ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
হজ্জ্বে জামারায় পাথর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর নির্দেশনা পালন করতে এলে জামরা আকবার কাছে শয়তান তাঁর মুখোমুখী হন। ইবরাহিম (আ.) সাতটি পাথর নিক্ষেপ করেন। সে জমিনে মিশে যায়। অতঃপর দ্বিতীয় জামরায় এলে তাঁকে সাতটি পাথর নিক্ষেপ করেন। সে জমিনে মিশে যায়। অতঃপর তৃতীয় জামরায় এলে তাঁকে ফের সাতটি পাথর নিক্ষেপ করেন। সে জমিনে মিশে যায়। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘তোমরা শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করো। তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষ ইবরাহিম (আ.)-এর রীতিকে অনুসরণ করছ।’ (সহিহ আত তারগিব, হাদিস : ১১৫৬)
জাবের (রা.) বলেন, ‘কোরবানির দিবসের প্রথম ভাগে (সূর্য উঠার কিছু পর) রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর উটের পিঠে আরোহণ অবস্থায় জামারায় কঙ্কর নিক্ষেপ করেছেন।’ (আবু দাউদ : ২/১৪৭)
ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আর তোমার কঙ্কর নিক্ষেপ, তা তো তোমার জন্য সঞ্চিত করে রাখা হয়।’ (মুজাম কাবির : ১৩৩৯০)
অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আর জামারায় পাথর নিক্ষেপ, এ ক্ষেত্রে মহান আল্লাহর নিচের বাণীটি প্রযোজ্য, ‘অতঃপর কোনো ব্যক্তি জানে না তাদের জন্য চোখ-জুড়ানো কী জিনিস লুকিয়ে রাখা হয়েছে, তারা যা করত, তার বিনিময়স্বরূপ।’ (সুরা : সাজদাহ, আয়াত : ১৭) (সহিহ আত তারগিব ওয়াত তারহিব : ১১১৩)
আরো ইরশাদ হয়েছে, ‘আর জামারায় তোমার কঙ্কর নিক্ষেপ, এতে তোমার নিক্ষিপ্ত প্রতিটি কঙ্করের বিনিময়ে একেকটি কবিরা গুনাহ মোচন করা হবে।’ (সহিহুত তারগিব ওয়াত তারহিব : ১১১২)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরো বলেন, ‘তুমি যদি কঙ্কর নিক্ষেপ করো, তোমার জন্য তা কিয়ামতের দিন নূর হবে।’ (সহিহুত তারগিব ওয়াত তারহিব, হাদিস : ১৫৫৭)
হজযাত্রীদের ৯ জিলহজ হজের মূল বিধান আরাফাতের ময়দানে সারা দিন অবস্থান করে মুজদালিফায় যেতে হয়। রাতটা মুজদালিফার খোলা আকাশের নিচে ইবাদত ও জিকির করে কাটিয়ে ফজরের পর শয়তানকে মারার জন্য প্রত্যেক হাজিকে ছোট আকারের ২১টি পাথর সংগ্রহ করে মিনায় যেতে হয়। মিনায় গিয়ে তিনটি স্থানে কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হয়
১. জামারাতুল আকাবা (শেষ জামারা)
২. জামারাতুল উস্তা (মধ্যম জামারা)
এবং ৩. জামারাতুল উলা (প্রথম জামারা)
,
জামারাতুল আকাবা মক্কার দিকে মসজিদুল খাইফের সর্ব নিকটবর্তী স্থানে অবস্থিত। একে জামারাতুল উখরা ও কুবরাও বলা হয়। ১০ জিলহজ এখানে তাকবির বলতে বলতে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করে তালবিয়া পাঠ বন্ধ করে দিতে হয়। কাবাঘর বাঁ দিকে ও মিনা ডান দিকে রেখে দাঁড়ানো সুন্নত। অন্য দুই জামারায় এদিন কঙ্কর নিক্ষেপ করতে নেই।
