস রিপ্রেজেনটেটিভ।আমাদের ফিল্ড জব থাকায় বাইরে দোকানে গিয়ে গিয়ে কাজ করতে হয়।

চাকরির নিয়ম হলো কোম্পানি একটি নির্দিষ্ট সময় দিয়ে দিবে ৮,৯ ঘন্টার।এই সময়ের ভেতরে একটি এরিয়ার দোকান গুলোতে অর্ডার কাটা।কিন্তু এই চাকরিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় কোম্পানি যে ৮ ঘন্টা সময় দেয় সেই সময়ের অনেক আগেই কাজ শেষ হয়ে যায়।ফিল্ড জব থাকায় আমরা কোথাও বাকি সময় বসতে পারি না।তাই টাইমের আগেই চলে আসি।যদিওবা আমার সেদিনের দোকানগুলো ভিজিট দেয়া শেষ হয়ে গেছে।

কিন্তু সমস্যা হলো সময়ের আগে ডিউটি শেষ হলে সে ব্যাপারে কোম্পানিকে বলা যায় না।কেন না তখন কোম্পানি মনে করবে আমরা কাজ ফাঁকি দিয়েছি।এই পেশায় থাকা প্রায় সকলেই এই সমস্যায় পরে।তাই আমাদেরকে মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয়।

কোম্পানি থেকে যদি টিএসএমা ফোন দেয় তাহলে তখন রোডে না থাকলেও অনেকে মিথ্যা বলে যে আমি রোডে আছি।আবার অনেক সময় টিএসএম রা নিজেও জানে যে রোড আগে শেষ হবে তাই তারা মাঝে মাঝে কিছুটা ছাড় দেয়।আবার অনেক সময় টিএসএম দেরও একই কাজ করতে দেখা যায়।সময়ের আগে অর্ডার কাটা শেষ হয়ে গেলে যদি কোম্পানি তাদের ফোন দেয় তখন তারাও একই কথা বলে যে তারা ডিউটিতে আছে।বর্তমানে এই পেশার এইরকম একটা অবস্থা হয়ে গিয়েছে।
আমার প্রশ্ন আমার জন্য কি এই চাকরিটা করা ঠিক হবে?কেননা এই পেশায় থাকলে আমায় মিথ্যে বলতে হবে।যদিওবা আমি কোম্পানির টার্গেটের সবকটি দোকানেই যাই এবং টার্গেট ফিলআপ করি।এই পেশা কি আমার জন্য হালাল হবে?আমি কি এই পেশা ছেড়ে দিব?মার্কেটিং এ দীর্ঘদিন থাকায় অন্য কোনো জবে ঢুকাও আমার জন্য কষ্টসাধ্য।

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জাবাব,

মিথ্যা কথা বলা শরীয়ত অনুমোদিত নয়। নিঃসন্দেহে মিথ্যা বলা হারাম। শরিয়তে সত্যকে সর্বত্রই উৎসাহিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সত্য মুক্তি দেয়, মিথ্যা ধ্বংস আনে। যদিও শরয়ী কিছু ওযরের কারনে বিশেষ শর্তসাপেক্ষে তা বৈধ। তবে যে কোনো পরিস্থিতিতে সত্য বলাই শরিয়তের মৌল দর্শনের দাবি।

পবিত্র কুরআন শরিফে এসেছে  

لَّعْنَتَ اللَّهِ عَلَى الْكَاذِبِينَ [٣:٦١

তাদের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত করি যারা মিথ্যাবাদী। {সূর আলেইমরান-৬১}

হাদিস শরিফে এসেছে, সাফওয়ান ইবন সুলাইম বলেন,

قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ ﷺ : أَيَكُونُ الْمُؤْمِنُ جَبَانًا ؟ فَقَالَ: ( نَعَمْ ) ، فَقِيلَ لَهُ: أَيَكُونُ الْمُؤْمِنُ بَخِيلًا؟ فَقَالَ: ( نَعَمْ ) ، فَقِيلَ لَهُ: أَيَكُونُ الْمُؤْمِنُ كَذَّابًا ؟ فَقَالَ: ( لَا )

রসুলুল্লাহ -কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, মুমিন কি কাপুরুষ হতে পারে? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। জিজ্ঞেস করা হয়েছে, মুমিন কি কৃপণ হতে পারে। তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। জিজ্ঞেস করা হয়েছে, মুমিন কি মিথ্যাবাদী হতে পারে? তিনি উত্তর দিলেন, না। (মুয়াত্তা মালিক ২/৯৯০) অর্থাৎ মুমিনের বিভিন্ন চারিত্রিক ত্রুটি থাকতে পারে, তবু সে মিথ্যা বলতে পারে না।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

আরো জানুনঃ  https://ifatwa.info/4573/

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন/বোন!

উপরোক্ত আলোচনা- হাদীসও উলামায়ে কেরামদের সুচিন্তিত মতামতের মাধ্যমে আমরা নিম্নোক্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারব। সত্য বলে নিজ মাকসাদকে অর্জন করা ও ক্ষতি থেকে বাচা যতক্ষণ পর্যন্ত সম্ভব হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত  মিথ্যা বলার কোনো অবকাশ শরীয়তে নেই বরং মিথ্যা বলা হারাম ও জগন্যতম গর্হিত কাজ। কিন্তু চুরান্ত পর্যায়ের অপারগ হয়ে গেলে মিথ্যা বলা জায়েয। এমনকি সময়বেধে ওয়াজিবও হয়ে যায়।

তবে প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে আপনার জন্য যদিও উক্ত জব হালাল, কিন্তু মিথ্যা বলা আপনার জন্য জায়েয নেই এবং ইহা একটি কবীরা গুনাহ। যেই গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেকের জন্য আবশ্যক। যদি আপনার পক্ষে মিথ্যা পরিহার করা সম্ভব না হয় তাহলে আপনি ভিন্ন কোন হালাল কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করত: উক্ত চাকুরী ছেড়ে দিন। আল্লাহ তায়ালা আপনার রিজিকে বারাকাহ দান করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...