আপনি বাংলাদেশের যে স্কলার এর কথা বলেছেন, তিনি মাশাআল্লাহ অনেক বিজ্ঞ আলেম, তার আলোচনা অত্যান্ত সুন্দর। তবে তিনি কোনো মাযহাবকে ফলো করেন কি না ? তা আমাদের জানা নেই। বরং আমাদের সাধারণ জানামতে তারা মুজতাহিদের ভুমিকায় আলোচনা করে থাকেন( আমাদের জানা ভুলও হতে পারে)। তর ইজতেহাদ তার জন্য দলীল বা গ্রহণযোগ্য কিন্তু কোনো এক মাযহাবের মূলনীতির অনুসরণ ব্যতীত জনগণের ব্যাপারে তাদের ফাতাওয়া ফিকহের মূলনীতি অনুসারে গ্রহণযোগ্য নয়।
তাই তার কাছ থেকে ফিকহ বা আকিদা গ্রহণ করা যাবে না। আমি আবার বলছি যে, চার মাযহাবের উপর উলামাদের ইজমা হয়েছে। সুতরাং চার মাযহাবের যে কোনো একটিকে মানতে হবে। কিন্তু যেহেতু তিনি কোনো মাযহাবকে ফলো করেন না, তাই তার কাছ থেকে কোনো মাসআলা নেয়া যাবে না।
https://www.ifatwa.info/1936 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
তাকলীদ(মুজতাহিদের অনুসরণ) করা ফরয।এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
فَاسْأَلُواْ أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ
জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে।(সূরা নাহল-৪৩)
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَأَطِيعُواْ الرَّسُولَ وَأُوْلِي الأَمْرِ مِنكُمْ
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। (সূরা নিসা-৫৯)
উক্ত আয়াতে اولي الامرউলূল আমর এর ব্যখ্যায় হযরত জাবের রাযি, হযরত ইবনে আব্বাস রাযি,আ'তা রাহ,মুজাহিদ রাহ,যাহহাক,আবুল আলিয়া রাহ,হাসান বসরি রাহ সহ অসংখ্য সাহাবা, তাবেঈন ও তাবে তাবেঈন উল্লেখ করেন যে,এখানে উলূল আমর দ্বারা খুলাফা,উলামা,ফুকাহা উদ্দেশ্য।স্বয়ং আহলে হাদীসদের ইমাম নাওয়াব সিদ্দিক হাসান খান রাহও এ ব্যখ্যাকে নিজ তাফসীরের কিতাবে উল্লেখ করেছেন।
তাছাড়া হাদীসে এসেছে,
انما شفاء العي السوال
বক্রতা বা অজ্ঞদের শে'ফা হল,তারা জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা করবে।
এখন প্রশ্ন হল জ্ঞানী কারা?সমাজে যাদেরকে আলেম বলা হয়,তারাই কি জ্ঞানী?না এর জন্য বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যর প্রয়োজন রয়েছে? বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন।https://www.ifatwa.info/1936
https://www.ifatwa.info/402 নং ফাতাওয়ায় ল্লেখ রয়েছে যে,
মুজতাহিদ নয় এমন সবার জন্য মাযহাব মানা ফরয।বিস্তারিত জানতে দেখুন!জাস্টিস আল্লামা তাক্বী উসমানী রচিত"মাযহাব কি ও কেন?"
মাযহাব অর্থ হল,কুরআন-হাদীসের ব্যাখা জানতে কারো সাহায্য গ্রহণ করা।অর্থাৎ যারা নিজে সরাসরি কুরআনের আয়াত বা হাদীসে রাসূল এর মর্মার্থ বুঝতে পারেন না, তারা অন্যর সাহায্য নিয়ে কুরআন-হাদীস এর মর্মার্থ বুঝবেন,এবং সে অনুযায়ী আ'মল করবেন।
সুতরাং কোনো এক আলেম বা মৌলিক মূলনীতি এক এমন একদল আলেমের কুরাআন-সুন্নাহ অনুসৃত মত ও পন্থাকে অনুসরণ করার নামই হল মাযহাব। এক্ষেত্রে সকল মাস'আলায় শুধুমাত্র একজনকেই অনুসরণ করতে হবে।নতুবা একেকজনকে একেক মাস'আলা অনুসরণ মূলত প্রবৃত্তির অনুসরণ হবে,।এজন্য এমন কোনো এক আলেম বা মূলনীতি এক এমন একদল আলেমকে অনুসরণ করতে হবে যাদের প্রায় সকল বিষয়ে ইজতেহাদ রয়েছে।এই হল মাযহাব এর তাৎপর্য।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে চার মাযহাব হতে নির্দিষ্ট কোনো এক মাযহাব ফলো করার পরামর্শ থাকবে।