১১ তারিখে তিন জামারায় (প্রথমে ছোট, এরপর মধ্যম এবং সব শেষে বড় জামারায়) ৭–৩=২১টি পাথর মারতে হয়।
১২ তারিখেও অনুরূপ তিন শয়তানকে ২১টি পাথর মারতে হয়। তিন দিনে সর্বমোট ৭+২১+২১=৪৯টি কঙ্কর মারতে হয়।
কঙ্কর নিক্ষেপের সময় : সূর্যোদয়ের পর থেকে কঙ্কর নিক্ষেপের সময় শুরু হয়। তবে সুন্নত হলো সূর্য উঠার কিছু সময় পর দিনের আলোতে কঙ্কর নিক্ষেপ করা।
সূর্য হেলে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এর সময় থাকে। দুর্বল ও নারীদের জন্য ১০ তারিখের রাতে সূর্যোদয়ের আগে কঙ্কর নিক্ষেপের অবকাশ রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে যখন সহজে সুযোগ হয় তখনই কঙ্কর মারা যাবে।
★জামারাকে বড় শয়তান, ছোট শয়তান বলা যাবেনা।
★হজ্জ্ব সফরত অবস্থায় কাবা ঘর একাধিক বার কিংবা দিন তাওয়াফ করা যাবে।
(কিছু তথ্য সংগৃহীত।
(০২)
ولا يلزم الرجال لبس الأبيض في الإحرام، وإنما يستحب لهم ذلك إن تيسر،
সাদা পোশাক ইহরাম অবস্থায় আবশ্যকীয় নয়।
এটি সহজ হওয়ায় মুস্তাহাব।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عن ابن عباس -رضي الله عنه قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: البسوا من ثيابكم البياض، فإنها من خير ثيابكم، وكفنوا فيها موتاكم.
ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা সাদা কাপড় পরিধান করো এবং তা দিয়ে তোমাদের মৃতদের কাফন পরাও; কেননা তা তোমাদের উত্তম পোশাক।
(আবু দাউদ ৩৮৭৮)
وقال العلامة ابن جبرين ـ رحمه الله ـ في لباس المحرم: ويستحب أن يكون أبيض، ويجوز لباس غير الأبيض، يعني كالأسود عند الحاجة، أو الأزرق، وما أشبهه
সারমর্মঃ
ইহরাম অবস্থায় পোশাক সাদা হওয়া মুস্তাহাব।
সাদা ব্যাতিত অন্য কালারের পোশাকও প্রয়োজনে পরিধান করা যাবে।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
হজ্জ্বের জন্য ইহরামরত অবস্থায় কিছু খাওয়ার পর প্রত্যেক বার দাঁত খিলাল করা, কোমরে বেল্ট বাঁধা ও রঙিন, সিলিযুক্ত চাদর ব্যবহার করা যাবে।
দাঁত খিলাল করার সময় রক্ত বের হলে কোনো সমস্যা হবেনা।
(০৩)
এটিকে উলামায়ে কেরামগন বিদআত ও লোক দেখানোর অন্তর্ভুক্ত বলেছেন।
তাই তাহা পরিত্যাজ্য।
(০৪)
হ্যাঁ, হজ্জের ফরজ কাজ সমুহ জানাও ফরজ।
(০৫)
ইন্সুরেন্স করা ও ইন্সুরেন্স কোম্পানীতে চাকুরি করা জায়েজ নেই।
সবই সূদের অন্তর্ভুক্ত।
(০৬)
হ্যাঁ বেশি ছওয়াব পাওয়া যাবে।
(০৭)
না,এমনটি করতে হবেনা।
যখন বিসমিল্লাহ মনে এসেছে,তখনই বলবে।
নতুন করে অযু তায়াম্মুম শুরু করতে হবেনা।
(০৮)
হ্যাঁ সেই তায়াম্মুমে নামাজ হবে।
তায়াম্মুম করার সময় কথা বললে বা শব্দ করে হেসে দিলে সমস্যা হবেনা।
তায়াম্মুম হয়ে যাবে।
(০৯)
বিতর নামাজ ওয়াজিব।
বিতর নামাজ কোনো ছেড়ে দিলে গুনাহ হবে।
এটির কাজা আবশ্যক।
কিছু খাওয়ার পর মুখ পরিস্কার না করে নামাজ পড়া উচিত নয়।
কেননা এতে মুখে আটকিয়ে থাকা খাবার গলায় চলে যাওয়ার শংকা রয়েছে।
(১০)
প্রত্যেকটি সন্দেহই বিদআত হয়ে যাবেনা।