আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
524 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (34 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
১.ক্রিকেট খেলা নিয়ে- আমাদের ভার্সিটিতে টুর্নামেন্ট হবে।আমাদের ক্লাসের ছেলেরাও অংশগ্রহণ করবে।তো এজন্য তাদের জার্সি,ব্যাট আর কিছু জিনিসপত্র কেনা লাগবে।এজন্য আমাদের ক্লাসের ছেলেমেয়েদের থেকে টাকা উঠাচ্ছে। তারা বললো এখানে জুয়া বা বাজি  কিছু নাই।উল্লেখ্য যে,এখানে মেয়েরাও খেলা দেখতে যার অনেক সময়,গান বাজনা বা অন্য কোন হারাম সংঘটিত হয় কিনা জানি না।এখন এখানে কি টাকা দেয়া ঠিক হবে??
২. এক বোনের তালাক নিয়ে একটা বিষয় জানার ছিল উস্তায।বোন টা দ্বীন প্র্যাক্টিস করে।এখন  এই বিষয় টা নিয়ে খুব ঝামেলায় আছে।প্রশ্ন টা একটু দীর্ঘ হয়ে গেছে উস্তায।আফওয়ান।
বোনের ভাষ্যমতে -
আমার স্বামী যিনি ছিলেন, তিনি একজন আলেম। একদিন কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমাকে ১ তালাক,২তালাক বলে।পরে পরবর্তী হায়েজের পূর্বেই আমাদের সম্পর্ক  ঠিক হয়ে যায়। এর দীর্ঘ দিন পর আবার আমাদের মাঝে সমস্যা হয় এবং তা পরিবার পর্যন্ত পৌঁছে যায়। আমার পরিবার আমাকে আর তার কাছে দিতে রাজি হয় না।এমনকি আমিও আর যেতে চাচ্ছিলাম না।কিন্তু সে আমার বাবার বাড়ি এসে আমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোড়াজুড়ি করে।আমাকে আমার  ফ্যামিলির লোকেরা যেতে দেয় না।সে সেদিন চলে যায়।তখন আমাদের পক্ষ থেকে ওদের বাড়িতে লোক পাঠানো হয় ওকে ভয় দেখানোর জন্য যাতে আমাদের বাড়ি এসে ঝামেলা না করে।দুইজন লোক ওদের বাড়ি যার এবং আশেপাশের লোকদের ডেকে একত্র করে।তারা তাদেরকে প্রশাসনের লোক মনে করেছিল এবং সে এর জন্য আতঙ্কে ছিল।লোক দুজন তাকে বলে আমাকে তালাক দেয়ার জন্য  এবং সে তালাক দিতে অস্বীকার করে, এজন্য লোকগুলো তাকে হুমকি দেয় তালাক দেয়ার জন্য।সে তখন ঝামেলা থেকে বাঁচার জন্য(তার ভাষ্যমতে ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য) ফোনের মাধ্যমে  আমাকে বলে তোমাকে তালাক দিলাম।এই ঘটনার  প্রায় ২৫ দিন পর তার সাথে আমার কথা হয় এবং আমি তার কাছে যেতে চাই, সেও আমাকে নিতে চায়।কিন্তু আমার পরিবার আমাকে যেতে বাঁধা দেয়।এভাবে প্রায় দেড় বছর  চলে যায়।এর মাঝে সে আমাকে নেয়ার খুব চেষ্টা করে।সে বাসায় ফোন দেয়,আমাকে ফোন দেয়,আমার ভার্সিটিতে এসে দাঁড়িয়ে থাকে,কথা বলার চেষ্টা করে।কিন্তু আমি দু/একজনের কাছে শুনেছি আমার তালাক হয়ে গেছে।এই ভেবে আমি তার সাথে কথা বলি না।কিন্তু একপর্যায়ে এত ডিস্টার্ব শুরু হয় যে আমি কথা বলতে বাধ্য হই।আমি তাকে বললাম আমি তো তালাক হয়ে গেছি।কিন্তু সে বলে আমাকে জোর করে তালাক দিতে বাধ্য করা হয়েছে,আমি ফেতনা থেকে বাঁচতে তালাক বলেছি তাই তালাক হয়নি।তখন তাকে আগের ২ তালাকের কথা বললে সে বলে  আমি দেই নি আর দিয়ে থাকলেও  এ ব্যাপারে আমার কিছুই মনে নাই এবং এর উপর সে তিনবার আল্লাহর নামে কসম কাটে।আমি বললাম আমার তো মনে আছে। তখন সে বলে তালাকের জিম্মা ছেলেদের কাছে,আমি ভুলে গেছি তো,তোমার মনে থাকলে হবে না।যদি আমার স্মরণ  থাকার পরও মিথ্যা বলি তাহলে আমি গুনাহগার হব তুমি না এবং  আমাকে আল্লাহ তায়ালার কাছে জবাবদিহি করতে হবে। আমি তাকে মাসয়ালা নেওয়ার জন্য বলি কিন্তু সে বলে  তালাকই হই নি মাসয়ালা নিব কি? এমনকি আমি তাকে একথাও বলেছি  প্রয়োজনে যদি  মাসয়ালা প্রয়োগের মাধ্যমে তোমার কাছে যেতে হয়  তবু্ও আমি রাজি আছি  তুমি সত্য কথা বল। সে বলে তুমি তালাকই হয় নাই  এখনও  আমার স্ত্রী আছ। তালাক কি হয়েছে নাকি হয় নি? আমি এ বিষয় টা নিয়ে খুব  চিন্তিত।

উস্তায, তালাক হয়েছে কিনা যদি দয়া করে একদম ক্লিয়ারলি বলে দিতেন খুব উপকার হতো।উনি অনেক ঝামেলায় আছেন এটার জন্য।তালাক না হলে তো অন্য জায়গায় বিয়েও করতে পারবে না।কি করা উচিত, উস্তায?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
শরীয়তের বিধান হল,গুনাহের কাজ যেমন নিজে করা জায়েজ নেই,অন্যকে গুনাহের কাজে সহযোগিতা করাও জায়েজ নেই।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ  

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
এখানে অনেক গুলো বিষয় আছে।
এক,
আপনাদের ভার্সিটিতে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হবে।
যেকোনো টুর্নামেন্টে যেহেতু জয় পরাজয়ের বিষয় আছে,আর তাতে পুরুস্কারের বিষয়ও আছে।
সেই হিসবে যদি যারা খেলবে,তাদের থে পুরুস্কার এর টাকা না নিয়ে ৩য় কোনো পক্ষ থেকে পুরুস্কার দেয়া হয়,তাহলে বুঝা যাবে যে এতে জুয়া নেই।

সুতরাং এখানে চাঁদা দেয়ার আগে এই বিষয়টি পূর্ণভাবে জানতে হবে।
যে পুরস্কার কোন অর্থ থেকে দেয়া হবে। 

টুর্ণামেন্টে অংশগ্রহণ করার ফি থাকলে আপনাদের টাকা দেয়া জায়েজ হবেনা।
কেননা উক্ত ফি থেকেই মূলত তারা পুরুস্কার দিবে।
সাধারণত এমনই হয়।

দুই,
এখানে গান বাজনা হওয়া না হওয়া সম্পর্কে আপনি অনিশ্চিত হলেও এখানে মেয়েদের যাওয়াতে বেপর্দার পরিবেশ হবে,এটি নিশ্চিত।        

তাই সেই হিসবে এটি গুনাহের একটি পরিবেশ হবে।
তাই এ ধরনের গুনাহের পরিবেশ তৈরীর কাজে সহযোগিতা স্বরুপ  টাকা দেয়া জায়েজ হবেনা।

(০২)
শরীয়ত কর্তৃক গৃহীত জাবরদস্তির স্বামী যদি তালাক দেয়,তাহলে লিখিত তালাক হলে তাহা পতিত হবেনা।

তবে মৌখিক তালাক হলে তাহা পতিত হয়।

طلاق المکرہ واقع (ہدایہ: ۱/۳۵۸، کتاب الطلاق)
সারমর্মঃ
যার উপর জবরদস্তি করা হয়েছে,তার তালাক পতিত হয়।  
  
فتاوی شامی :
"وفي البحر: أن المراد الإكراه على التلفظ بالطلاق فلو أكره على أن يكتب طلاق امرأته فكتب لاتطلق لأن الكتابة أقيمت مقام العبارة باعتبار الحاجة ولا حاجة هنا، كذا في الخانية". (236/3ط: سعید)
সারমর্মঃ
জোড় মূলক তালাক পতিত হয়,এটা মৌখিকের ক্ষেত্রে।
যদি লিখিত ভাবে কাউকে তালাক দেয়ার উপর জোর করা হয়,সেক্ষেত্রে লিখিত তালাক দিলে তাহা পতিত হবেনা। 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,  
এখানে নিঃসন্দেহে তালাক হয়ে গিয়েছে।
আগে যেহেতু ২ তালাক দেয়া হয়েছিলো,তাই এখন সবমিলে ৩ তালাক হয়েছে।
,
শরয়ী হালালাহ ব্যাতিত সেই স্ত্রী ফিরিয়ে নেওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (34 points)
উস্তায, তাদের মাঝে আবার বিয়ে করিয়ে দিলে কি শুদ্ধ হবে নাকি তালাকে মুগাল্লাযা পতিত হয়েছে?

তালাকে মুগাল্লাযা পতিত হলে তো এই বোনকে আগে অন্যত্র বিয়ে দিতে হবে,তারপর এই  নতুন স্বামী যদি তালাক দেয় তাহলে আবার ১ম জনের কাছে যেতে পারবে অন্যথায় না।এরকম না?
আর উস্তায উনার স্বামী যে বলছে আগের ২তালাকের কথা  একেবারেই মনে নেই,সেক্ষেত্রে কি উত্তর দিবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...